বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গণটিকাদান কেন্দ্রগুলো চরম অব্যবস্থাপনার আর্বতে চলছে তৃতীয় ও শেষ দিনে সিলেট নগরীতে। ঠেলাঠেলি, গা ঘেষাঘেষি, স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কেন্দ্রগুলোতে। এসব কেন্দ্রে তেমন তৎপরতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না স্বেচ্ছাসেবকদের। আবার শত শত মানুষ কেন্দ্রে এলেও সবাইকে টিকা দিতে পারছেন না সিসিকের টিকাকর্মীরা তাদের। কারণ হিসেবে টিকার সংকট বলা হচ্ছে। ফলে অসংখ্য মানুষ দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ফিরে যাচ্ছেন ব্যর্থ মনোরথে। এছাড়া ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকা মানুষদের মানসিক পরিস্থিতির প্রত্ওি খেয়াল নেই, জনগনের সেবক তথা জনপ্রতিনিধিদের। কেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘ লাইনে কোন পরিবেশে থাকবে, পানির পিপাসা নিবারণের কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে দীর্ঘক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের, বিষে করে বয়োবৃদ্ধদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া রোদ বৃষ্টির এক অসহিঞ্চু পরিবেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে সকলকে। সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ২৭টি ওয়ার্ডে তিনটি করে ৮১টি টিকাকেন্দ্র রয়েছে। গত শনিবার থেকে আজ সোমবার দুপুর অবধি সিসিকের প্রায় অর্ধশত টিকাকেন্দ্র ঘুরে অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করতে কোনো তৎপরতাই ছিল না সিসিকের দায়িত্বশীলদের। টিকা নিতে কেন্দ্রে আসা সাধারণ মানুষকে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা ও মাস্ক পরিধান করাসহ স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার বিষয়টি বলার মতো কাউকে কেন্দ্রগুলোতে দেখা যায়নি। প্রতিটি কেন্দ্রেই শত শত মানুষ গা ঘেষাঘেষি করে দাঁড়িয়েছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। অসংখ্য মানুষের মুখে মাস্কও ছিল না। সিসিকের স্বেচ্ছাসেবকরা শুরুতে কিছুটা তৎপরতা দেখালেও পরে তাদের নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে। শুধু টিকাকেন্দ্রের প্রবেশমুখে তাদেরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এদিকে, টিকা নিতে কেন্দ্রগুলোতে শত শত মানুষ জড়ো হয়েছেন। পূর্ব ঘোষিত টিকাদান কর্মসূচি অংশ হিসেবে আজ সোমবার (৯ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে নগরের ২৭ ওয়ার্ডের ৮১টি কেন্দ্রে শুরু হয় টিকাদান কার্যক্রম। অনেক কেন্দ্র্রে সকাল থেকেই ভিড় করতে শুরু করেন নগরীর হাজারো মানুষ। টিকা নিতে আসা সোহেল আহমদ বলেন, সকালে টিকা কেন্দ্রে এসেছি। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবকদের নেই কোন ভূমিকা। লাইনে একে অপরের গা ঘেঁষে দাড়িয়েছেন। এছাড়া কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা আর অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে তার। আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের বাগবাড়ী এলাকার বর্ণমালা সিটি একাডেমি কেন্দ্রে টিকা নিতে সকাল থেকে মানুষ ভিড় করতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা। এক পর্যায়ে কেন্দ্র ছাড়িয়ে টিকা গ্রহীতার লাইন প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে পড়ে। নগরীর ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমের চৌকিদেখিস্থ কার্যালয়ে টিকা গ্রহণে আগ্রহীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনও বালাই ছিল না উপস্থিত টিকা গ্রহহীতাদের মধ্যে। একই চিত্র সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার ২৭ ওয়ার্ডে স্থাপিত ৮১টি কেন্দ্রের অধিকাংশ কেন্দ্রে। তবে গণটিকাদান কর্মসূচিতে মানুষের ব্যাপক সাড়া ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন বর্তমানে এমন ভিড় সামলে সবাইকে টিকা দিতে না পারলেও দ্রুত সকলের টিকার ব্যবস্থা করাটা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ব্যবস্থাপনায় কোনো ত্রুটি নেই আমাদের। তবে মানুষের চেয়ে টিকা কম। সরকারের নির্দেশনা মতে প্রতিটি কেন্দ্রে ২০০ থেকে ২৫০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা। কিন্তু আমরা শনিবার প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০০ জনকে টিকা দিয়েছি। রোববারও ২০০ জনকে দেওয়ার কথা থাকলেও ৩০০ জনকে দিয়ে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। কেননা দ্বিধা সংশয় কাটিয়ে টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। পর্যায়ক্রমে সকলকেই টিকা দেয়া হবে। এদিকে, কেন্দ্রগুলোতে ইচ্ছুক টিকা গ্রহিতাদের প্রতিকূল পরিবেশ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট শাখার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে বড় করে নোটিশ বোর্ড টানানো উচিত ছিল যে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে, মাস্ক না পরলে টিকা দেয়া হবে না। এমনকি মাস্ক না থাকলে কাউকে লাইনে দাঁড়াতে দেয়া হবে না।’ এছাড়া টিকা গ্রহিতাদের লাইনে দাড়ানো সহজীকরণ সহ তাদের সন্তুষ্টির প্রতি খেয়াল রাখা উচিত ছিল জনপ্রতিনিধিদের। কিন্তু সেখানে তাদের অযতœ, জনবান্ধব সেবা প্রদান ব্যর্থ হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।