বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীর ফুলচাষীরা ভাল নেই। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বার বার লকডাউন এর কারণে হারাতে বসেছে এ ফুলচাষ। বর্তমান পরিস্থিতিতে ফুল বাহিরে পাঠাতে না পারায় বাধ্য হয়ে কম দামে ফুল বিক্রি করছেন। সঠিক মূল্যে বিক্রয় না হওয়ায় চাষীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। দিন দিন তারা হতাশ হয়ে পড়ছে। জীবিকার তাগিদে ভিন্ন পেশার কথা চিন্তা করছে অনেকেই।
ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালী গ্রামের ফুলচাষী মো: মোস্তফা হোসেন বলেন, ৬ বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করেছিলাম। ফুল বিক্রয় হচ্ছে না, যার কারণে ফুলে টিটমেন্ট দেওয়ার মত টাকা নই। ফলে ৬ বিঘা ধরে ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। যেখানে গোলাপ ১০০ ফুলের দাম ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হয়ে থাকে। বর্তমানে সেখানে গোলাপ ১০০ ফুলের দাম ২০ থেকে ১৫০ টাকা। অন্য সময় গরু-ছাগলের খাদ্য হিসাবে ফুল জোগান দেওয়া হত। কিন্তু বিক্রি না হবার ফলে এতো বেশী ফুল যে গরু-ছাগলেও খাচ্ছে না। দাম না থাকার কারণে ফুল তোল বন্ধ। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে ফোটা ফুল।
ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারার গ্রামের মো: শরিফুল গাজী বলেন, আমাদের বংশের সকলে ফুল চাষের সাথে জড়িত। করোনা সংক্রমণের কারণে ফুল বেঁচা বন্ধ। লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে জারবেরা ফুল চাষে জন্য শেড তৈরী করা হয়েছে। ফুলের দাম না পাওয়ার কারণে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বিপদে আছি। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে শেড নষ্ট হয়ে গেছে। টাকা আভাবে মেরামত করতে পারিনি, তাই শেড উঠিয়ে ধান চাষ শুরু করেছি। যদি অবস্থা ভাল হয় তবে আবার ফুল চাষ করবো।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি সূত্র মতে, যশোরের ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলার ৭৫টি গ্রামের প্রায় ৬ হাজার ফুলচাষী রয়েছে। শত শত হেক্টর জমিতে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, ডেইজ জিপসি, ডালিয়া, গ্লাডিওলাস, কসমস ও চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ হয়। প্রতিদিন গদখালীর বাজারে ফুলচাষীরা ফুল বিক্রয় করতে আসে। পানিসারা-গদখালী গ্রামগুলোর বিভিন্ন স্থানে ছোট্ট ছোট্ট ফুলের দোকান রয়েছে। যেখানে খুচরা ও পাইকারী ফুল বিক্রয় হয়।
গদখালী বাজারের ফুল বিক্রেতা মো: আনারুল ইসলাম জানান, গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে ফুল বিক্রায় হচ্ছে না। দোকানে ফুল অনলে বেশী ভাগ সময় নষ্ট হচ্ছে। কোনো দাম নেই ফুলের, যার কাছ থেকে যা নিয়ে পারচ্ছি।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি জনাব মো: আব্দুর রহিম বলেন, যশোর থেকে দেশের চাহিদার শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ফুল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। করোনার কারনে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফুল বিক্রির সুযোগ না থাকায় প্রায় সব মিলে যশোর অঞ্চলে ৩০০ কোটি টাকার ফুল নষ্ট হয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৩০০ জন ফুলচাষীকে প্রায় ২ কোটি টাকার মতো লোন দেয়া হয়েছে। করোনার কারনে ফুলচাষীদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা অনেক কষ্ট। ফুলচাষীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। উৎপাদন ধরে রাখতে পারছেনা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক অনুষ্ঠানের অনুমতি হলে ফুল বিক্রি শুরু হবে। একই সঙ্গে ফুলচাষীদের প্রণোদনা বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান কৃষক এই নেতা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।