Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৪০ বছরেও রাস্তা পাকা হয়নি

চরম ভোগান্তিতে শত শত পরিবার

আনোয়ার জাহিদ, ফরিদপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

জেলার সালথা উপজেলার শিহিরপুর গ্রামটিতে প্রায় এক হাজার লোকের বসবাস। এ জন্য অনেকেই বলে এক হাজারীর গ্রাম। এই গ্রামটি থেকে শহরের দূরত্ব প্রায় ৩/৪ কিলোমিটার।
এই গ্রামের শত শত নারী পুরুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি দীর্ঘ ৪০ বছরের অধিক সময় কাঁচা মাটির রাস্তাই আছে। একহজারী গ্রামবাসীর ভাগ্যের কোন উন্নয়ন জোটেনি। গত ১২ আগস্ট সকালে জনৈক গর্ভবতীকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে পরে যায় রাস্তার কাঁদায়। উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভোগের গ্রামই শিহিরপুর। ভোগান্তিতে রয়েছে শত শত পরিবার।
এই গ্রামে কোন রাস্তা নেই, কালভার্টও নেই। লাশ নিয়ে কবরস্থানে যাওয়ার কোন যাতায়াতের ব্যবস্থা নেই। একজন মুমূর্ষ রোগী অথবা গর্ভবতী নারীকে জরুরিভাবে হাসপাতালে নেয়ার জন্য ভ্যান চলাচলের যোগ্য রাস্তাও নেই। নৌকাও চলে না। দৃশ্যমান হাঁটু পানির কাঁদামাটির রাস্তা। গ্রামের বৃদ্ধা মোমেনা বেগম বলেন, ‘বাবারে শরমের কথা কি কবোরে আমার নাতনিটা পোয়াতি। প্রসব বেদনা ওঠেছে। হাসপাতালে নেওয়ন লাগবো, ভ্যানে করে শহরে নেবোর লাগছে। ভ্যানের চাকা কাঁদায় গাইড়া যাওয়ায় পোয়াতি নাতনিটা কাঁদায় পরে যায়।’
সরেজমিনে দেখা যায়, শিহিরপুর গ্রামের উত্তরপাড়ার রাস্তাটির বেহাল দশা। গ্রামের মানুষ কাঁদা পানির মধ্য দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছে তাদের দৈনন্দিন কাজ-কর্ম। এ যেন কাঁদা পানির সাথে একেবারে মাখামাখি অবস্থা।
কোন পন্য বাজারে নিয়ে যেতে হলে কাধে ঝুঁলিয়ে যেতে হয় দীর্ঘ পথ। আবার বাজার থেকে কোন পণ্য বাড়িতে ঝুলিয়ে আনতে হয়।
এলাকাবাসী জানায়, আগে এখান দিয়ে সরকারি হালট ছিল, তারপর ২ বছর আগে সামান্য মাটি দিয়ে তৈরি করা হয় নামমাত্র রাস্তা। যা বৃষ্টিতে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কাঁদা পানির মধ্য দিয়ে এলাকাবাসী হাটাচলা করায় আক্রান্ত হচ্ছেন নানা পানিবাহিত রোগে।
এলাকার রিয়াজুল মিয়া বলেন, শিহিরপুর যেন পিছিয়ে পড়া একটি অবহেলিত গ্রামের নাম। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৩/৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হলেও উন্নয়নের কোন ছোঁয়াই লাগেনি গ্রামটিতে। শিহিরপুর গ্রামে যাতায়াতের বেশ কয়েকটি রাস্তা থাকলেও একটি বাদে সবই কাঁচা। আর বৃষ্টিতে কাঁচা রাস্তায় চলাফেরা কষ্টকর, সেই সাথে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাও তলিয়ে যায়। আছে একটি মাত্র ইটের তৈরি রাস্তা তাও প্রায় নষ্ট হবার পথে, সব কিছু মিলে সামান্য বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে শিহিরপুরবাসী। এসব কাঁচা সড়কে স্কুল/কলেজগামী শিক্ষার্থীরা চলাচলে চরম কষ্ট ভোগ করতে হয়।
এই বিষয়ে ভাওয়াল ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পরে ঐ গ্রামে বেশ কিছু রাস্তা নির্মাণ করেছি। আরও রাস্তা নির্মানের জন্য উপজেলা এলজিআরডি অফিসে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, আমরা চেষ্টা করবো ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ঐ এলাকার রাস্তার সমস্যা সমাধান করতে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ