Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

হাবিরের পক্ষে মাঠে স্থানীয় প্রভাবশালীরা, কাল নামছে আইনশৃংখলা বাহিনী

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৫:০০ পিএম

দোরগোড়ায় সিলেট-৩ আসনে উপ-নির্বাচন। সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টার কাঁটাতে ফুরিয়ে যাবে ৩দিন। প্রত্যাশিত ভোট গ্রহনের দিন ৪ সেপ্টেম্বর। শেষ মুর্হুতে কৌশলী প্রচানা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে শাসক দল আ’লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। দল ক্ষমতায়, পরিবেশ প্রতিবেশ তার অনুকূলে। দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাপাশ জেলা মহানগর সহ কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দও তার জয় নিশ্চিতে ঘাম ঝরাচ্ছেন। তারা সরগরম করে তোলছেন পাড়া মহল্লাসহ গ্রামীন জনপদ। তবে নৌকা তথা হাবিবের পক্ষে নেমেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা বা গ্রাম্য মাতব্বরা। শাসক দল আ’লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রভাবশালীদের সংযোগ নৌকার প্রার্থীকে রিলাক্স মুডে রেখেছে। কেননা প্রভাবশালীদের আঙ্গুলের ইশারায় চুপছে যান গরীব, নিরীহ ভোটাররা। স্বাধীন মত প্রকাশের, স্বাধীনতা সেখানে উবে যায়। নির্বাচনী এলাকার বেশিরভাগ এলাকায় প্রভাবশালীদের প্রচ্ছন্ন হুমকিতে ভোট কেন্দ্রে এজেন্ট দেয়ারও হিম্মত রাখছেন প্রতিদ্ব›িদ্ধ প্রার্থীরা কর্মী সমর্থকরা। মনে ভয়, যদি নির্বাচন পর এর খেসারত দিতে হয়। এমনিতেই হামলা-মামলার হয়রানির একটি ভয় চাপিয়ে রয়েছে সরকার বিরোধী কর্মী সমর্থকদের। সেই ভয়, সিলেট-৩ আসনে বিশেষ করে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদেরও এবার চোখে মুখে। সরকারের সাথে সর্ম্পক থাকায় বিগত সময়ে তারা নিরাপদ ছিলেন আ’লীগ-জাপার রাজনীতিতে জাতীয় ঐক্যে। কিন্তু উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনীতিতে আলীগ-জাপার সর্ম্পক তৈরী হয়েছে দা-কমুড়ার। নির্বাচন নিয়ে যে প্রশ্ন বিরোধী দল করে ভোটে প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে বিরত থেকেছে, সেই প্রশ্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করে এবার করছে জাতীয় পাটি। উপ-নির্বাচনে আ’লীগ-জাপা মুখোমুখী হওয়ায় সেই বিষয়টি খাবলে খাচ্ছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের। নির্বাচনী এলাকায় অনেকটা একা এখন জাপা। কর্মী সমর্থকরা অনেক স্থানে নির্ভয়ে বা খোলামেলা পরিবেশে প্রচারনা চালাতে সাহস পাচ্ছেন না। কেউ সাহস করলেই নানা কৌশলে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে তাদের। ভয়ভীতি নিয়ে জাপার প্রার্থী অভিযোগও করেছেন। কিন্তু তারপরও স্থাণীয়ভাবে সেই ভয় ভীতি প্রদর্শন এখনো কমেনি। সেকারনে শংকা দেখা দিয়েছে, ভোটের পরিবর্তে লুটে জয় নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন আ”লীগ প্রার্থী হাবিবের পক্ষে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। এই অবস্থায় আসন্ন উপ-নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে আগামী বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) থেকে মাঠে নামছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের পরে আগামী রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন তারা। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার জানিয়েছে, ইতোমধ্যে আইন-শঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে একটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রতিটি বাহিনী তাদের সদস্যদের মোতায়েন করবে। ইসির পরিকল্পনা থেকে জানা গেছে, সাধারণ ভোটকেন্দ্রে থাকবে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে ১৮ থেকে ১৯ জন সদস্য। এদের মধ্যে পুলিশ আর অঙ্গিভূত আনসার সদস্যের কাছে অস্ত্র থাকবে। তারা সার্বক্ষণিক ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা দেবেন। পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল ফোর্স ২১টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১২টি, র‌্যাবের ১২টি টিম ও ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে আগামী ২ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিজিবির সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায়। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত রাখা হবে ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। যেকোনো অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচার কাজ সম্পন্ন করতে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরাও। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কার্যপরিধিও নির্ধারণ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। অন্যদিকে রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোট গণনা কক্ষের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া নির্বাচন কার্যালয়সমূহ, রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিধান করা, স্থানীয় জননিরাপত্তা, কেন্দ্রে ভোটারদের সুশৃঙ্খল লাইন করানোসহ স্থানীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, সংশ্লিষ্ট এলাকার কে›ন্দ্র সমূহের ইভিএম ও ইভিমের কারিগরি সহায়তায় নিয়োজিত/দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। আবার ভোটারদের জন্য আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করাও এ বাহিনীর দায়িত্ব। সিলেট-৩ আসনটি ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা নিয়ে গঠিত। এতে ৩ লাখ ৫০ হাজারের মতো রয়েছে ভোটার। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শফি আহমেদ চৌধুরী।

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ