Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিশোরী বিয়ে করা সমালোচিত শাহীন চেয়ারম্যান এবার পিটালেন স্বাস্থ্য সহকারিকে

বাউফল (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০২১, ৫:১৮ পিএম

সালিস বৈঠকে এক কিশোরীকে বিয়ে করে সমালোচিত সেই ইউপ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার এক স্বাস্থ্য কর্মীকে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় ওই স্বাস্থ্য কর্মী রবিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, শনিবার সারা দেশের মত একযোগে বাউফলের কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে কোভিড-১৯-এর টিকা চলকালিন সময় বেলা ১১টায় দিকে ওই ইপির চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার তার নির্দেশ অনুযায়ি টিকা কার্যক্রম পরিচালনা না করায় মোঃ আল আমিন সিকদার(৪২) নামের এক স্বাস্থ্য সহকারীকে কিল ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে ওই স্বাস্থ্য সহকারী নিচে পরে গেলে তাকে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার লাথি মারেন। মোঃ আল আমিন ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী । তার বাড়ি একই ইউনিয়নের ঝিলনা গ্রামে। আল আমিন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারেক সিকদারের ছেলে। এ সময় চেয়ারম্যান শাহিন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক তাছলিমা বেগমকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন । এ ঘটনার কারণে প্রায় এক ঘন্টা টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ ছিল।

স্বাস্থ্য সহকারী আল আমিন সিকদার বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্র্রেশন করে আমরা কনকদিয়া ইউনিয়নে ৬শ’ জনকে করোনা ভ্যাকসিন দিব। এজন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে কার্যক্রম শুরু করি। চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বেলা ১১টার সময় এসে আমাদেরকে বলেন যারা ভ্যাকসিন নিতে আসছে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি রেখে ভ্যাকসিন দিয়ে দেন। আমি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রশনের কথা বললে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে এলোপাথারি কিল ঘুষি এবং লাথি মারেন। আমি অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে পড়ে যাই। একপর্যায়ে আমার সহকর্মীদের সেবায় আমি সুস্থ হয়ে উঠি। এরপর শুনি তাসলিমা আপা (ইউনিয়ন সহকারি স্বাস্থ্য পরির্দশক) ও ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছেন তিনি।’

সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক তাছলিমা বেগমকে বলেন, ‘চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার যে ভাষায় আমাকে আর ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছে তা মুখে শোভা পায় না।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আমার স্বাস্থ্য কর্মী আল আমিন সিকদার ভ্যাকসিন কার্যক্রম শেষ করে আমাকে ওই দিন রাতে ফোনে জানিয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে সরকারি বিধি অনুযায়ী আইনী ব্যবস্থা নিব।’
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, ‘নিজেদের দোষ ডাকার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। যারা আইডি কার্ড নিয়ে আসবে তারা টিকা পাবে। অথচ এখানে টিকা দিতে এসে স্বাস্থ্য কর্মীরা নিজেদের আতœীয় স্বজনকে টিকা দিচ্ছে। ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় আমি এর প্রতিবাদ করেছি। কাউকে মারধর কিংবা গালাগালি করার অভিযোগ সত্য না। স্বাস্থ্য সহকালী আল আমিন ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক তাছলিমা বেগম দুই জনই বিএনপি করেন । আমার ভাবমূর্তী বিষ্ট করতেই উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছেন।
উল্লেখ যে, গত ২৫জুন সালিস বৈঠকে এক কিশোরীকে জোড় পূর্বক বিয়ে করে ব্যাপক সমালোচিত হন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। এর আগে তিনি সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে মারধর করে ব্যাপক সমালোচিত হন। শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক । তিনি ওই ইউপি থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে পর পর দুই বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ