Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

টিকার প্রতীক্ষায় এক কোটি ১৬ লাখ মানুষ

নিবন্ধন করে এসএমএস পাচ্ছেন না

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

করোনাভাইরাসের টিকার জন্য মুখিয়ে রয়েছে দেশের লাখ লাখ মানুষ। কেউ নিবন্ধন করে এসএমএসের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। কখন এসএমএস আসে তা দেখার জন্য বার বার মোবাইল দেখছেন। আবার কেউ টিকা পেতে নিবন্ধন করার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছেন। অথচ গণটিকা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। যদিও ঘোষণা দেয়া হয়েছে ৭ সেপেন্টম্বর পুনরায় গণটিকা কার্যক্রম শুরু হবে। কিন্তু টিকা কার্যক্রমের গতি দেখে মানুষ আস্থাহীন হয়ে পড়ছেন। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করে বলছেন, যে গতিতে টিকা কার্যক্রম চলছে তাতে লক্ষ্যে (দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা) পৌঁছিতে ১০ বছর সময় লাগবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৭৩ লাখ ২২ হাজার ৫৮২ জন মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এরমধ্যে ৩ কোটি ৬৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭১৮ জন এনআইডি দিয়ে এবং ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬৪ জন পাসপোর্ট দিয়ে নিবন্ধন করেন। অথচ স্বাস্থ্য বিভাগ এ পর্যন্ত মাত্র ৪ শতাংশের কিছু বেশি মানুষকে পূর্ণ দুই ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন এক কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার ৯৬৭ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৭৬ লাখ ৩৯ হাজার ৭৯৩ জন। নিবন্ধন করে এখনো টিকা পাননি এক কোটি ১৬ লাখ ১১ হাজার ৮২২ জন। এরা সবাই মুখিয়ে রয়েছেন টিকার এসএমএসের জন্য।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেব মতে যত মানুষের টিকা দেয়া হবে তার মাত্র ৪ শতাংশ মানুষের টিকা দেয়া হয়েছে। এখনো বাকি রয়েছে ৭৬ শতাংশ মানুষ। বাংলাদেশের মাত্র ৪ শতাংশ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হলেও পাশের দেশ নেপালে প্রায় ১৩ (১২.৯৪ শতাংশ), ভারতে প্রায় ১০ (৯.৮১ শতাংশ০, শ্রীলংকা ২৯.৩৩ শতাংশ, মালদ্বীপে ৫৫.০৩ শতাংশ, ভুটানে প্রায় ৬২ (৬১.৮৮ শতাংশ) মানুষকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত প্রথমেই শুধু ভারতের সেরামের টিকার উপর নির্ভরশীল হওয়ায় টিকা কার্যক্রমে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে।
জানা যায়, জাতীয় করোনার টিকা প্রয়োগ পরিকল্পনায় দেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনার বিষয়টি বিশদভাবে বর্ণনা করা আছে। দেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার। এ হিসাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৩ কোটি ৫১ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দিতে চায়। এখন পর্যন্ত দেশে বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা এসেছে ৩ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার ডোজ। অথচ এখন পর্যন্ত টিকা প্রদান করা হয়েছে ২ কোটি ৫২৫৮৫১৯ ডোজ। প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৬৬ লাখ ৬১ হাজার ৪১২ জন এবং পূর্ণ ডোজ অর্থ্যাৎ দুই ডোজই টিকা সম্পন্ন হয়েছে ৬৫ লাখ ৭৫ হাজার ৪৭৩ জনের।
গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ প্রতিদিনই বাড়ছে। সবাই টিকা নিতে উন্মুখ হয়ে রয়েছেন। মানুষের এই আগ্রহ ধরে রাখতে দ্রুতই বিভিন্ন উৎস থেকে আরও টিকার সংস্থান ও নিবন্ধনকৃতদের দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।
জানতে চাইলে করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, নিবন্ধন করে দীর্ঘদিনেও টিকা না পাওয়ায় টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ হারাচ্ছে। মানুষ যে নিবন্ধন করেও টিকার জন্য অপেক্ষায় থাকছেন, তা নিয়ে কারো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। করোনা নির্মূলে টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ ধরে রাখতে দ্রুতই বিভিন্ন উৎস থেকে আরও টিকার সংস্থান ও নিবন্ধনকৃতদের দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।
গতকালও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের ৭ কোটি মানুষকে করোনার টিকার আওতায় আনা হবে। কিন্তু গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হলো যে প্রক্রিয়ায় টিকা কার্যক্রম চলছে তাতে এটা প্রায় অসম্ভব। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ