Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে ক্যাম্পেইনে ব্যাপক সাড়া

করোনা ভ্যাকসিন

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে করোনা ভ্যাকসিন প্রদানে ক্যাম্পেইনের আদলে গণটিকা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও স্থানীয় প্রশাসনের জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। প্রায় ১ কোটি জনসংখ্যার দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় প্রায় ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত দুই ডোজ সম্পন্নকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। শুধু প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। আর গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন কার্যক্রমেই দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৬ লাখ ৩০ হাজার ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৫%। গতকালও ক্যাম্পেইন কার্যক্রমের আওতায় ভ্যাকসিন প্রদান অব্যাহত ছিল।

এর মধ্যে মহানগরীসহ বরিশাল জেলায়ই প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। তবে মহানগরীতে মাত্র ৩ হাজার ৫৩৪ জনকে ভ্যাকসিন প্রদান করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। এর আগে প্রথম গণটিকা কার্যক্রমের দিনেও দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় আড়াই লাখ ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছিল।
নদ-নদী নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামেগঞ্জের নারী-পুরুষের পক্ষে উপজেলা সদরে গিয়ে ভ্যাকসিন গ্রহণ অনেকটাই দূরহ ব্যাপার। বয়োবৃদ্ধ, শারীরিক প্রতিবন্দীসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের পক্ষেও দীর্র্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ভ্যাকসিন গ্রহণে আগ্রহ নেই। তারপরেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে গত মঙ্গলবার ক্যাম্পেইনে মোট জনসংখ্যার প্রায় সাড়ে ৬% মানুষের ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়টিকে আশাব্যঞ্জক বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতোপূর্বে দক্ষিণাঞ্চলে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর মধ্যে নারীর সংখ্যা ছিল ৩৫%-এরও কম। এখন তা প্রায় সমান পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক নারী আক্রান্ত হবার কারণেও ভ্যাকসিন গ্রহণে আগ্রহ বাড়ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু করোনা প্রতিরোধ ও ভ্যাকসিন প্রয়োগে স্থানীয় সরকার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে। এ জন্য তাদেরকে আরো বেশি সম্পৃক্ত করার গুরুত্বারোপ করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলরা।
মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ক্যাম্পেইনের দিনে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের অনেকে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের ৪০ জন কাউন্সিলর ২শ’ জন করে নারী-পুরুষকে টিকাদান কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারলেও ন্যূনতম ৮ হাজার মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণের কথা ছিল। মহানগরীতে এ পর্যন্ত মাত্র ১ লাখ ১০ হাজারের মত মানুষ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। প্রথম ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজারের কাছে। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের ৪০টি বুথে আগস্টের ১২ তারিখ থেকে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম চলছে। তবে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বুথেই ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর অপেক্ষায় সময় পার করছেন টিকাদানকারীরা।
সিটি করপোরেশনের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ফয়সাল জানান, যেসব মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাদের ৮০ ভাগেরও বেশি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। ক্যাম্পেইনের দিনে শুধুমাত্র ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করায় সংখ্যাটা বাড়েনি। ফলে কেন্দ্রগুলোতে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে আমাদের কর্মীদের। নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করা ও তাদেরকে ভ্যাকসিন গ্রহণে কেন্দ্রে আনার ব্যাপারে কাউন্সিলরদের ভ‚মিকা প্রসঙ্গে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগ অবিলম্বে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে পৌর এলাকাগুলোতে স্থানীয় সরকার প্রশাসনকে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দিয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি ইউনিয়নে ন্যূনতম একটি কেন্দ্রে করোনা ভ্যাকসিন প্রদানের বিষয়টি বিবেচনার দাবি জানানো হয়েছে। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণভাবেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল বলে জানিয়েছে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ