পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্কুল-কলেজ-মাদরাসার ক্লাসে ফেরার জন্য ছোট-বড় সব বয়সি শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে প্রস্তুতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের অনেকের জামা-কাপড় ছোট হয়ে গেছে। তারা স্কুলে যাওয়ার জন্য নতুন নতুন জামা-কাপড় কিনছেন। বন্ধুদের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর দেথা হবে; আহা কি আনন্দ! রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত সব পরিবারে একই চিত্র। যেসব পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করেন, প্রতিটি পরিবারে চলছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার ক্লাসে যাওয়ার উৎসবের আমেজ। শিক্ষার্থীদের এই আমেজে বাবা-মাসহ পরিবারের বড় সদস্যরাও শরীক হচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে এতে শিক্ষকরাও দারুণ খুশি। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের সবার এখন আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারি ওলটপালট করে দিয়েছে অনেক কিছুই। এমন কোনো খাত নেই, যেটিতে ক্ষত সৃষ্টি করেনি প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। তবে অন্য সবকিছুর চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষা খাত। করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ এই বন্ধের পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা। অনুষ্ঠানিক এই ঘোষণা আসার পর থেকেই দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে খোলার প্রস্তুতি। পরিষ্কার করা হচ্ছে জঙ্গলে পরিণত হওয়া খেলার মাঠ, ধোঁয়ামোছা চলছে ধুলাপড়া চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চ, শ্যাওলা জমে যাওয়া ফ্লোর-দেয়াল, ক্লাসরুম-বাথরুম।
এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় উচ্ছ¡সিত শিক্ষার্থীরাও। দেড় বছর পর ক্লাসরুমে ফেরার অপেক্ষায় তারা। অনেক শিক্ষার্থীই অপেক্ষার প্রহর গুণছে প্রিয় প্রতিষ্ঠান, ক্লাসরুমে যাওয়ার, প্রিয় শিক্ষক-সহপাঠীদের সাথে সাক্ষাৎ, আড্ডা ও খেলাধুলার। যদিও দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলায় বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এছাড়া অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। এছাড়া করোনাকালে শিক্ষাঙ্গন বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীই আর স্কুলে ফিরবে না। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে না পেরে অনেক ছাত্রছাত্রী এরই মধ্যে বিভিন্ন কাজে জড়িয়েছে। জোর করে অনেক মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঝরেপড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাটা কত হবে তার ধারণা না মিললেও কিন্ডারগার্টেন আর বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরই শিক্ষাঙ্গনমুখী না হওয়ার শঙ্কা বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। শিক্ষার্থীদের এই ঝরেপড়া রোধ করাটাই এখন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত বছরের ১৭ মার্চ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর দফায় দফায় সেই ছুটি বাড়ানো হয় ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। যদিও এর মধ্যে কয়েকবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতির কথা বলা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছেন, খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। ওই রাতেই বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ শনাক্ত থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। ধীরে ধীরে করোনার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সাপেক্ষে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়। এরপর দিন শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি চাঁদপুরে এক অনুষ্ঠানে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দেন। আর গত রোববার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে শেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খোলার পর প্রথমে চলতি বছরের এবং আগামী বছরের এসএসসি-দাখিল ও এইচএসসি-আলিম পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে। বাকি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস হবে। এর আগে আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদান উপযোগী করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ক্লাস শুরু হলে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করাসহ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে আবারও বৈঠক করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই জোর প্রস্তুতি চলছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসাগুলোকে পাঠদান উপযোগী করতে। কারোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা অনেক প্রতিষ্ঠানই রাখা হয়নি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। ঘোষণার আগে রাজধানী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইনকিলাবের প্রতিনিধিরা ঘুরে দেখেন, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ পরিণত হয়েছিল জঙ্গলে, ক্লাসরুমের ফ্লোর-দেয়ালে জন্মেছিল ঘাস, টেবিল-চেয়ার-বেঞ্চে ছিল ধুলার আস্তরণ। এছাড়া কমন রুম, টয়লেট হয়ে পড়েছিল ব্যবহার অনুপযোগী।
এ নিয়ে ইনকিলাবে একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিছন্ন করতে নির্দেশনা প্রদান করেন। তবে খোলার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই গতি পায় সেই কাজে। গত দু’তিন দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় সবক’টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই চলছে ধোঁয়ামোছার কাজ। বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠের ঘাস কেটে পরিষ্কার করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে রাজধানীর সেগুনবাগিচা, শাহজাহানপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আজিমপুর গার্লস হাই স্কুলের মাঠে ঘাস থাকলেও এরই মধ্যে তা কেটে ফেলা হয়েছে। গতকাল এসব স্কুল ঘুরে দেখা যায়, মাঠ পরিষ্কার করার পাশাপাশি ক্লাসরুমগুলোও ধোঁয়ামোছার কাজ শেষ হয়েছে। একইভাবে সারা দেশেও প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলো একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর উপযোগী করে তোলা হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষঙ্গিক কাজ তদারকি করবেন মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত কি-না তা তারা সরকারকে নিশ্চিত করবেন। তিনি আরও বলেন, সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রম চালুর জন্য অভিভাবকদের সচেতনতা প্রয়োজন। বাড়ির কেউ আক্রান্ত আছে কি-না তা তারা নিশ্চিত করবেন। সন্তান আক্রান্ত নন, সেটা যতটা সম্ভব নিশ্চিত করে স্কুলে পাঠাবেন। প্রত্যেক অভিভাবক এটা নিশ্চিত করলে সব বাচ্চা ভালো থাকবে।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন ধরনের গাইডলাইন, এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) বা পরিচালনা বিধি হালনাগাদ করেছি। সেগুলোর বাস্তবায়ন শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা নিশ্চিত করবেন। প্রতিদিন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর তাপমাত্রা মাপা এবং তাদের অন্যান্য উপসর্গ আছে কি-না সেটি চেক করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্লাসরুমের মধ্যে যে বিষয়গুলো মানা দরকার তা মানতে হবে। বিশেষ করে সবার মাস্ক আছে কি-না সেটা শিক্ষক নিশ্চিত করবেন। মাস্ক পরা ছাড়া কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকবে না। কাজেই অভিভাবকদের একটা বড় ভ‚মিকা রয়েছে, তারা তাদের সন্তানদের মাস্কটি দিয়ে দেবেন। যেন শিক্ষার্থীরা মাস্কটি বাসা থেকেই পরে স্কুলে আসে। তারা বাসায় ফিরে যাওয়া পর্যন্ত যেন মাস্ক পরে থাকে। সবার মাস্ক পরতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। তবে খুব ছোট বা কম বয়সি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শিক্ষকরা খেয়াল রাখবেন, এতে কারও অসুবিধা হয় কি-না। কোনো শিক্ষার্থীর যদি মাস্কের কারণে কোনো অসুবিধা হয়, সেটি তারা অবশ্যই দেখবেন। ক্লাসরুমে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা থাকবে। এজন্য উপকরণ স্কুলে আছে। যেখানে নেই তারা কিনে ফেলবেন। স্কুলে এখন কোনো অ্যাসেম্বলি হবে না। তবে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা চলবে, যাতে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকে। খোলার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের করণীয় সবকিছু তদারকি করা হবে। যেদিন যেই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্কুলে নেওয়া হবে, সেদিন তাদের দুভাগে প্রয়োজনে তিনভাগে তিন কক্ষে বসানো হবে। প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দৈনিক অনলাইনে নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি বলেন, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফোরামের মুখপাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা বইয়ের জগৎ ছেড়ে ফেসবুক বা পাবজি গেম কিংবা নেশায় আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। মানসিক সমস্যায় ভুগছে। বর্তমানে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট আদান-প্রদান চলছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট ভালোভাবে বুঝতে পারছে না। ক্লাস শুরু হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে এবং অ্যাসাইনমেন্ট বুঝতে সহজ হবে সুবিধা হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণায় উচ্ছ¡সিত শিক্ষার্থীরাও। দীর্ঘদিন পর স্কুল ও ক্লাসে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে তারা। অপেক্ষার প্রহর গুণছে সহপাঠীদের সাথে ফের খেলায় মেতে উঠার, শিক্ষকদের সাথে দেখা করার। তবে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি বকেয়া বেতন নিয়ে অভিভাবকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কারণ এরই মধ্যে বিগত দিনের সব বেতনসহ পুনঃভর্তি ফি পরিশোধ করার জন্য অভিভাবকদের চাপ দিচ্ছে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শুধু টিউশন ফি নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান :
উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলায় বন্যা দেখা দেওয়ায় সেখানকার তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এছাড়া অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান চালেঞ্জের মুখে পড়েছে। জানা যায়, পাবনার চাটমোহরের ২২০টি প্রাথমিক এবং ৮৭টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। শাহজাদপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এখানকার ৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। চৌহালীতে যমুনা নদীর ক্রমাগত ভাঙনে গত দেড় বছরে প্রায় ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহে ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় গ্রাস করেছে যমুনা নদী। ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। নাটোরের সিংড়া উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। যাতায়াতের রাস্তা ও খেলাধুলার মাঠ ডুবে রয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পানি না কমলে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোলা সম্ভব হবে না।
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। রৌমারীতে ৪টি স্কুল নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যার পানি উঠেছে ২৩টি প্রাথমিক ও ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়েছে। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ৯ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি হাইস্কুলে বন্যার পানি উঠেছে। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরের চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পদ্মার ভাঙনের মুখে রয়েছে।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে প্রাথমিকের পরীক্ষা :
পরিস্থিতি বিবেচনায় নভেম্বরের শেষে কিংবা ডিসেম্বরের শুরুতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাহির হোসেন। তিনি বলেন, কতগুলো বিষয়ের ওপর পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে, সেটা পরিস্থিতি অনুযায়ী ঠিক করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের সব বার্ষিক পরীক্ষাও এ বছর নেওয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলেও প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের আপাতত স্কুলে নেওয়ার পরিকল্পনা নেই। প্রাক-প্রাথমিকের ওরা আসবে না। আমরা বলছি, ওরা চার বছরের শিশু। আমরা এই সময়ে রিস্ক নিতে চাচ্ছি না। আমরা প্রথম থেকে পঞ্চম দিয়ে শুরু করি, যদি পরিস্থিতি আল্লাহ স্বাভাবিক করে দেয়, তখন দেখা যাবে। কোভিড পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে ভালো হচ্ছে। স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্ক বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি হ্যান্ড-স্যানিটাইজার ও তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখার কথা বলছে সরকার। স্কুলগুলোতে সশরীরে ক্লাসের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।