Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপোল ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর

মো. ওমর ফারুক, ফেনী থেকে | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপোল এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি জোরালো হচ্ছে। ফেনীর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে এ দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৩ বছর আগে সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ফেনীর সার্কিট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, লালপোলে সহসায় একটি আন্ডারপাস বা ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু হবে হচ্ছে করে এখনো কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
আর এদিকে মহাসড়কের লালপোলে ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও একের পর এক দাবি জানিয়ে আসছে মানুষ। এ ব্যাপারে ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী ও ফেনী-৩ আসনের এমপি জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর কাছে বারবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তারাও জনগনের দাবির প্রেক্ষিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, লালপোল এলাকাটি মহাসড়ক কানেকটিং হওয়ায় এখানে অনেকগুলো শাখা সড়ক রয়েছে। এসব শাখা সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ লালপোলে আসা যাওয়া করে। বিশেষ করে সোনাগাজী উপজেলাসহ আশপাশের কয়েক লাখ মানুষের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে লালপোল এলাকা। এখানে এসে মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বা গন্তব্যে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠতে হয়। কিন্তু এখানে মহাসড়ক পারাপারের জন্য রয়েছে দুটি ইউটার্ন ক্রসিং। এই ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ছোট যান সিএনজি চালিত অটোরিকশা, টমটম, হিউম্যান হলার উপক‚ল, পিকআপ ও মোটরবাইক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। যাত্রীদেরকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব ছোট যানবাহনে করে গন্তব্যে যেতে হয়। বিশেষ করে সোনাগাজী উপজেলার মানুষজন এবং সদর উপজেলার ধলিয়া, ফরহাদনগর, ফাজিলপুর, লেমুয়া, ছনুয়া, কালিদহ ও মৌটবী ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এসব ছোট যানবাহনে করে ফেনী শহর এলাকা ও মহিপালে আসা যাওয়া করতে হয়। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। শহরে আসার আর কোনো বিকল্প রাস্তা নেই বলে এই পথ দিয়ে তাদেরকে যেতে হয়। এই রাস্তার ওপর দিয়ে হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। যদিও মহাসড়কে ছোট যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আছে সেক্ষেত্রে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে গাড়ি চলাচলে অস্থায়ী অনুমতি মেলে। কিন্তু গাড়িচালক ও যাত্রীদেরকে সবসময় ভয় এবং আতঙ্ক নিয়ে এই পথ দিয়ে চলাচল করতে হয়। কারণ মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি তাই এখানে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। গত কয়েকবছরে লালপোলে সড়ক পার হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় অনেক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ক্রসিংয়ে ছোট গাড়ি পারাপারের ঝুঁকি সামলাতে সিএনজি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ৪ জন কমিউনিটি পুলিশ অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা দৈনিক ৫৫০ টাকা মজুরির বিনিময়ে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ডিউটি পালন করছে। কিন্তু তাদের পক্ষে বড় গাড়ির চাপ সামলানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তারা জানান, দুই বছর আগে ডিউটিরত অবস্থায় তাদের এক সহকর্মী সেখানে দুর্ঘটনায় মারা যায়। তারা আরও জনবল বাড়ানোর দরকার বলে জানান।
জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমাম উদ্দিন ইমন বলেন, লালপোলে একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ এখানে প্রায় সময় মানুষ দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছেন। সরকারের কাছে আমার এবং জনগণের পক্ষ থেকে দাবি জানাই এখানে একটি ফ্লাইওভার বা আন্ডারপাস নির্মাণ করা হোক। ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ খোন্দকার ইনকিলাবকে বলেন, লালপোলে ফ্লাইওভার নির্মাণের বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা অনেক আগেই পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে সবকিছু থমকে ছিল। ফেনী সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী এ বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ রাখছেন। সহসায় এ প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফেনী সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ড.আহাদ উল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জরিপের কাজ শেষ হওয়ার পর ডিজাইনসহ প্রস্তাবনা সওজের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে এটি বুয়েট থেকে পাশ হওয়ার পরে একনেকে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ