Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার তিন হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন কিনেছে : মিডিয়া ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

১৩ সেপ্টেম্বর থেকে মেডিক্যাল কলেজে সশরীরে ক্লাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা প্রতিরোধে অল্প দিনে সরকার ৩ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন কিনেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ভাগ্যবান, এই ভ্যাকসিনগুলো অর্ডার করতে পেরেছি। অনেক দেশ আছে যেখানে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম পুরো দমে শুরুই হয়নি। আমরা সেটা করতে পেরেছি এবং অল্প দিনে আমাদের সরকার ৩ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন কিনেছে। সামনে আরও কিনতে হবে। যেগুলো অর্ডার করেছি, সেগুলোও টাকা দিয়ে কিনতে হবে। সেখানেও হাজার হাজার কোটি টাকা লাগবে। আনার, রাখার, ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার খরচ আছে। জনগণের পাশে প্রধানমন্ত্রী আছেন।

গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন পেতে এ পর্যন্ত ৩ কোটি ৮৩ লাখ মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছেন। প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১ কোটি ৮৬ লাখ ও দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৮২ লাখ মানুষ। আমাদের হাতে ১ কোটি ২২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আছে। আমরা চীনে এ পর্যন্ত সাড়ে ৭ কোটি ভ্যাকসিন অর্ডার দিয়েছি। প্রথমে দেড় কোটি এবং গত কিছু দিন আগে আরও ৬ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের অর্ডার দেয়া হয়েছে। প্রতি মাসে ২ কোটি করে আগামী তিন মাসে ৬ কোটি ভ্যাকসিন চলে আসবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে একটি প্রস্তাবনা আমাদের কাছে এসেছিল, সাড়ে ১০ কোটি ভ্যাকসিনের। আমরা সেই সাড়ে ১০ কোটি ভ্যাকসিন কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং চুক্তি করেছি। গত ১০—১৫ দিনে বাংলাদেশ সাড়ে ১৬ কোটি ভ্যাকসিন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ভ্যাকসিনগুলো আগামী ডিসেম্বর—জানুয়ারির মধ্যে দেশে চলে আসবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যে ৬ কোটি ৮০ ভ্যাকসিন কোভ্যাক্স সুবিধার মধ্যে বিনামূল্যে পাওয়ার কথা, তা চলমান থাকবে বলে উল্লেখ করেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্র বয়স্ক এবং শিক্ষক ও ছাত্রদের আমরা অগ্রাধিকার দেব। মডার্না ও ফাইজার ভ্যাকসিন পাওয়ার পারে আমরা ছাত্র—ছাত্রীদের দেয়ার চেষ্টা করব। কারণ প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুল—কলেজ খুলে দেয়া যায়। ভ্যাকসিন দেয়ার পরে স্কুলে নিতে পারলে আমাদের জন্য মঙ্গলজনক। সেই চেষ্টা আমরা করব। করোনা পরিস্থিতির আগের তুলনায় ভালো হয়েছে। অনেক কিছু খুলে দেয়া হয়েছে। কল—কারখানা চলছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলতে হবে। খুলে দেওয়ার অর্থ এই না বেপরোয়াভাবে চলব। তাহলে সংক্রমণ আবারও বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে, যেভাবে গতবার বেড়েছিল। এখনো কোভিড চলে যায়নি।

এদিকে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে সশরীরে ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, নার্সিং কলেজ, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি), মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এবং ডেন্টাল কলেজ। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় দেড় শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। মেডিক্যাল শিক্ষা এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে একটা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের রোগীর কাছে যেতে হবে। যদি না যায় তাহলে তাদের শিক্ষা অপূর্ণ রয়ে যাবে। সে একজন ভালো ডাক্তার হতে পারবে না। এসব চিন্তা—ভাবনা করে, সবার মতামত নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত এখন সশরীরে ক্লাস শুরু করে দেয়া দরকার। তা না হলে বড় গ্যাপ পড়ে যাবে। চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিরাট গ্যাপ হয়ে যাবে। আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসক আগামীতে পাব না।

জাহিদ মালেক বলেন, এসব চিন্তা করে প্রথম বছর, দ্বিতীয় বছর এবং পঞ্চম বছরের সশরীরে ক্লাস নিতে যাচ্ছি। তার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন সেটা আমরা গ্রহণ করছি। আমরা শিক্ষকদের টিকা দিয়েছি। ছাত্র—ছাত্রীদের আমরা টিকা দিয়েছি। এর মাধ্যমে তাদের সুরক্ষিত করার চেষ্টা আমরা করেছি। ক্লাসে যখন তারা যাবে, মাস্ক পরে যেতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। অন্যান্য যে ব্যবস্থা তাদের সুরক্ষার জন্য সেগুলো আমরা গ্রহণ করছি।

আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একবারে খুলে দেব না। আমরা পর্যায়ক্রমে খুলব। আমরা দেখব, কোনো ধরনের কোনো সমস্যা দেখা দেয় কি না। সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ছাত্র—ছাত্রীদের রোগীর কাছে যেতে হবে। দ্বিতীয় ও পঞ্চম বছরে যদি না যায় লেখাপড়া অপূর্ণ থেকে যাবে। রোগীকে দেখতে হবে। সেখান থেকে তারা চিকিৎসা দেওয়া শিখবে। ননকোভিড এবং ক্ষেত্র ভেদে কোভিড রোগীদের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা আমরা করব। সেটা যথাযথ সুরক্ষার মাধ্যমে এই ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব। এরই মধ্যে আমরা ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে। অন্যান্য ধরনের পরীক্ষা চলমান আছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. এবিএম খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, চলতি মাসের ১৩ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু করতে পারবেন। হয়তো দুয়েক দিন এদিক—ওদিক হতে পারে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ