Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বিরলে গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকাবাসী

বিরল (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

 দিনাজপুরের বিরলে পুলিশকে মারপিট ও ধস্তাধস্তি করে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে কাজিপাড়া গ্রামের ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরোও ২৫—৩০ জন। মামলার রাতেই আটক করা হয়েছে ২ জনকে। ঘটনার পর গোটা গ্রামে পুলিশ আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তবে গ্রামবাসী ও আসামির পরিবারের লোকজন পুলিশের উপর পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন, গত সোমবার রাতে আসামী ছিনিয়ে নেয়ার মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বিরল থানার একদল সংঘবদ্ধ পুলিশ সদস্য কাজিপাড়া গ্রামে ২ দফায় তাণ্ডব চালিয়ে বিভিন্ন বাড়ীর দরজা ও ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর, তছনছ, ও লুটপাট করে মসজিদের ইমাম থাকার কক্ষের দরজা ভেঙে নিদোর্ষ ২ ব্যাক্তিকে ধরে নিয়ে গেছে।
জানা গেছে, গত সোমবার রাত ৮ টার দিকে বিরল থানার এস আই আজাদ ফোর্স নিয়ে গ্রেফতারী পরোয়ানা তামিল করতে উপজেলার রাণীপুকুর ইউপি’র কাজিপাড়া গ্রামে যায়। এ সময় নুর জামাল ওরফে খাদমুলের পুত্র গ্রেফতারী পরোয়নার আসামি মেহেদীকে আটক করতে গেলে তার পরিবারের লোকজন উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে মারপিট ও ধস্তাধস্তি করে। এ সময় তারা পুলিশের মোটরসাইকেল হতে আসামি মেহেদীকে ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় এস আই আজাদ বাদী হয়ে রাতেই ওই গ্রামের ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরোও ২৫৩০ জনকে আসামি করে বিরল থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশকে মারপিট ও আসামি ছিনতাইয়ে ঘটনায় পুলিশ আবারোও রাত আড়াইটার দিকে আসামি ধরতে ওই গ্রামে অভিযান চালায় বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ ফখরুল ইসলাম। এসময় পুলিশ এজাহার নামীয় আসামী মঞ্জুর হোসেনের পুত্র সাজ্জাদ হোসেন ও আমজাদ হোসেনের পুত্র স্বপনকে স্থানীয় মসজিদের ইমামের কক্ষ থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে বলেও তিনি জানান।
এদিকে পলাতক আসামী মেহেদীর পরিবার পুলিশকে মারপিট ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, বিরল থানা পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় মেহেদীকে তার বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে। এ সময় মেহেদীর মা মেহেরুন নেছা তার ছেলের গ্রেফতারের বিষয় পুলিশের নিকট জানতে চাইলে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে মেহেরুন নেছাকে মারপিট করে। এ ঘটনায় স্থানীয় কয়েকজন পুলিশের এ আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে ওই সুযোগে গ্রেফতার কৃত আসামী মেহেদী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ সূত্রধরে রাত আড়াইটার দিকে বিরল থানার একদল পুলিশ সদস্য ২টি পিকআপ ভ্যান ও কয়েকটি মোটরসাইকেল যোগে এসে আবারও এই গ্রামে হানা দিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে তান্ডব চালায়। পুলিশ পলাতক আসামি মেহেদীর বাড়ীর দরজা ভেঙে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর, মেহেদীর মা মেহেরুন নেছা ও মামি সাহেরা খাতুনকে মারপিটসহ নগদ অর্থ স্বর্ণালংকার লুটপাট চালায় বলে পলাতক আসামি মেহেদীর পরিবার অভিযোগ করেন।
পুলিশ রাত আড়াইটা হতে শুরু করে প্রায় ভোর ৫টা পর্যন্ত গ্রামটিতে তাণ্ডব চালায় বলেও জানান এলাকাবাসী। পুলিশের মারপিটে আহত মেহেরুন নেছা দিনাজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকাটিতে পুলিশ আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দিনাজপুর এ এস পি (সদর সার্কেল) সুজন সরকার ও বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ ফখরুল ইসলাম।
তবে পুলিশের তাণ্ডব, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা দায়েরের সংবাদ পাওয়া যায়নি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ