Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাল জন্ম সনদে বাল্য বিয়ে,২২দিন পর যৌতুক মামলা

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৪৭ পিএম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জাল জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে এক বাল্য বিয়ে রেজিষ্ট্রি কাবিন করার অভিযোগ উঠেছে। পরে ঘটনাটি আড়াঁল করে বরের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য কনের পিতা মেয়েকে বাদি করে বিয়ে রেজিষ্ট্রি’র ২২দিন পর গত ৫ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ থানায় যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের আলাদিয়ার আলগী গ্রামের মো. তারা মিয়ার পুত্র মিজান মিয়া ওরফে বিজয় (১৪) পাশের বাড়ির নূরুল ইসলামের মেয়ে মোছা: তানিয়া আক্তারের সাথে গত ১৩ আগষ্ট উচাখিলা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্ট্রার কাজী মো: মাহাবুবুল আলম ৫হাজার ১ শত টাকা রেজিষ্ট্রি ফি নিয়ে এ বিয়ের কাবিননামা সম্পাদন করেন। এতে ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে অলংকার বাবদ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ দেখানো হয়।

ওই কাবিননামায় বরের জন্ম তারিখ পহেলা জুনুয়ারী ১৯৯৯ লিপিবদ্ধ হলেও প্রাথমিক ও জুনিয়র মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সনদপত্রে তার জন্ম তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০০৭। ওই হিসেবে বরের বর্তমান বয়স ১৩ বছর ১০ মাস ১১দিন। কিন্তু একটি জাল জন্ম সনদ তৈরি করে সেখানে বরের বয়স ২১বছর ৮ মাস দেখিয়ে গভীর রাতে কাজী ডেকে বিবাহ সম্পাদন করা হয়। সেই বাল্য বিবাহের পর থেকেই এলাকায় শুরু হয় আলোচনা সমালোচনার ঝড়।

বাল্য বিয়ে কাবিন করার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কাজী মো: মাহাবুবুল আলম বলেন, আমাকে যে জন্ম সনদ দেয়া হয়েছে। তা দেখেই বিয়ে রেজিষ্ট্রি করেছি। তবে বিয়ে রেজিষ্ট্রির পর জানতে পারি জন্ম সনদ জাল। জন্ম সনদের মূল কপি না দেখে বিবাহ রেজিষ্ট্রি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অনেক সময় ফটোকপি দেখেই বিবাহ রেজিষ্ট্রি করি তারপর ওইদিন গভীর রাত হয়ে যাওয়াই এবং সময় সল্পতার কারনে মূল কপি দেখা হয়নি।

বরের বাবা তাঁরা মিয়া বলেন, চাপ সৃষ্টি করে জোরপূর্বক এবিয়ে দেয় কনে পক্ষের লোকজন। পরে ঘটনাটি আড়াঁল করে আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য মেয়ের বাবা মেয়েকে বাদি করে বিয়ে রেজিষ্ট্রি’র ২২দিন পর গত ৫ সেপ্টেম্বর থানায় যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করেন।

কনের পিতা মো: নূরুল ইসলাম এবিষয়ে বলেন, ছেলে-মেয়ের প্রেমের সর্ম্পকের কারণে বিয়ে পড়ানো হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর ছেলে পক্ষ সংসার না করার হুমকি দিলে বাধ্য হয়ে যৌতুক মামলা করেছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি যখন শুনতে পারি জন্ম সনদ জাল করে বাল্য বিবাহ হয়েছে তখন ওই জাল জন্ম সনদটি দেখতে আমি নিজে উপস্থিত থেকে পরিষদের সচিবকে দিয়ে চেক করিয়ে দেখতে পাই এই নামের কোন জন্ম সনদ নেই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ওমর ফারুক বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। কাগজপত্র দেখে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, বিয়ের ঘটনায় থানায় যৌতুক আইনে একটি মামলা হয়েছে। তদন্তে চলছে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ