Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে সন্ধ্যা হলেই হাতির আতঙ্ক

নুরুল আবছার তালুকদার, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার দেয়াং পাহাড়ে অবস্থানরত হাতির তাণ্ডবে পাহাড়ের আশপাশে দুই উপজেলার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সন্ধ্যা হলেই খাবারের সন্ধানে হাতির দলটি লোকালয়ে এসে ভাঙচুর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। এতে করে দুই উপজেলার মানুষের মাঝে হাতি আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাতির আক্রমণে গত ৪ বছরে ৯ জনের প্রাণহানি ও অর্ধশতাধিক লোকের আহতের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি বড়উঠান ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কালা ফকির বাড়ি এলাকার কৃষক মোহাম্মদ এলাহিবক্সা ও মোহাম্মদ আবছারের ঘর ভাঙচুর, ফসলি ধান নষ্ট ও কবস্থানের দেয়াল ভাঙচুর করেছে।
এসময় আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মশাল জ্বালিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাঁশখালীর পাহাড় থেকে ৩টি হাতি খাবারের সন্ধানে গত ৪ বছর আগে আনোয়ারার দেয়াং পাহাড়ে অবস্থান নেয়। খাদ্যের সন্ধ্যানে হাতিগুলো সন্ধ্যা হলেই আশপাশের বারশত ইউনিয়নের কবিরের দোকান, পশ্চিমচাল, কান্তিরহাট, বটতলী ইউনিয়নের জয়নগর, ছিরাবটতলী, গুচ্ছগ্রাম, জয়নালপাড়া, বৈরাগ ইউনিয়নের দেওয়ান বাজার, গুয়াপঞ্চক, খাঁনবাড়ী, মোহাম্মদপুর, বদলপুরা, বন্দর, ও বারখাইন ইউনিয়নের হাজীগাঁও গ্রামে এবং কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠানের খিলপাড়া, খতিবপাড়া, মাইজপাড়া, দৌলতপুর, দক্ষিণ শাহমীরপুর এলাকায় লোকালয়ে প্রবেশ করে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, হামলা ও ফসল নষ্ট করে থাকে।
গত ৪ বছরে হাতির আক্রমণে ৯ জনের প্রাণহানিসহ অর্ধশত লোক আহত হয়েছে। ভাঙচুর করেছে শতাধিক বাড়ি-ঘর। হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে এলাকার লোকজন সারা রাত মশাল জ্বালিয়ে পাহারায় বসে। স্থানীয়দের অভিযোগ এত ক্ষয়-ক্ষতি ও প্রাণহানির পরও বন বিভাগ কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেনা।
বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান মো. সোলাইমান জানান, হাতির আক্রমণে প্রাণহানি ছাড়াও কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু হাতিগুলো সরানোর কোন পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিচ্ছেনা।
বনবিভাগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ রেঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আনোয়ারা ও বাঁশখালীতে পাহাড় ও গাছ কাটার কারণে হাতির খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। তাই খাবারের খোঁজে হাতিগুলো লোকালয়ে চলে আসে। হাতি সরানোর মতো কোন প্রযুক্তি এখনো বনবিভাগের নেই। তবে হাতির খাবার যোগান দিতে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
কর্নফুলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা সুলতানা জানান, দেয়াঙ পাহাড়ে অবস্থান নেয়া হাতিগুলো প্রতিরাতে লোকালয়ে এসে হামলা-তাণ্ডব চালায়। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বনবিভাগ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ