Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনিয়ম ও উদাসীনতায় সেবাবঞ্চিত রোগীরা

পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টিকা নিতে পদে পদে হয়রানি

পটিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ডাক্তারের উদাসীনতাসহ নানাবিধ কারণে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়েছে। এতে লোকজন সুষ্ঠু চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। টিকা নিয়ে পদে পদে হয়রানি হচ্ছে উপজেলার মানুষ। দুই মাস পূর্বে টিকার রেজিস্ট্রেশন করা অনেকে প্রথম ডোজ গ্রহণের সুযোগ না পেলেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে পরিচয় থাকা অনেকে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে পরের দিন কিংবা এক সপ্তাহের মধ্যেই টিকা পেয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী উপজেলার খরনা গ্রামের নাজমা আক্তার জানান, গত দুই মাস পূর্বে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা হলেও এখনও প্রথম ডোজের এসএমএস আসেনি। পটিয়া পৌর এলাকার ৫নং ওর্য়াডের হাজীরপাড়ার জোবায়দা বেগম জানান, দেড়মাস হয়েছে রেজিস্ট্রেশন করেছি এখনো এসএমএস পাইনি। অন্য এক অভিযোগকারিনি উপজেলার খরনা গ্রামের আঞ্জুমানারা বেগম জানান, একমাস ২দিন আগে রেজিস্ট্রেশন করেছি এখনো এসএমএস পাইনি।
এসএমএসের বিষয়ে অভিযোগকারীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যান সহকারী আহসান হাবীবের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, টিকা নেই। টিকা এলে এসএমএস পাবেন। অথচ রেজিস্ট্রেশনের ১৫দিনের মধ্যে উপজেলার সর্দারপাড়ার জহির আহমদ টিকা পেয়েছেন। এমন অনেক অনিয়মের অভিযোগ আছে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিরুদ্ধে। নয়ন শর্মা নামে একজনের এসএমএস ঠিক করে দেওয়ার অভিযোগ আছে আহসান হাবিব বিরুদ্ধে। অথচ সাধারণ নিবন্ধনকারীদের এসএমএস ঠিক করে দিতে বললে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অপারগতা প্রকাশ করেন। নয়ন শর্মাকে কিভাবে দেয়া হলো জানতে চাইলে তিনি উপরের নির্দেশ আছে বলেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশে বিধি বর্হিভূতভাবে ২৬শ’ লোককে গণটিকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে গত ৫ আগস্ট কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান রবিউল হোসেন সাসপেন্ড হয়। কিন্তু এখনও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। টিকা নিয়ে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতি বছর হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতার জন্য লাখ টাকা বরাদ্দ আসলেও টাকাগুলো কোথায় ব্যয় হয় তা কেউ জানে না। অথচ ল্যাব কক্ষের পেছনে ময়লা আবর্জনার স্ত‚পে ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালে আগত অধিকাংশ রোগীকে ভর্তি না করে ডাক্তাররা চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করে থাকেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার মতো রোগীদেরকেও হাসপাতালে ভর্তি না করার দরুণ তারা বেসরকারি জেনারেল হাসপাতাল ও সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন। এতে রোগীদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সাথে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার যোগসাজশ থাকার কারণে রোগী ভর্তি করেন না।
সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথ পটিয়ায় বরাদ্দকৃত ভবনে না থেকে চট্টগ্রাম শহরে থাকেন। এতে বিকেল ৫টার পর থেকে কোন জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাওয়া যায় না। এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজে ব্যবহারের জন্য গাড়িটিও ওনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. সব্যসাচী নাথ যোগদানের পর থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সব্যসাচী নাথ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি সারাদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিউটি করতে পারবো না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ