Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ভয়ঙ্কর ক্ষতি করছে সরকার

গুলশান কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সরকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভয়ংকর ক্ষতি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, হঠাৎ করেই কঠোর লকডাউন-টকডাউন সমস্ত উধাও হয়ে গেলো। এখন খুলে দিলাম, যে যেমন খুশি চলো। হাজার হাজার মানুষ একসাথে চলছে, ফিরছে-সব কিছুই করছে। একটা জিনিসই চলছে না এটা হচ্ছে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অর্থ্যাৎ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন শিক্ষা না পায় সেই ব্যবস্থা তারা (সরকার) করছে।

গতকাল সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির পরিচালিত কোভিড-১৯ হেল্প সেন্টারের জন্য ওষুধ সামগ্রি হস্তান্তর উপলক্ষে জিয়া পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই করোনার একটা পরিকল্পনা করা হয়েছে। যেমন তারা টিকার জন্য পরিকল্পনা করেছেন, তেমন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জীবন-জীবিকার পরিকল্পনা করেছে এবং একই সঙ্গে কিভাবে শিক্ষা প্রদান করা যায় সেটার জন্য তারা পরিকল্পনা করেছে। আমাদের এখানে কোনো পরিকল্পনা নাই। এই যে একটা ভয়ংকর ক্ষতি হচ্ছে প্রজন্মের, ক্ষতি করছে প্রজন্মের।

অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অনলাইনে কারা পড়ে? একমাত্র যারা বিত্তশালী মানুষ তারাই অনলাইনে পড়া-শুনা করতে পারে, আর তো কারো পক্ষে সম্ভব নয়। একটা কম্পিউটার, মোবাইল সেট যোগাড় করা- সারা দেশে সেটা নাইও। গ্রামে স্কুলগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ। ছেলেরা এখন বেলুন বিক্রি করছে, বাদাম বিক্রি করছে। স্কুল বন্ধ এখন তারা বাবা-মাকে সাহায্য করার জন্য এগুলো করছে। এই ক্ষতি মোকাবিলার করার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা তারা গ্রহন করতে পারেনি। তারা আছে শুধু বিভিন্ন রকম ভুল ব্যাখ্যা ও তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে।

টিকা নিয়ে তেলেসমাতি হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনা মোকবিলায় সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে সব দিক দিয়ে। না পেরেছে তারা চিকিৎসা দিতে, না পেরেছে তারা আমাদের জনগণকে আগাম একটা প্রিভেনটিভ ব্যবস্থা তৈরি করার জন্য একটা ব্যবস্থা করতে। পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে শুধু দুর্নীতির কারণে।

তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলছে ১৮ বছর বয়স ধরলে মোটামুটিভাবে ১৩ কোটি মানুষের টিকার প্রয়োজন। তাহলে ২৬ কোটি ডোজ টিকা লাগবে। আনে ২ লাখ, ৩ লাখ, ১ লাখ। তাও আবার দান, অনুদান আসে। সেখানে বলে যে, আমরা গণটিকা প্রদানের অভিযান করছি এবং প্রতিদিন এককোটি করে টিকা দেবো। অনরেকর্ড বলেছে। অথচ টিকা নাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই হচ্ছে মিথ্যা তথ্য-প্রচারণা। এদের লজ্জা-শরমও নেই। তারা ভুল তথ্য দিয়ে মিথ্যা কথা বলে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
করোনার শুরু পর প্রথম দিকে চীন ও রাশিয়া টিকা প্রদানের প্রস্তাবের বিষয়টি তুলে ধরে ফখরুল বলেন, চীন ও রাশিয়া প্রথম দিকে এখানে টিকা উৎপাদনের প্রস্তাব নিয়ে এসছিলো। তখন তারা (সরকার) নেয়নি। কেনো নেয়নি? তাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতম ইতিহাসের সর্বোচ্চ সম্পর্ক যাদের সঙ্গে আরকি। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছিলো যে চুক্তিটাও সম্পূর্ণ জনবিরোধী চুক্তি। সেই টিকার দাম বেশি, আবার টিকার অর্থ অগ্রীম পরিশোধ করে দেয়া হয়েছিলো। পরে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে সম্ভবত এক কোটি ২০ লাখ টিকা এসছিলো আর কোনো টিকা আসেনি। এখন চীনের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছে। এখানে টিকা বোতলজাত করবে। আমি জানিনা এই চুক্তির ভেতরে ডিটেলস কি আছে, কখন শুরু করবে। আমার কথা হলো চীনের টিকাই যদি নিতে হয়, ওইটাই যদি উৎপাদন করতে হয় তাহলে প্রথমে করলেন না কেনো? একটা বিশেষ প্রাণী যখন পানি খায় ঘোলা করে। এরা হচ্ছে সেই প্রাণীয় যারা ঘোলা করে খায়।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক এমতাজ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জিয়া পরিষদের নেতাদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, আবু জাফর খান, দেলোয়ার হোসেন, শহীদুল ইসলাম, নীলিমা রহমান লিলি, নুরুন নবী, ইদ্রিস আলী প্রমূখ নেতারা ছিলেন।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ