বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোরে পুলিশের কথিত সোর্স আব্দুর রহমান ওরফে রুমান হত্যা মামলার আরো এক আসামি আব্দুর রশিদকে (২৮) নামে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আটক আব্দুর রশিদ ঝিনাইদহ জেলার শালকুপা গ্রামের ফজলু মন্ডলের ছেলে। বর্তমানে যশোর শহরের ঝুমঝুমপুরের রাজনের বাড়ির ভাড়াটিয়া। ঝুমঝুমপুরের বাড়ি থেকে আব্দুর রশিদকে পিবিআই আটক করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র এসআই শরীফ এনামুল হক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রশিদ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। বুধবার ১৫ সেপ্টেম্বর তাকে যশোরে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গৌতম মল্লিক তার জবানবন্দি গ্রহণ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার সোনারপুর কাঁচপুর থেকে শহরতলীর ঝুমঝুমপুরের মনির হোসেন ওরফে ফল মনিরের ছেলে আমিনুর রহমানকে পিবিআই আটক করেছিল। ভাই সাঈদকে অস্ত্রসহ পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে রুমানকে হত্যা করা হয় বলে আটক আমিনুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছিলো। সাইদকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার প্রতিশোধ নিতে আমিনুর, আব্দুর রশিদসহ কয়েকজন রুম্মানকে হত্যা করে। আমিনুরকে আটক করার পর তার স্বীকারোক্তি মূলক দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আব্দুর রশিদকে আটক করা হয়। এ তথ্য জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র এসআই শরীফ এনামুল হক।
২০১৭ সালের ৩১ মার্চ দুপুরে স্থানীয়দের দেয়া সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ বারান্দি মোল্লাপাড়ার বিপরীতে ঝুমঝুমপুরস্থ ভৈরব নদ থেকে রুমানের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে। সে সদর উপজেলার সীতারামপুর পশ্চিমপাড়ার আশরাফ ফকিরের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের মা আমেনা বেগম ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শহরের সিটি কলেজপাড়ার ইনছান আলীর ছেলে রুবেলসহ তার সহযোগীরা মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত। পুলিশ কয়েকবার তাদেরকে আটকও করে। কিন্তু তারা তাদেরকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার জন্য রুমানকে সন্দেহ করতো। এক পর্যায়ে রুবেল তাকে খুন করার জন্য খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুবেল তার সহযোগী ঝুমঝুমপুরের বাবুল মৃধা ওরফে বলু মিয়ার ছেলে রুবেলের মাধ্যমে রুমানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসে। পরে তাকে ঝুমঝুমপুরস্থ ভৈরব পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে উল্লিখিত দুজন ছাড়াও ঝুমঝুমপুরের আব্দুর রশিদের ছেলে রাকিব হোসেন ওরফে রকি, মনির হোসেনের ছেলে আমিনুর রহমান ও সীতারামপুরের মোহাম্মদ আলীর ছেলে বুনো বাবু, ঝিনাইদহ জেলার শালকুপা গ্রামের ফজলু মন্ডলের ছেলে আব্দুর রশিদসহ আরো কয়েকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে রুমানকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। এরপর তার লাশ বস্তাবন্দী করে ভৈরব নদের কচুরিপানার নিচে ফেলে রাখে তারা। পরদিন ৩১ মার্চ সকালে স্থানীয় লোকজন বস্তাবন্দী লাশটি পাওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এ খবর পেয়ে স্বজনেরা এসে লাশটি রুমানের বলে শনাক্ত করেন।
এ মামলার তদন্ত শেষে এজাহারভুক্ত আসামি ঝুমঝুমপুরের বাবুল মৃধা ওরফে বলু মিয়ার ছেলে রুবেলকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন এজাহারভুক্ত অপর ৪ আসামিসহ খোলাডাঙ্গা গাজীপাড়ার কামরুল গাজী ওরফে কামের ছেলে জি এম মেহেদী হাসান শক্তি, সিটি কলেজপাড়া বউবাজার এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে আরমান আলী ও ঝুমঝুমপুর ভৈরব নদের পাড়ের চাঁন কসাইয়ের বাড়ির ভাড়াটিয়া মনিরুল ইসলাম ওরফে মনিরের ছেলে শাহীন হোসেন ওরফে শাহীনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি পুলিশ যশোরের তৎকালীন ইনসপেক্টর হারুন অর রশিদ। কিন্তু এজাহারভুক্ত আসামি ঝুমঝুমপুরের রুবেলের অব্যহতি চাওয়ায় সিআইডি পুলিশের দেয়া ওই চার্জশিটের ওপর আদালতে নারাজি দেন বাদী। গত ১ মার্চ বাদীর করা এই নারাজি আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে আদেশ দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।