Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৬ এএম

বহুল আলোচিত হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আব্দুল মালেককে ব্ল্যাকমেইল করে কোটি টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় কথিত দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মালেকের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকায় তাকেও গ্রেফতার দেখিয়েছে র‌্যাব। চক্রের প্রধান পরিকল্পনাকারী বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাংবাদিক মো. ইকবাল হোসেন (৩১) ও তার সহযোগী মো. আমিরুল ইসলাম (৩৫)। সাংবাদিকতার আড়ালে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও অপরাধীদের টার্গেট করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি। বেশ কিছুদিন ধরে বেসরকারি টেলিভিশন ও নামসর্বস্ব পত্রিকার নাম ব্যবহার করে রাজধানীর উত্তরায় চক্রটি তাদের অপরাধ কার্যক্রম চালাচ্ছিল। অভিযানে তদের কাছ থেকে একটি ক্যামেরা ও বেসরকারি একটি টেলিভিশনের লোগোযুক্ত মাইক্রোফোন, পাঁচ লাখ টাকা, তিনটি একশ টাকার স্ট্যাম্প, ৪৫ ও ৫০ লাখ টাকার দুটি চেক জব্দ করা হয়। গতকাল বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ৩১ আগস্ট দুপুরে আব্দুল মালেককে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে এমন অভিযোগে র‌্যাব তাকে উদ্ধারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এদিন বিকেলে উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে মালেককে উদ্ধার করা হয়। এসময় পরিকল্পনাকারী ইকবাল হোসেন ও তার সহযোগী আমিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুজন জানিয়েছেন তারা মালেককে ব্ল্যাকমেইল করতে বেশ কয়েকদিন ধরে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। ঘটনার দিন দুপুরে মালেক উত্তরখানে তার আত্মীয়র বাসায় গেলে পরিকল্পনাকারীরা সেখানে যায়। এসময় তারা এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তার বিরুদ্ধে মিডিয়ায় হলমার্ক কেলেঙ্কারি বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে হুমকি দেন ওই দুজন। পরে মালেককে উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর স্বজনদের কাছে ফোন করে এক কোটি টাকা, চেক ও স্ট্যাম্প নিয়ে আসতে বলা হয়। অভিযুক্তরা একটি চাঁদাবাজ দলের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। তাদের দলে ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে বলেও র‌্যাবকে জানিয়েছেন তারা। চক্রের সদস্যরা এলাকায় প্রাণের বাংলাদেশ, স্বাধীন সংবাদ, বি ডাব্লিউ নিউজ, প্রথম বেলা, ডেইলি নিউজসহ কয়েকটি সংবাদপত্রের পরিচয় দিতেন।
কমান্ডার আল মঈন আরও বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর উত্তরা ও উত্তরখান এলাকায় এসব সংবাদপত্রের পরিচয় দিয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, অপরাধী ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি এবং হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। ইকবাল হোসেন ও আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা রয়েছে। আমরা বেসরকারি ওই টেলিভিশনে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছেন, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগে সাংবাদিক ইকবালকে কয়েক মাস আগে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। অন্যদিকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আব্দুল মালেক পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি ব্যাংকের ঋণখেলাপি। এই কেলেঙ্কারিতে ওই সময় যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের নামে মামলা হয়েছিল তার মধ্যে মালেকের প্রতিষ্ঠানটিও ছিল বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় মালেককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ