Inqilab Logo

সোমবার ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আওয়ামী লীগ নয়, দেশ চালাচ্ছে আমলা লীগ

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

আওয়ামী লীগ নয়, আমলা লীগ দেশ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকাল আপনি জেলাগুলোতে যদি যান, ঢাকার ডিসি (জেলা প্রশাসক) অফিসে যান যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির মিটিং হয় বা কোনো উন্নয়ন কর্মকান্ডের মিটিং হয় সেখানে সরকারি আমলারাই সবচেয়ে বেশি আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করে। আওয়ামী লীগ কোথায়? আওয়ামী লীগ তো নাই এখন। এখন তো পুরো আমলা লীগ। আমলা মানে-সামরিক, বেসামরিক-পুলিশ সব।

গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৪তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হচ্ছে, পুলিশের লোক জোর করে তুলে নিয়ে অপহরন করে চাঁদা আদায় করছে, পুলিশের অফিসার ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত হচ্ছে। পত্রিকায় খুলে দেখবেন তখন তারা একটা নতুন কারসাজি শুরু করেছে। আইজি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) বলেছেন যে, এখন পুলিশ সাংবাদিকতাও করবে। কী অবস্থা দেশের যে এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাদ দিয়ে, চোর-ডাকাতকে ধরা বাদ দিয়ে, যারা অন্যায় করছে তাদেরকে ধরা বাদ দিয়ে তারা সাংবাদিকতাও করবে। এটা কিন্তু সুদূরপ্রসারী। পুলিশ যখন সাংবাদিকতা করতে চায় তাহলে বুঝতে হবে যে, এই রাষ্ট্র আর নেই। পুলিশকে এতো ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যে, ওরা নিজেরাই বলে বাতির রাজা হচ্ছে ফিলিপস, মাছের রাজা ইলিশ আর দেশের রাজা হচ্ছে পুলিশ।

সামাজিক মাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণের ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তথ্যমন্ত্রী বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বা বাইরে থেকে যে সমস্ত টিভি পরিচালিত হয় সেই টিভিগুলো এখানে (বাংলাদেশ) পরিচালনা করতে গেলে এখান থেকে অনুমতি গ্রহন করতে হবে। অর্থ্যাৎ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যে সত্য কথাগুলো প্রচারিত হয়, গণতন্ত্রের পক্ষে যারা কথা বলে তাদেরকেও এখন সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে। ইতোমধ্যে করেছে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ অন্যান্য আইনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের যে স্বাধীনতা সেটাও তারা ধবংস করেছে, কথা বলার স্বাধীনতাকে খর্ব করেছে।

জনদৃষ্টি সরাতে সরকার আবোল-তাবোল বক্তব্য দিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, তারেক রহমান, বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য। এটার উদ্দেশ্য জনগণের সমস্যার সমাধান করতে না পেরে জনগণের দৃষ্টিটা অন্যদিকে ফেরানো। এদেরকে জনগণের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কোনো উপায় নেই। এই ধরনের সরকার বেশিদিন টিকে না। যাদের জনগণের ভিত্তি নেই, দেউলিয়া হয়ে গেছে তারা কথনোই টিকে থাকতে পারে না। ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করতে হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, অনেক মন্ত্রণালয় আছে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এখন দুইটা লাগবে। একটা হলো ষড়যন্ত্রমূলক মন্ত্রণালয় আরেকটা মিথ্যা বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আপনি ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনবেন প্রতিদিন ষড়যন্ত্র হচ্ছে, বিরাট ষড়যন্ত্র। আবার প্রধানমন্ত্রীরও দুইদিন পর বলছেন ষড়যন্ত্রের কথা। ষড়যন্ত্র আপনাদের বিরুদ্ধে হবে কেনো? আপনারাই তো জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছেন, জনগণকে প্রতারিত করেছেন। আপনরাই তো ষড়যন্ত্রকারী। ওবায়দুল কাদের এতো ষড়যন্ত্র তত্ত¡ আবিস্কার করছেন আমার মনে হয়, একটা মিনিস্ট্রি গঠন করে তাকেই ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া উচিত।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ করে আপনি বাজারে ছেড়ে দিলেন যে, জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়গুলো। আপনি একটু টঙ্গিপাড়ায় যান। আপনি পিতার (শেখ মুজিবুর রহমান) কবরে বলেন, জিয়াউর রহমানকে কেনো বীর উত্তম উপাধি দিয়েছিলেন? রংপুরের পীরগঞ্জে যান। ওখানে আপনার স্বামীর (ওয়াজেদ মিয়া) কবরে গিয়ে বলেন যে, আপনি বইটা লিখেছিলেন ওই বইটার মধ্যে যে আমি অর্থ্যাৎ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তার স্বামী ওয়াজেদ সাহেব- ‘তুমি এবং আমি একসাথে স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছি জিয়াউর রহমানের’-তুমি বইটাতে লিখলে কেনো লিখলে? প্রশ্ন করে কি উত্তর দেন দেখেন। কারণ মিনিস্ট্রি অব লাই- মিথ্যার মন্ত্রণালয় করে ওই দায়িত্বটা শেখ হাসিনাকে দিতে হবে। উনি ভালো কোনো শিক্ষা নেননি।

উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে ও উপদেষ্টা ওবায়দুর রহমান চন্দনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামসুল আলম, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম সারওয়ার, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ