প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল নগর বাউল-এর কর্ণধার ও ভোকালিস্ট মাহফুজ আনাম জেমস। এই রকস্টার ভক্তদের কাছে গুরু নামে পরিচিত। যখনই স্টেজে উঠেন হাজার হাজার শ্রোতা গুরু গুরু বলে চিৎকার শুরু করেন। তাদের মধ্যে বয়ে যায় উন্মাদনা। জেমসের হাতের গিটারে টুং শব্দের সাথে সাথে তাদের উন্মাদনা শুরু হয়। দেশের সীমা পেরিয়ে উপমহাদেশেও রয়েছে তার জনপ্রিয়তা। বম্বের সিনেমায়ও প্লেব্যাক করেছেন। তবে তার জীবনের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে অনেক সংগ্রাম ও শ্রম। সঙ্গীত জীবনের শুরুটা ছিল কঠিন। গানের জন্য তাকে বাড়ি পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছিল। ঠাঁই হয়েছিল ১২ বাই ১২ স্কয়ার ফিটের বোর্ডিংয়ে। জেমস ১৯৬৪ সালে নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। সেই সূত্রে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবারের সঙ্গে থাকতে হয়েছে তাকে। ছেলেবেলা থেকেই গানের প্রতি তার প্রবল আকর্ষণ। সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় হাতে তুলে নিয়েছিলেন গিটার। গানের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ থাকায় তার পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। তার এই গান করা নিয়ে আপত্তি ছিল তার বাবার। নবম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় বাবা যখন বুঝলেন ছেলের আর পড়াশোনা সম্ভব নয়, তখন তাকে ঘর থেকে বের করে দেন। জেমসের ঠাঁই হয়ে বোর্ডিংয়ে। তখন পরিবারের সঙ্গে চট্টগ্রামের থাকতেন জেমস। বাড়ি থেকে বেরিয়ে চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিংয়ে শুরু হয় তার নতুন জীবন। গানের জন্য ঘর ছাড়তে হলেও জেমস গান ছাড়েননি। শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবন। সে সময় বন্ধুদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ব্যান্ডদল ফিলিংস। দল নিয়ে গান তৈরিতে সারাদিন কাটতে থাকে তার। সন্ধ্যা হলেই চলে যেতেন নগরীর বিভিন্ন ক্লাবে গান গাইতে। একসময় চট্টগ্রামের মায়া ছেড়ে নিজেদের সৃজনশীল মৌলিক গান করার জন্য ঢাকা চলে আসেন। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় এসে প্রথম অ্যালবামের কাজ শুরু করেন জেমস। ১৯৮৭ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের সঙ্গে তার প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৮৮ সালে আসে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ১৯৯৩ সালে প্রকাশ করেন ‘জেল থেকে বলছি’ অ্যালবাম। এই অ্যালবামের টাইটেল গানটি দেশজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। তারপর একে একে প্রকাশিত হয় নগর বাউল (১৯৯৬), লেইস ফিতা লেইস (১৯৯৮), দুষ্টু ছেলের দল (২০০১), পালাবে কোথায় (১৯৯৫), দুঃখিনী দুঃখ করোনা (১৯৯৭), ঠিক আছে বন্ধু (১৯৯৯), আমি তোমাদেরই লোক (২০০৩), জনতা এক্সপ্রেস (২০০৫), তুফান (২০০৭) এবং কাল যমুনা (২০০৮) অ্যালবাম। ১৯৯৬ সালে ফিলিংস ব্যান্ড থেকে নগরবাউল প্রকাশের পর থেকে ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে রাখেন নগরবাউল। ফিলিংস থেকে নগরবাউল হয়ে নতুন যাত্রা শুরু হয়। এখনো পর্যন্ত নগরবাউল নামেই গান পরিবেশন করছেন জেমস ও তার দলের সদস্যরা। এই ব্যান্ড থেকে প্রকাশিত একমাত্র অ্যালবাম দুষ্টু ছেলের দল। অ্যালবাম প্রকাশের পাশাপাশি জেমস প্লেব্যাক করতে থাকেন। প্লেব্যাকেও তার গাওয়া গান অসম্ভব জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে রয়েছে, দশ মাস দশ দিন, আসবার কালে আসলাম একা, মীরাবাঈ, দেশা আসছে, তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম, পাগলা হাওয়ার তরে, এত কষ্ট কষ্ট লাগে কেন অন্তরে এবং বিধাতা। প্লেব্যাকে তিনি দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। শুধু দেশীয় প্লেব্যাকে নয়, বলিউডেও প্লেব্যাক করেছেন জেমস। সেখানে তার গাওয়া ভিগি ভিগি, চাল চালে, আলবিদা, রিশতে এবং বেবাসি গানগুলো এখনও শ্রোতাদের হৃদয়ে রয়েছে। জেমসের ক্যারিয়ারে মা ও বাবাকে নিয়ে গাওয়া গানগুলো শ্রোতাদের আপ্লুত করে তোলে। অন্তর সিক্ত করা এসব গান শুনে শ্রোতারা আকূল হয়ে উঠেন। দুঃখিনী দুঃখ করো না, বাবা কতদিন দেখি না তোমায় গানগুলো শ্রোতাদের মনে চিরস্থায়ী হয়ে রয়েছে। এছাড়া তারায় তারায়, লেইস ফিতা লেইস, সুলতানা বিবিয়ানা, সুস্মিতার সবুজ ওড়না, হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা, কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী, দুষ্টু ছেলের দল, দিদিমনি, গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া ইত্যাদি গানগুলো শ্রোতাদের মনে গেঁথে রয়েছে। তার সঙ্গীতের সঙ্গে দীর্ঘ পথ চলায় ভক্ত-শ্রোতাদের ভালোবাসা তার জীবনের অনেক বড় অনুপ্রেরণা বলে জেমস মনে করেন। গতকাল ২ অক্টোবর ছিল তার জন্মদিন। এদিন ৫৭ বছরে পা রাখেন তিনি। জন্মদিনে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, যতোদিন তোমরা আছো, ততোদিন আমি আছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।