বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সীতাকুণ্ড উপজেলা সংবাদদাতা : সীতাকুণ্ডের মাদামবিবিরহাটে মাদকাসক্ত স্বামীকে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পন করেছে স্ত্রী খতিজা বেগম। পুলিশ ঘাতক স্ত্রীকে নিয়ে বুধবার মধ্যরাতে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পোষ্টমর্টেমের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার ভোর রাতে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মাদামবিবিরহাট নেভী রোড এলাকার মো: নাছির কনট্রাক্টরের ভাড়াটিয়া মো: জাহাঙ্গীর আলমকে (৪৮) কে তারই স্ত্রী দুই সন্তানেন জননী খতিজা বেগম (৪২) ভারি পাথর দিয়ে মাথা ও গলায় আঘাত করে হত্যা করে। ঘটনার পর থেকে নিজের দুই শিশু পুত্রকে নিয়ে খতিজা ঘর থেকে বেরিয়ে দিশেহারা হয়ে ঘুরতে থাকেন। এভাবে সারাদিন ঘোরার পর রাতে থানায় আত্মসমর্পন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সীতাকুন্ড থানায় উপস্থিত হন। সেখানে গিয়ে খতিজা পুলিশকে জানান, জাহাঙ্গীর আলম ফেনী জেলার দাগন ভুঁইয়া থানার ভবানীপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের পুত্র। সম্পর্কে তার আপন খালাত ভাই হন। ২০০০ সালের তাদের বিয়ে হয়েছিলো। সংসারে শাহীন (১৩) ও সম্রাট (৩) নামক দুই পুত্র সন্তান আছে। জাহাঙ্গীর পেশায় একজন ড্রাইভার। সীতাকুণ্ডের মাদামবিবিরহাট এলাকায় আবুল খায়ের গ্রুপের একটি কারখানার গাড়ি চালক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। খতিজার অভিযোগ, চাকুরী শেষে প্রতি রাতেই মাদকাসক্ত হয়ে ঘরে ফিরতেন জাহাঙ্গীর। এরপর স্ত্রী-সন্তানদের উপর অকথ্য নির্যাতন শুরু করত। এভাবে বছরের পর বছর জাহাঙ্গীরের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন তিনি। সর্বশেষ গত বুধবার রাতে একইভাবে মাদকাসক্ত হয়ে ঘরে ফিরে এসে স্ত্রী খতিজাকে মারধর শুরু করেন। তাকে হত্যা ছাড়া এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায় নেই দেখে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অত্যাচার অশান্তি ঘটিয়ে এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর ঘুমিয়ে পড়লে ভোরে পাটা বাটার ভারি পাথর দিয়ে (শিল নড়া) তার মাথা ও গলায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়। হত্যাকারী খতিজা আরো বলেন, তাকে হত্যার পর তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। কি করবেন, কোথায় যাবেন এসব ভেবে ভেবে দুই সন্তানকে নিয়ে সারাদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে থাকেন। এক পর্যায়ে রাতে থানায় আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সীতাকুণ্ড থানায় এসে উপস্থিত হন।
খতিজার মুখে স্বামী হত্যার বর্ণনা শুনে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা ওসি মোঃ ইফতেখার হাসানকে ঘটনাটি জানান। সব শুনে ওসি সীতাকুণ্ড থানার খতিজা বেগমকে ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেলের সাথে ঘটনাস্থলে পাঠান। রাত আনুমানিক ১টায় ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেলের নেতৃত্বে পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল মাদামবিবিরহাটের নাছির কনট্রাক্টরের ভাড়া বাড়িতে পৌঁছালে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী জানায়, বুধবার ভোরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটলেও গভীর রাতে পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত কেউই এ ঘটনা জানতে পারেননি। পরে লাশের সুরতহাল তৈরি শেষে রাত আনুমানিক ২টায় জাহাঙ্গীরের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। এদিকে মাদকাসক্ত স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে খতিজা তাকে হত্যা করেছে বলে দাবী করলেও প্রকৃত পক্ষেই এ কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে নাকি এর পেছনে অন্য কোন কারণ আছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো: ইফতেখার হাসান প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। হত্যাকারী খতিজার বর্ণনা শুনে ঘটনাস্থল থেকে আমরা লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। তবে সে সত্য বলছে না হত্যার পেছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। আপাতত, খতিজাকে কোর্ট হাজতে পাঠানো হয়েছে। তার দুই সন্তান এখনো পুলিশ হেফাজতে আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।