পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ডিজিটাল মুদ্রা সারা বিশ্বে প্রচলিত আর বহুল আলোচিত একটি নাম। ডিজিটাল মুদ্রার বিষয়টি আসলেই ভাবা হয় বিটকয়েন, ডগকয়েনসহ হাজারো ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম। ক্রিপ্টোকারেন্সির জগতে এই ডিজিটাল মুদ্রাগুলোর আধিপত্য সর্বত্র। অথচ সরকারিভাবেও বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয ব্যাংকের মাধ্যমে বাজারে আসছে ডিজিটাল মুদ্রা। দেশের জাতীয় কারেন্সিকেই ডিজিটাল রূপ দিচ্ছে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই খবর খুব বেশি প্রচারিত হয় না।
সরকারি ডিজিটাল মুদ্রা মূলত কাগজের মুদ্রার ডিজিটাল রূপ। পার্থক্য হলো, এই মুদ্রা মানুষের ওয়ালেটে নয়, থাকবে মোবাইল ফোনে। আর এতে কমতে পারে বিশ্ববাজারে ডলারের আধিপত্য। ‘সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সিস’ মানুষের ধারণার অনেক আগেই বাজারে চলে আসতে পারে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের অন্তত ৮১টি দেশ এখন ডিজিটাল মুদ্রার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। এই দেশগুলো বিশ্বের মোট জিডিপির ৯০ শতাংশের জোগান দিচ্ছে। এদের মধ্যে পাঁচটি দেশ ইতিমধ্যে ডিজিটাল মুদ্রা চালু করে দিয়েছে। ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টসের সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্বের অন্তত এক-পঞ্চমাংশ মানুষ কয়েক বছরের মধ্যে ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করবে।
এই প্রতিযোগিতায় যথারীতি সবচেয়ে এগিয়ে আছে চীনের ডিজিটাল ইউয়ান। তারা ৫০০ কোটি ডলার সমমূল্যের ইউয়ান পরীক্ষামূলকভাবে লেনদেনও করে ফেলেছে। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনো গবেষণার পর্যায়ে আছে। দেশটির আর্থিক সেবাবিষয়ক হাউস কমিটি এরই মধ্যে সরকারি ডিজিটাল মুদ্রার সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। বাস্তবতা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রকে শিগগিরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়েছে।
তারা মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র এখনই কিছু করতে না পারলে ভবিষ্যতে দেশটিকে সব ঘটনা দেখতে হবে। এ জগতে খেলোয়াড়ের বদলে যুক্তরাষ্ট্র দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে। ডিজিটাল মুদ্রার জগতে সারা বিশ্বের রিজার্ভের বাজারে মার্কিন ডলারের আধিপত্য কমে যেতে পারে। তখন বিভিন্ন দেশ সরাসরি ডিজিটাল মুদ্রায় বিনিময় করতে পারবে, অভিন্ন মাধ্যম হিসেবে ডলারের প্রয়োজন পড়বে না। বিশ্বের আর্থিক বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম সুইফটেরও প্রয়োজন পড়বে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঠিক সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের এ বিষয়ে আরো উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।
ডিজিটাল মুদ্রাবিষয়ক গবেষক ও চীনের সাংহাই ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মাইকেল সুং বলেন, সে সময় মানুষ ডলারের ব্যবহার কমিয়ে দেবে। সব দেশ ডলারে রিজার্ভ সংরক্ষণ করায় ডলারের মূল্যমান এখন অনেক বেশি। কিন্তু ডিজিটালি বিল পরিশোধ করা সম্ভব হলে ডলারের ব্যবহারও কমে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সেই দেশগুলো যনে ডলার ব্যবস্থার মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে, তা সহজেই নিশ্চিত করতে পারেন মার্কিনিরা। এত দিন তারা সুইফটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেন পর্যবেক্ষণ করতে পারত। কিন্তু এখন তার প্রয়োজন না হলে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ হারাবে। সরকারি ডিজিটাল মুদ্রা চালু করতে হবে তাদেরও।
এদিকে চীন ইউয়ানের আন্তর্জাতিকীকরণ শুরু করেছে। মূলত, ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব যেন দেশের অভ্যন্তরীণ বা বৈশ্বিক বাণিজ্যে না পড়ে, সে লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ। এ ছাড়া চীনের এই উদ্বেগও আছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ডলারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করবে। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে হুয়াওয়ের মতো কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের ডিজিটাল ইউয়ান চালুর ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বৈশ্বিক ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখতে হবে। যে বিকল্প বিশ্বব্যবস্থা চীন তৈরি করতে চায়, ইউয়ান হবে তার হাতিয়ার। তবে অন্যান্য দেশ ডিজিটাল ইউয়ান কতটা গ্রহণ করে, তার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। কারণ, ডলারভিত্তিক বৈশ্বিক পেমেন্ট ব্যবস্থা যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ। এতে অনেকেই ঢুকতে পারে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।