Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাম নিয়ে শঙ্কা কৃষকের

নাটোরে পাটের ব্যাপক উৎপাদন

মো. আজিজুল হক টুকু, নাটোর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

নাটোরে ২০২১-২২ মৌসুমে পাটের ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে। পাট কাটার শুরুতে পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে কৃষকদের মনে শঙ্কা থাকলেও অধিক বৃষ্টিপাতে নদী খাল বিলে পানি আসায় পাট জাগ দিতে কৃষকদের আর কোন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। পাটের ভালো ফলন পেয়ে কৃষকরা যেমন আনন্দিত, অধিক ফলনের কারণে তেমনি ভালো দাম না পাওয়ারও শঙ্কা আছে কৃষকদের মনে।
নাটোর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে উপজেলায় এবার ২০২১-২২ মৌসুমে ২ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে ৪ জাতের পাট চাষ করা হয়। তারমধ্যে জেআরও ৫২৪ জাতের পাট ১৯০০ হেক্টর জমিতে, রবি-১ জাতের পাট ২ হেক্টর জমিতে, ০-৭২ জাতের পাট ১৩০ হেক্টর জমিতে ও ০-৯৮৯৭ জাতের পাট ৬৬৮ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়। এতে করে পাটের মোট উৎপাদন ২০২১-২২ মৌসুমে হয় ৮ হাজার ১শ’ মেট্রিকটন যার গড় ফলন ৩ মেট্রিকটন। এর মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে রবি-১ জাতের পাট চাষ করা হয়, যার ফলন হেক্টর প্রতি ৩.৭২ মেট্রিকটন পাওয়া যায়। ২০২০-২১ মৌসুমে নাটোর সদর উপজেলায় ১ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছিল। তারমধ্যে জেআরও ৫২৪ জাতের পাট ১ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে, রবি-১ জাতের পাট ১ হেক্টর জমিতে, ০-৭২ জাতের পাট ১১৫ হেক্টর জমিতে ও ০-৯৮৯৭ জাতের পাট ১৭৯ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়। এতে করে মোট উৎপাদন হয়েছিল ৪ হাজার ৬৮০ মেট্রিকটন পাট যার গড় ফলন ছিল ২.৬ মেট্রিকটন। এর মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে রবি-১ জাতের পাট চাষ করা হয় যার ফলন ছিল হেক্টর প্রতি ৩ মেট্রিকটন।
সদর উপজেলার বড় হরিশপুর ইউনিয়নের জাঠিয়ান এলাকার পাট চাষি মো. বাবর আলী বলেন তিনি ২বিঘায় পাট চাষ করে বিঘা প্রতি ৫ মন করে ফলন পেয়েছেন। তবে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন যেহেতু এবার পাটের ব্যাপক ফলন হয়েছে তাই আগামিতে পাটের দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। যদি পাটের দাম কমে যায় তাহলে শ্রমিক খরচ, সার কীটনাশকের খরচ বাদে তেমন একটা লাভ থাকবে না। এখনও তাও প্রতি মন পাটের দাম ২ হাজার ৯’শ টাকা পাচ্ছি। সব পাট বাজারে উঠা শুরু হলে যে পাটের দাম কত হবে তাই নিয়ে শঙ্কায় আছি। তাছাড়া হালশা ইউনিয়নের বাহান্ন বিঘা ফুলার হালশা এলাকার পাট চাষি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান বলেন, তিনি ৩ বিঘা জমিতে বিদেশি জাতের ‘সম্রাট পাট বীজ’ চাষ করে ফলন পেয়েছেন বিঘা প্রতি ৭ মণ করে।
সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. মেহেদুল ইসলাম বলেন, নাটোরে পাটের ভালো ফলন হয়েছে। এখানে যেসব জাতের পাট উৎপাদন হয় জেআরও ৫২৪, সম্রাটের বীজ সাধারণত দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে চাষ করা হয়। তবে নতুন জাতের পাট রবি-১ বাংলাদেশ জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত। এই জাত উৎপাদন করলে আরোও ভালো ফলন পাওয়া যাবে। এই কৃষিবিদ আরোও বলেন, দেখা যায় সমপরিমান রবি-১ ও অন্যান্য জাতের পাট চাষে একই সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করে যেখানে অন্যান্য জাতের পাট হেক্টর প্রতি ২.৬ মেট্রিকটন উৎপাদন হয় সেখানে রবি-১ হেক্টর প্রতি ৩.৭২ মেট্রিকটন উৎপাদিত হয়। অর্থাৎ অন্যান্য পাট বীজ চাষে যেখানে বিঘায় ৫-৭ মন করে পাট পাওয়া যায় সেখানে রবি-১ জাতের পাট চাষে বিঘা প্রতি ১১ মণ করে পাট পাওয়া যাবে। যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তিনি বলেন এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এই রবি-১ জাত টিকে কৃষক পর্যায়ে প্রণোদনার অন্তর্ভুক্ত করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ