পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিগত কয়েকদিন ধরেই কমতে শুরু করেছে। ১০ সপ্তাহ পর গতকাল ১৫ শতাংশের নিচে করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুর হারও কমতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে। এমন অবস্থায় দীর্ঘ ১৭ মাসেরও বেশি সময় পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সংক্রমণ ৫ শতাংশে নেমে এলেই প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্কুল খুলে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর থেকেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সব প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তো জানিয়েছেন আজকে বললে কালকেই খুলে দিতে পারবেন। একই সূরে কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের ক্লাসরুমে, দেয়ালে, বেঞ্চে জমেছে ধুলা-ময়লা, কোথাও কোথাও শেওলা, ফাঙ্গাসও জন্মেছে। শিক্ষার্থীরা যেসব বাথরুম ব্যবহার করেন সেগুলো স্বচোক্ষে না দেখলে দূরবস্থা বর্ণনা করা দুষ্কর। রাজধানীর সেগুনবাগিচা, শাহজাহানপুর, কমলাপুর, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, লালবাগের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। রাজধানীর বাইরে বিশেষ করে উপজেলা ও মফস্বল এলাকার স্কুলগুলোর অবস্থা আরও করুন।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, দরজা-জানালাও খোলা হয় নায়, ক্লাসরুম, বাথরুমগুলোর খুবই খারাপ অবস্থান। কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসরুমের দেয়ালে শ্যাওলা জমা ও ঘাস জন্মানোর কারণে খোলার আগে এগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন। চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চও কোন কোন প্রতিষ্ঠানে নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোন নির্দেশনা আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বলেন, প্রস্তুতি নিতে বললেই তো হবে না, ক্লাসরুমগুলোর যে অবস্থা এগুলো সংস্কার করতে অনেক ব্যয় হবে, দ্রুত করতে গেলে লোকজনও বেশি লাগবে কিন্তু এ বিষয়ে কোন নির্দেশনা এখনো আসেনি।
এখন যে অবস্থায় আছে তাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো সত্যিকার অর্থেই কোন প্রস্তুতি সরকারের নেই বলে মনে করেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক প্রফেসর ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে সংক্রমণ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ গাইডলাইন কররা উচিত ছিল। কারণ অনেক প্রতিষ্ঠানই আছে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ, দরজা-জানালা একবারের জন্যও খোলা হয়নি। খোলার আগে এগুলো জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় এজন্য প্রতিদিনই শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের যেটুকু দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন সেটি নিশ্চিত করতে হবে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, তাপমাত্রা পরিমাপ করার বিষয়টিও জোর দিতে হবে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে ভালো হতো সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষককে যদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা যেতো, তারা আবার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্যদের তা শেখাতে পারতেন। একই সাথে এ বিষয়ে শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা জরুরি ছিল। কিন্তু এগুলোর কিছুই এখনো করা হয়নি।
বিদ্যমান অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীরা অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকিতেও পড়তে পারেন আশঙ্কা প্রকাশ করে ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ক্লাসরুমের ফ্লোর, দরজা, জানালা, বেঞ্চ-টেবিল-চেয়ার, বাথরুম ভালোভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করলে শিক্ষার্থীদের অ্যালার্জি, অ্যাজমাসহ বেশ কিছু রোগ হতে পারে। অনেক সময় বিষাক্ত ফাঙ্গাস জন্মাতে পারে, যেগুলোতে মারাত্মক টক্সিন আছে। এগুলোর সংস্পর্ষে আসলে মৃত্যুও ঘটতে পারে। এজন্য স্কুল খোলার আগে শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দেয়ার পর থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আমাদের জোর প্রস্তুতি চলছে। সার্বিক প্রস্তুতি ও খোলার বিষয়ে খুব শিগগিরই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলন করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।