বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
৯ বছরেও শেষ হচ্ছে না ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অধীনে ফাজিল অনার্স (সম্মান)। ৪ বছরের কোর্স হলেও সেশনজটে জর্জরিত হয়ে আছে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এক শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা শেষ হতে দেড় থেকে দুই বছর সময় নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। এতে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে অতিরিক্ত মূল্যবান ৫টি বছরের অধিক সময় নষ্ট হয়ে গেছে।
জানা যায়, ফাজিল স্নাতক সম্মান ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ৪র্থ বর্ষ-২০১৭ ও ১৮ সালের চূড়ান্ত পরীক্ষা এখনো সম্পন্ন হয়নি। চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু চাকরিতে আবেদন করতে পারছেনা এমন বিভিন্ন অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাজিল অনার্সের (সম্মান) মান চালু হয়। তখন থেকে ইবির অধীনে সারাদেশের ৩১ টি মাদরাসায় শিক্ষার্থীরা ফাজিল অনার্স (সম্মান) কোর্সে ভর্তি হন। ৪ বছর মেয়াদি এই কোর্সের ৪ হাজার ১ শ’ মার্কের উপর পরীক্ষা দেন তারা। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ৩১টি মাদরাসার সবগুলোতে ৫টি সাবজেক্ট দেওয়া হয়নি। কিছু মাদরাসায় দুই একটি করে সাবজেক্ট দেওয়া হয়েছে। আবার যে সব মাদরাসায় সব সাবজেক্ট দেওয়া হয়েছে সেখানে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু করে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ৫টি বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনটি বর্ষ চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছে। বাকি দুটি শিক্ষাবর্ষ ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা ৯ বছরেও সম্পন্ন করতে পারেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে এসব পরীক্ষা নেবার আশ্বাস দিলেও সঠিক সময়ে কোন পরীক্ষা নেয়া হয়নি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এভাবে চলতে থাকলে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বড় ধরণের সেশনজটে আটকে থাকবে।
জয়পুর হাট মাদরাসার ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আল-কোরআন বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রহিম বলেন, ‘নয় বছরেও আমরা পরীক্ষা শেষ করতে পরছি না। ফাইনাল পরীক্ষা কবে হবে তার কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে রেজাল্ট দিতে আরো ৬ মাস কখনও এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই সমস্যার জন্য দায়ী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কারণ আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান অনার্সে সময়মত পরীক্ষা হচ্ছে, দ্রুত রেজাল্ট হচ্ছে এবং তারা সেশনজটমুক্ত। তাছাড়া আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের থেকে টাকার পরিমানও বেশি নেয়। অথচ তারা সঠিক সময়ে পরীক্ষা ও রেজাল্ট দিতে পারে না। এমনকি পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬ মাস পরে ভাইভা নিচ্ছে যেটা সম্পূর্ণ অনিয়ম।
ঢাকা তা'মীরুল মিল্লাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মুফতী মুহাম্মাদ আবু ইউসুফ খান বলেন, করোনাকালীন সময় দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরও সাম্প্রতিক বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলাতে পরিক্ষা নিচ্ছে। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বি এ ফাজিল অনার্স (সম্মান) পরিক্ষা গ্রহনের ব্যাপারে কোন পরিকল্পনা দেখি না। তারা ইচ্ছা করলে পরিক্ষাটি নিতে পারেন। তাদের জন্য ছাত্ররা এভাবে সেশনজটে আটকা পড়ে গেছে। পরবর্তী যারা ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হয়েছে তাদের অনার্স মাস্টার্স শেষ হয়ে গেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে বিনীত ভাবে অনুরোধ করব আপনারা ত আপনাদের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন এবং বিভিন্ন বিভাগের পরিক্ষাও গ্রহন করতেছেন এই সাথে সেশনজটে ভুক্তভোগী এসকল শিক্ষার্থীদের দ্রুত পরিক্ষাটা নিয়ে তাদেরকে চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ করে দেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বর্তমান ইবির অধিনে ফাজিল অনার্স ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ দুটি সেশন রয়েছে। ইতোমধ্যে সেশন দুটি একত্রিত করা হয়েছে। আমরা দ্রুত তাদের পরিক্ষাটি নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। ভিসি স্যার ক্যাম্পাসে আসলে তার থেকে অনুমতি নিয়েই আমরা পরিক্ষার কার্যক্রম শুরু করে দিব।
প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, এবিষয় আমার কিছু জানা নেই। তাই আমি কোন মন্তব্য করতে পারছি না। বিষয়টা আমি জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুস সালাম বলেন, ‘ এবিষয় আমাকে আগে অবহিত করা হলে আমি পরিক্ষা নিয়ন্ত্রকে জানিয়েছিলাম কিন্তু তিনি আমাকে কি উত্তর করেছিলেন সেটা আমার মনে নেই। তাছাড় আমাদের শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা নিতে গিয়ে টানাহেঁচড়া করতে হচ্ছে। পরবর্তীতে অবস্থা অনুকূলে আসলে বিষয়টা দেখা হবে।'
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।