Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আজ পবিত্র আশুরা

বের হবে না তাজিয়া মিছিল

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৩ এএম

আজ শুক্রবার ১৪৪৩ হিজরির ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এ দিনটি পালিত হবে। কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনার এই দিনটি ধর্মীয়ভাবে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হয় মুসলিম বিশ্বে।

আরবি হিজরি সন অনুসারে ১০ মহররম ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে কারবালায় হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের শাহাদাতের দিনটি সারা বিশ্বের মুসলমানরা ত্যাগ ও শোকের দিন হিসেবে পালন করেন। মহররম মাসের দশ তারিখটি আশুরা নামে খ্যাত। এই দিনটির মাহাত্ম্য ও ফজিলত অত্যন্ত বেশি। এই দিনে সকলেরই উচিত ইবাদত-বন্দেগী করা। এই দিনে অনেক বিখ্যাত ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক সংক্ষিপ্ত আলোচনা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা) মু. আ: আউয়াল হাওলাদার। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমান (অতিরিক্ত সচিব) উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন শায়খুল হাদিস ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ। আলোচনা শেষে তিনি দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত স্বীয় কুদরতে কালেমার নিদর্শন স্বরূপ বেশ কিছু দিন ও রাতের সম্মান ও মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রথমত, আশুরার দিন পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা পবিত্র লাওহে মাহফুজ ও যাবতীয় সৃষ্ট জীবের রূহ পয়দা করেছেন। সমস্ত দুনিয়ার নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর এই দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে। মানব জাতির আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-কে আল্লাহপাক এই দিনেই পয়দা করেছিলেন। এই দিনই আল্লাহপাক তাঁর তাওবাহ কবুল করেছিলেন। একই দিন তাঁকে জান্নাতে দাখিল করেছিলেন। দরবারে এলাহীতে বহু কান্নাকাটির পর এই তারিখেই আল্লাহপাক হযরত ইদ্রিস (আ.)-কে সশরীরে জান্নাতে নিয়ে গেছেন। এই দিনই হযরত নূহ (আ.) এবং তাঁর অল্প সংখ্যক ঈমানদার উম্মতগণ অল্প কয়েক দিনের রসদপত্র নিয়ে কিস্তিতে সওয়ার হয়েছিলেন এবং তুফান হতে মুক্তিলাভ করেছিলেন।

এই দিন আল্লাহপাক হযরত ইব্রাহিম (আ.)-কে পয়দা করেছিলেন এবং এই দিনই তিনি নমরূদের অগ্নিকুন্ড হতে নাজাত লাভ করেছিলেন। এই দিনেই হযরত মূসা (আ.) তুর পর্বতে আল্লাহপাকের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলেন এবং তাওরাত কিতাব লাভ করেছিলেন। আর এই দিনই পাপিষ্ট ফেরাউন নিজের দলবলসহ হযরত মূসা (আ.)-এর পশ্চাধাবন করতে গিয়ে ‘বাহরে কুলজমে’ ডুবে ধ্বংস হয়েছিলেন। হযরত আইয়্যুব (আ.) এই দিনে রোগ হতে মুক্তি লাভ করে ধন-সম্পদ ফিরে পেয়েছিলেন। হযরত ইয়াকুব (আ.) প্রিয় পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে বহু শোকতাপ সম্বরণ করার পর ফিরে পেয়েছিলেন। এই দিনই মহান আল্লাহপাক হযরত ইউনুস (আ.)-কে মাছের পেট হতে উদ্ধার করেছেন।

এই দিনই হযরত ঈসা (আ.) পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এই দিনেই তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। হযরত জিব্রাইল (আ.) এই দিনে আল্লাহপাকের রহমত নিয়ে হযরত আদম (আ.)-এর নিকট প্রথম উপস্থিত হয়েছিলেন। এই দিনই রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র, শাবাবে আহলে জান্নাত, সাইয়্যেদ হযরত ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তাঁর সঙ্গী-সহচরগণ করবালা ময়দানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে শাহাদত বরণ করেছেন। এই দিনই আল্লাহপাক পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ও আসমান হতে বৃষ্টি নাজিল হয়েছে। আর এই দিনেই কোনো এক শুক্রবারে ইস্রাফিলের সিঙ্গার ফুৎকারে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।

যে ব্যক্তি এই দিন রোজা রাখবে সে যেন সারা বছর রোজা রাখল এবং অসীম পুণ্যের অধিকারী হলো। যদি কেউ এই দিন বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দান করে মহান আল্লাহ পাক তাকে বিপদ হতে মুক্তি দান করবেন। আর যদি কেউ রোগীর সেবা করে, অসহায় এতিমদের মাথায় স্নেহভরে হাত বুলায়, ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করে, পিতা-মাতাকে পানি পান করায় তবে তার আমলনামায় অশেষ পুণ্য লেখা হবে। পবিত্র আশুরার দিনে ফেরাউনের স্ত্রী বিবি আছিয়া শিশু মুসাকে গ্রহণ করেছিলেন। আবার স্বীয় কওমের লোকজনসহ হযরত মুসা (আ.) নীল নদ অতিক্রম করে ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি লাভ করেন। পবিত্র আশুরা সমগ্র জগৎ সৃষ্টির দিন হিসেবে যেমন স্বীকৃত, তেমনি এই দিন কেয়ামত অনুষ্ঠিত হয়ে জগৎ ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।



 

Show all comments
  • Borhanuddinmiah ২০ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ এএম says : 0
    I have fasted these days.Oh mankind afrid the Almighty Allah
    Total Reply(0) Reply
  • Papri Biswas ২০ আগস্ট, ২০২১, ৫:০৮ এএম says : 0
    মাতম এটা ঠিক না।আল্লাহ নিজের উপর করা জুলুম পছন্দ করেন না।আল্লাহ এদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুক।
    Total Reply(0) Reply
  • Shawon Arafat ২০ আগস্ট, ২০২১, ৫:০৮ এএম says : 0
    ভুল বিশ্বের মোসলমানরা এই দিন উদযাপন করে না! এই দিন উদযাপন করে শিয়া সম্প্রদায়!!!!
    Total Reply(0) Reply
  • Delwar Rahman ২০ আগস্ট, ২০২১, ৫:০৯ এএম says : 0
    আশুরার দিনে কাকতালীয়ভাবে ইমাম হুসাইন রা: শহীদ হয়েছেন কারবালার প্রান্তরে। এই শহীদ হবার জন্য কোনোক্রমেই আশুরার রোজা রাখা হয় না। এই দিনে বিভিন্ন গুরুতবপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। আশুরার রোজা রাখার ১ টাই কারণ।। সেটা হল হজরত মুসা আ: যালিম ফেরাঊনের কবল থেকে উদ্ধার লাভ করেছিলেন এবং রোজা এটার শুকরিয়া স্বরূপ।
    Total Reply(0) Reply
  • সৈকত ফকির ২০ আগস্ট, ২০২১, ৫:০৯ এএম says : 0
    খুবই ভালো সিদ্ধান্ত...
    Total Reply(0) Reply
  • Asadur Rahman ২০ আগস্ট, ২০২১, ৭:৪৩ এএম says : 0
    খুব সুন্দর উপস্থাপন। ইয়া হোসাইন ইয়া হোসাইন আঃ। পুরা ইসলাম ইমাম হোসাইন আঃ এর উপর দাড়িয়ে আছে। রাসুলঃ বলেন আমা হতে হোসাইন, হোসাইন হতে আমি। আমি একজন সুন্নিজামাত। তাজিয়া মিছিল হলে ভালো হতো। উম্মাইয়া আর আব্বাসিয় দের শাসন কালে জাল হাদিস বানিয়ে এই দিন টাকে ছোট করা হয়েছে। লেটেস্ট নবী মহানবী সঃ এর জন্ম দিন একেক জন একেক তারিখ বলে, আর আড়াই হাজার নবীর জন্ম এই দিনে এটা তারা ১০০ ভাগ ঠিক পাইলো ক্যামনে, তখন পঞ্জীকা আছিলো কই যখন আদম হাওয়ায় তওবা কবুলহয়
    Total Reply(0) Reply
  • আসাদুর ২০ আগস্ট, ২০২১, ৭:৪৮ এএম says : 0
    ইসলাম দাড়িয়ে আছে ইমাম হোসাইনের শাহাদাতে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আশুরা

৯ আগস্ট, ২০২২
৯ আগস্ট, ২০২২
৯ আগস্ট, ২০২২
২২ আগস্ট, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ