পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের মানুষের বড় একটি অংশ কৃষির উপর নির্ভরশীল। ঝড়-ঝঞ্জা, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মাঠে পসল ফলিয়ে এদেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করেছে। বন্যা- খরা, টর্নেডো, আইলা এসব নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষকের স্বপ্রে ফসল নানা সময় তছনছ করে দিয়েছে। কিন্তু তাতে তারা দমে যায়নি। দুর্যোগ কেটে গেলেই নতুন উদ্যোমে নতুন আশায় তারা আবার স্বপ্নের ফসল বুনতে মাঠে নেমে পড়েছে।
চলতি বছরও টানা বর্ষণ, ভরা পূর্ণিমার জোয়ারে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে খুলনার বিভিন্ন অঞ্চলের ফসলী জমি তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ক্ষেতের ধান ও আগাম জাতের সবজি। তবে পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে নানামুখি সমস্যা কাটিয়ে খুলনাঞ্চলের কৃষকরা আবারও চাষাবাদে মাঠে নেমে পড়েছেন। নিরলস ক্ষেতে কাজ করে আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন উদ্যমে তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি টানা কাজ করছেন। আমনের পাশাপাশি আগাম ফুলকপি, পাতাকপি, সিম, মূলা, মরিচ, উচ্ছে, করোল্লা, টমেটো, ঢেঁড়শ, ওল, হলুদ ও আলুসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ চলছে পুরো খুলনা অঞ্চলে।
গত আগষ্টে টানা বর্ষণে অধিকাংশ স্থানে আমনের বীজতলা তলিয়ে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষকেরা। খুলনা কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বীজ) উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, ওই সময় উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, বটিয়াঘাটা, কয়রা ও পাইকগাছাসহ সমগ্র জেলায় ৫ হাজার ৬৬০ হেক্টর বীজতলার মধ্যে ২ হাজার ১২২ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। একদিকে বীজতলা নষ্ট, অন্যদিকে বাজারে বীজ সংকট-দুইয়ে মিলে কৃষকের মাথায় হাত উঠেছিল। পরবর্তীতে পানি নেমে গেলে কিছু কিছু বীজতলা থেকে চারা তোলা হয়। সরকারি ও বেসরকারীভাবে তাৎক্ষণিক বীজের যোগান দেয়ার পর কৃষকেরা স্বল্প সময়ে আবারো বীজতলা তৈরী করেন। তবে এর ফলে আমন ধান চাষে গড়ে তিন সপ্তাহ পিছিয়ে যান কৃষকেরা। মাঠে এখন চারা রোপণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, প্রাকৃতিক বড় কোনো দূর্যোগ দেখা না দিলে আমনের ভালো ফলন হবে। এবার খুলনার ৯ উপজেলায় ৯২ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
এদিকে, আমনের পাশাপাশি খুলনাঞ্চলে চলছে আগাম সবজি চাষ। আগষ্ট-সেপ্টেম্বরে ৩ দফা টানা বর্ষণে পানি জমে মরিচ, উচ্ছে, করোল্লা, টমেটো, ঢেঁড়শ, পাতাকপির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর ক্ষেত থেকে পানি সরতে ৮/১০ দিন সময় লেগে গেছে। ক্ষেত শুঁকিয়েছে, এখন কৃষকেরা পরিচর্যার কাজ করছেন।
খুলনার সবচেয়ে বেশি সবজি উৎপাদিত হয় ডুমুরিয়া উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ডুমুরিয়ার সবজি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। উপজেলার আটলিয়া গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম জানান, গত অমাবশ্যায় কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারপর আবার পূর্ণিমার তিথিতেও বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে পানি আটকে যায়। পানি বের হতে না পেরে অনেক ক্ষেতে সবজি নষ্ট হয়ে যায়। কাঠালতলার কৃষক আজাদ হোসেন বলেন, এ বছর বেশি লাভের আশায় শীতের আগাম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করেছিলেন। কিন্তু বৃষ্টিতে কপি ক্ষেতে পানি জমে গাছ মরে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেতের খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। তবে নিচু এলাকার কিছু জমিতে সবজির ক্ষেতে পানি জমে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে কৃষকেরা আবার আবাদে নেমে পড়েছেন। সার-বীজ মজুদ রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমানে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সবজির ফলন খুবই ভালো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।