Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার-৪,২ জনের তিনদিন করে রিমাণ্ড মঞ্জুর

ক্যাম্পে নিরাপত্তা জোরদার

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৫:৪৫ পিএম

শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইলিয়াস (৩৫) নামে আরও ১ জনকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। রবিবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্প-৫ থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মোঃ নাইমুল হক। তিনি জানান, আটক ইলিয়াসকে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১ অক্টোবর দিবাগত রাতে জিয়াউর রহমান ও আব্দুস সালাম নামের দুই রোহিঙ্গাকে আটক করে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
একই ঘটনায় আটক হয় মধুরছড়া ৩ নম্বর ক্যাম্পের ডি-১৫ ব্লকের শওকত উল্লাহ (২৫)। এর আগে দুপুর ১২ টার দিকে মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ ওরফে লম্বা সেলিমকে আটক করে এপিবিএন। এনিয়ে এই ঘটনায় মোট ৪ জনকে এপর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পে কড়াকড়িসহ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২ আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রবিবার (৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় উখিয়া আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ শুনানী শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ড আদেশ পাওয়া আসামীরা হলেন- কুতুপালং ক্যাম্পের সি-ব্লকের বাসিন্দা নুর বশরের ছেলে সেলিম উল্লাহ ওরফে লম্বা সেলিম (২৭) ও মধুরছড়া ৩ নম্বর ক্যাম্পের ডি-১৫ রহিম উল্লাহর ছেলে শওকত উল্লাহ (২৫)।
এর আগে গত শনিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাদেরকে আদালতে উপস্থাপন করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

কক্সবাজার আদালত পুলিশের পরিদর্শক চন্দন কুমার সরকার জানান, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শনিবার ভোররাতে এবং শুক্রবার সকাল ও দুপুরে উখিয়া থানা পুলিশ এবং ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান পুলিশ (এপিবিএন) যৌথ অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে। এদের সবাইকে জিজ্ঞাবাদ শেষে গ্রেফতার দেখিয়ে শওকত উল্লাহ ও লম্বা সেলিমকে শনিবার বিকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এসময় তাদের আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক শুনানীর জন্য রবিবার দিন ধার্য করেছিলেন। সেই মতে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শুনানি শেষে দুই জনের তিন দিন করে মিনান্ড মঞ্জুর করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে কুতুপালং ক্যাম্পের লম্বাশিয়ায় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জেলা পুলিশ ও এপিবিএনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) নাইমুল হক।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২৫ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলা নম্বর- ১২৬।

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস নামে একটি সলগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার, নিরাপদে দেশে প্রত্যাবাসন ও তাদের মানবাধিকার সোচ্চার ছিলেন। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম তাকে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর' হিসেবেও আখ্যায়িত করে।

এদিকে রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গভীর শোক প্রকাশ ও সমবেদনা জানিয়ে হত্যাকারীদের গ্রেফতার এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিচরণকারী প্রত্যাবাসন বিরোধী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আরকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন। রোহিঙ্গাদের ৬১টি সংগঠন নিয়ে এআরইউ (আরকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন) ওয়াইসির মাধ্যমে গঠিত একটি ছাতা সংগঠন। এআরইউ
মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং খাদ্য সহায়তা সহ সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।
পাশাপাশি মর্যাদা সহকারে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়েও বাংলাদেশ সরকার সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এআরইউ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ