Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্ভোগে ২১ জেলার মানুষ

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটে দেড় মাস ধরে ফেরি বন্ধ

মো. শওকত হোসেন, লৌহজং (মুন্সিগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশপথ শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটে দীর্ঘ ৪১ দিন ধরে ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগে দুর্ভোগ বাড়ছে। অনেকে প্রচণ্ড স্রোতের মধ্য লঞ্চ ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। এই নৌরুটে ফেরি বন্ধ থাকায় বিকল্প রুট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দিয়ে যাতায়াত করছে অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন যানবাহন। একই সঙ্গে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। ফেরি পারাপারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
এর আগে পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে দুর্ঘটনা এড়ানোর কথা বলে গত ১৮ আগস্ট অনির্দিষ্ট কালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ২৪ দিনে পদ্মা সেতুর তিনটি পিলারে চারবার ফেরির ধাক্কা লাগে। বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, স্রোতের তীব্রতা না কমলে ফেরি চালু হবে না। তাই এই নৌ-রুটে কবে নাগাদ ফেরি সার্ভিস চালু হবে, তা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না। বর্তমানে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে যাত্রী পারাপারে একমাত্র ভরসা লঞ্চ। তাও সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলাচল করছে। নৌপথে রাতের অন্ধকারে দুর্ঘটনা এড়াতে রাতের বেলায় লঞ্চ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে।
ফেরি চলাচল বন্ধ হওয়ার পর বিকল্প রুট হিসেবে বাংলাবাজার ঘাটের পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুরের মাঝিকান্দিতে ফেরির পন্টুন বসানো হলেও তা চালু হয়নি। এই রুটে ডুবোচর থাকায় ফেরি চালানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।
বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, এখনো ফেরি চালুর বিষয় কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। পদ্মায় পানির উচ্চতা আগের তুলনায় কমেছে, কিন্তু স্রোত আগের মতই আছে। স্রোতের তীব্রতা না কমলে ফেরি চালু হবে না। ফেরি চালু করার বিষয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। তবে কবে নাগাদ ফেরি চালু হবে, তা বলা যাচ্ছে না। চালু হলে অবশ্যই জানানো হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকটাই সুনসান শিমুলিয়া ফেরিঘাট। ঘাটের পন্টুনের পাশে কয়েকটি ডাম্ব ফেরি নোঙর করে রাখা রয়েছে। ঘাটে দায়িত্বশীল নেই কোনো কর্মকর্তা। ফেরি না চলায় কোনো গাড়িও এখন আর পারাপারের জন্য এই ঘাটে ভিড়ছে না। যাত্রীরা যারা ঘাটে আসছেন, তারা ফেরিঘাটে না এসে লঞ্চঘাটের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। ফেরির যাত্রীরা লঞ্চে পদ্মা পারাপার হচ্ছেন। এ কারণে লঞ্চগুলোয় অতিরিক্ত চাপও দেখা গেছে।
খুলনাগামী লঞ্চের যাত্রী জয়নাল ফকির বলেন, পরিবার নিয়ে ঢাকায় বিয়ের দাওতে গিয়েছিলাম ফেরি বন্ধ থাকায় প্রচণ্ড স্রোত ও ঢেউয়ের মধ্য লঞ্চ দিয়ে নদী পাড় হতে হচ্ছে। শিবচরগামী যাত্রী মোজাম্মেল জানান, গত সপ্তাহে আমার আম্মা অসুস্থ ছিলেন। তাকে ঢাকা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই নৌরুটে ফেরি বন্ধ থাকায় বিকল্প রুট দিয়ে যেতে হয়েছে। ওই পথে দীর্ঘ সময় লেগেছে, একই সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়াও দ্বিগুণ দিতে হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে এক যাত্রী বলেন, স্রোতের অজুহাত দেখিয়ে ফেরি বন্ধ রেখেছে, আর কর্মকর্তাদের এখন কোনো কাজ করতে হচ্ছে না। প্রতিবছরই এই সময়ে স্রোত বাড়ে। হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে জরুরি সেবার জন্য অন্তত অ্যাম্বুলেন্স ও রোগীবাহী গাড়ি পার করার জন্য দু-একটি ফেরি কি চালু রাখা যেত না। আসলে আমাদের মত মানুষের জীবন মূল্যহীন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ