পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বঙ্গবন্ধু হত্যার আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের বাংলাদেশ সফর সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে ছিল নানা দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি ১৯৭৪ সালের ৩০ অক্টোবর ১৯ ঘন্টার সফরে বাংলাদেশে আসেন এবং গণভবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দুই ঘন্টাব্যাপী বৈঠক করেন।
হেনরি কিসিঞ্জারের এই সফর সম্পর্কে বিশিষ্ট মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফস্যুলজ লেখেন ‘যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রমতে কিসিঞ্জারের ঢাকা সফরের এক মাসের মধ্যে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসটি কুচক্রী মহলের যোগাযোগ ক্ষেত্রে পরিণত হয়।’
অন্য দিকে তার সফরের কয়েকদিন আগে তাজউদ্দীন আহমদ মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন। আমেরিকান সাংবাদিক ও লেখক বি জেড খসরু’র ইংরেজিতে লেখা ‘বাংলাদেশ মিলিটারি ক্যু এন্ড সিআইএ লিঙ্ক’ গ্রন্থে কিসিঞ্জারের এই সফরকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ মুজিবের সঙ্গে কিসিঞ্জারের এই বৈঠক ছিল খুবই আন্তরিক।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে আলোচনার বিষয় ছিল বৈদেশিক নীতির প্রশ্ন। মুজিবের জোট নিরপেক্ষ নীতির সমর্থকরা এই বৈঠককে দেখলেন সকল বৃহৎ শক্তির সঙ্গে ভালো সর্ম্পক রাখার প্রয়াস হিসাবে। তারা এতে দেখলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি বেশি ঝুঁকে যাওয়াকে কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা হিসাবে। একই সাথে চীনের সঙ্গে সর্ম্পক স্থাপনের অভিপ্রায় হিসাবেও। কিসিঞ্জারের সফরের কয়েকদিন আগে তাজউদ্দীন আহমদকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেয়ার ঘটনাকে এর সঙ্গে জুড়ে দিয়ে অনেকে একে আমেরিকানপন্থী নীতির প্রকাশ হিসেবে দেখেছেন।
অধ্যাপক আবু সাইয়িদের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড ফ্যাক্টস এন্ড ডকুমেন্টস’ গ্রন্থে এ সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও লিফস্যুলজ তার ‘বাংলাদেশ-দ্য আনফিনিশ্ড রিভোলিউশিন’ গ্রন্থেও এই বিষয়ে লিখেছেন। গণভবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা শেষে কিসিঞ্জার অপেক্ষমান সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেন, ‘একটি মানুষের অনুধাবন ক্ষমতা যে এতো ব্যাপক হতে পারে তা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ না হলে তিনি কখনো বুঝতে পারতেন না। জাতির পিতার কাছ থেকে এই অভিজ্ঞতা তার কাছে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।’
এ সময় একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ মুজিবের দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞা যদি এমনই তাহলে আপনি ১৯৭১ সালে বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন কেন? কিসিঞ্জার এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করলে তিন মিনিটের মধ্যেই সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হয়ে যায়।
লিফস্যুলজ আরো লেখেন, যারা তখন কিসিঞ্জারের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত ছিলেন তাদের কাছে তার এই বক্তব্য ছিল এক ধরনের ব্যঙ্গোক্তি মাত্র।
এর আগে ১৯৭৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইর্য়কের ওয়ালডরফ টাওয়ারে শেখ মুজিবের স্যুটে কিসিঞ্জার তার সঙ্গে দেখা করেন। বঙ্গবন্ধু তখন জাতিসংঘে ভাষণ দিতে সেখানে অবস্থান করছিলেন। কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যখন প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে ভাষণ দিতে যান, তখন প্রটোকল অনুযায়ী তাকে সৌজন্যমূলকভাবে ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাংলাদেশ ফরেন মিনিস্ট্রি বার বার অনুরোধ করা সত্তে¡ও শেখ মুজিবের ওয়াশিংটন সফর সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো সুস্পষ্ট আভাস পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষ মুহূর্তে যখন পরিস্কার হয়ে গেলো, যাই হোক না কেনো, শেখ মুজিব ওয়াশিংটনে তার বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের জন্য যাবেনই তখন নিরুপায় হয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট হোয়াইট হাউসে মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক বৈঠকের আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত শীতল। কিসিঞ্জার ওয়াশিংটনে শেখ মুজিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রদান করেননি। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে অবশ্য শেখ মুজিবের সঙ্গে তিনি দেখা করেন ও ছবি তোলেন। লিফস্যুলজ তাই বলেছেন, শেখ মুজিব সম্পর্কে কিসিঞ্জারের, বিশেষিত শব্দগুলোÑ‘এ ম্যান অব ভাস্ট কনসেপশন’ ছিল এক ধরনের কথার কথা।
এর আগে ১৯৭৪ সালের ২৪ জুন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো বাংলাদেশে তিন দিনের সফরে আসেন। তার সফর সঙ্গী ছিলেন সর্বমোট ১০৭ জন। একজন বিদেশী রাষ্ট্র নায়ককে যোগ্য সম্মান প্রদর্শনের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও ভুট্টোর আগমনের দিন বাংলাদেশে পাকবাহিনীর গণহত্যা ও বর্বরতার ভয়াল দিনসমূহের ছবি সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করে।
হেনরী কিসিঞ্জারের ঢাকা আগমন ছাড়াও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পূর্ব পর্যন্ত এক বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক ঘটনার মধ্যে কয়েকটি বিশেষ ঘটনা ছিল দক্ষিণ ভিয়েতনামের বিপ্ল¬বী সরকারকে স্বীকৃতি দান ও তার রাষ্ট্রপ্রধানকে বাংলাদেশে লালগালিচা সংবর্ধনা, ১৯৭৪ সালের প্রচন্ড বন্যা ও বন্যা উদ্ভুত দুর্ভিক্ষ, খোন্দকার মোশতাকের ইরান সফর ইত্যাদি। এর সবকিছুই বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে সম্পর্কিত বলে অনেকে মনে করেন।
এদিকে আগস্ট মাস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন। গতকাল যুবলীগের উদ্যোগে রাজধানীর শনির আখড়া দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ৬২ নং ওয়ার্ড পাঁচ শতাধিক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা-৫ আসনের এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিনের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি মাইনুউদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, যুবলীগের উপ-তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, কার্যনির্বাহী সদস্য মুক্তার হোসেন কামাল, আসাদুজ্জামান আজম, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেন টুটুল, সৈয়দ আহম্মেদ, মোরসালিন আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সরোয়ার হোসেন বাবু, ৬২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।