Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কারাগারে থেকে পরিকল্পনা

জিপিএস বিকল করে শতাধিক গাড়ি চুরি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৫ এএম

মুহ‚র্তেই যে কোনো গাড়ির লক ভাঙা কিংবা বিকল্প চাবি ব্যবহার করে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চুরি করত একটি চক্র। এমনকি গাড়ি শনাক্তের জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইসও বিকল করে গাড়ি নিয়ে পালাতেন তারা। এরপর গাড়ির মালিককে ফোন করে অর্থ আদায় কিংবা গাড়ি বিক্রি করে দেয় চক্রটি। চক্রের পাঁচ সদস্যের মধ্যে তিন সদস্য কারাগারে থেকে গাড়ি চুরির পরিকল্পনা করে। এরপর কারাগার থেকে বেরিয়ে তারা গাড়ি চুরি শুরু করেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গাড়ি চুরি চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।
র‌্যাব জানায়, গত তিন বছরে এ চক্রের সদস্যরা শতাধিক গাড়ি চুরি করেছেন। গ্রেফতার এড়াতে চক্রটি বাটন মোবাইল ব্যবহার করতেন। এছাড়া একটি মোবাইল তারা পাঁচদিনের বেশি ব্যবহার করতেন না এবং রাতে ঘুমানোর সময় তাদের থেকে মোবাইলগুলো এক কিলোমিটার দূরে রেখে ঘুমাতেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. সোহেল, মো. সাগর, মো. সাকিব হোসেন, মো. হাসান ও মো. কামরুজ্জামান। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি পিকআপ, সাতটি টায়ার রিং, দুটি টায়ার, একটি টুলস বক্স, একটি চাবির ছড়া ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গতকাল বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, আটক সংঘবদ্ধ চক্রটি পরস্পরের যোগসাজশে তিন বছর ধরে রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিনি পিকআপ চুরি করে আসছে। গ্রেফতারকৃত সোহেল ও সাগর ঢাকার একটি হাইস্কুল ও নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজে পড়াশোনা করতেন। তারা সম্পর্কে আপন ভাই। তারা উভয়ই মাদকাসক্ত। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ও মাদকের টাকা জোগাড় করতেই গাড়ি চুরি শুরু করেন। বিশেষ করে সোহেলের গাড়ি চালানোর দক্ষতা থাকায় পিকআপ গাড়ির লক ভাঙা ও যেকোনো চাবি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করার বিষয়ে তিনি অভিজ্ঞ। এছাড়া গাড়িতে থাকা ট্র্যাকিং ডিভাইস দ্রæত শনাক্ত করে অকেজো করে দিতে সক্ষম সাগর।
তিনি বলেন, সোহেল ও সাগর গত বছর গাড়ি চুরি মামলায় কুমিল্লা কারাগারে ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় তাদের সঙ্গে মাদক মামলায় গ্রেফতার সাকিবের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তারা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে হাসান ও কামরুজ্জামানকে নিয়ে গাড়ি চুরির চক্র গড়ে তোলেন। পার্কিংয়ে থাকা পিকআপই তারা বেশি চুরি করতেন। ড্রাইভার বা মালিকের অনুপস্থিতিতে সুবিধা মতো সময়ে বিশেষ কৌশলে গাড়ির লক ভেঙে ও বিশেষ ধরনের মাস্টার চাবি দিয়ে স্টার্ট করে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেতেন।
এছাড়া মাদকসেবী চালকের সঙ্গে সখ্য তৈরি করে পিকআপ ভ্যান চুরি করতে নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করতেন। এজন্য গাড়ি চুরি করে মালিকের কাছ থেকে আদায় করা টাকার একটি অংশ চালককে দিতেন তারা। এর বাইরে চালকদের বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে পিকআপ নিয়ে পালিয়ে যেতেন। চোরাই গাড়ির মালিককে ফোন দিয়ে গাড়ি ফিরিয়ে দেয়ার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করতেন। এর বাইরে চোরাই গাড়ির রঙ পরিবর্তন করে ভুয়া নম্বরপ্লেট লাগিয়ে কম দামে সেগুলো বিক্রি করতেন। এই দুই প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হলে গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করতেন তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ