পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস কার্যক্রম দ্রুততরকরণ এবং শিল্পকে অতিরিক্ত খরচের কবল থেকে রক্ষা করতে বেসরকারি আইসিডি’র পরিবর্তে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাসের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ আগষ্ট) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম. শাহজাহান এর সাথে তার চট্রগ্রামস্থ কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান তাকে এ আনুরোধ জানান।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিশ্বের নানা দেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালবাহী কন্টেইনার বন্দরের ইয়ার্ড থেকে খালাস করতে পোশাক মালিকদের পূর্বে সময় লাগতো ২ দিন। বর্তমানে বেসরকারি আইসিডিগুলো থেকে সেই কন্টেইনার খালাস করতে সময় লাগছে ৬ থেকে ৭ দিন। পণ্য খালাসের বিলম্বের কারণে পোশাক উদ্যোক্তাদেরকে আর্থিক মাশুল দিতে হচ্ছে। আবার বেসরকারি আইসিডি’তে প্রতি কন্টেইনারের জন্য যে পরিমাণ অর্থ আদায় করা হচ্ছে, তার বন্দরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। পোশাক শিল্প যখন কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামে লিপ্ত, তখন চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য খালাসে এই অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ ও বাড়তি চার্জ আদায় শিল্পের স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আসন্ন মাসগুলোতে পোশাক রফতানি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তারা আশা করছেন। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দরের সামর্থ্য বৃদ্ধির বিষয়ে একটি যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধও তিনি জানান।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম কোভিড-১৯ মহামারিকালীন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম দ্রুততার সাথে সম্পাদনের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাক শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম দ্রুততার সাথে সম্পাদন করছে। সভায় তিনি বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এ’লক্ষ্যে বিজিএমইএ-সহ সকল ষ্টেক-হোল্ডারদের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, পোশাক শিল্পে রফতানি ও আমদানি পণ্যের জাহাজীকরণ নির্বিঘ্নে ও সময়সাশ্রয়ী করার জন্য বিজিএমইএ এর গৃহীত উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে আজকের এ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালকবৃন্দ তানভীর আহমেদ, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, হারুন অর রশিদ, নাভিদুল হক, রাজীব চৌধুরী, মো. ইমরানুর রহমান, মো. এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, তানভির হাবিব, এ.এম. শফিউল করিম (খোকন), মো. হাসান (জ্যাকি), এম, এহসানুল হক, মোহাম্মদ মিরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার), সাবেক ১ম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক ১ম সহ-সভাপতি মঈন উদ্দিন আহমেদ (মিন্টু), সাবেক পরিচালক ও কাস্টমস (সমুদ্র) বিষয়ক বিজিএমইএ এর স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অঞ্জন শেখর দাশ, সাবেক পরিচালক ও কাস্টম (বন্ড) বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান জনাব লিয়াকত আলী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, সচিব মো. ওমর ফারুক, পরিচালক পরিবহন এনামুল করিম, টার্মিনাল ম্যানেজার মো. কুদরত-ই-খুদা মিল্লাত প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।