দেশে করোনার মৃত্যুর লাগাম টেনে ধরাই যাচ্ছে না। প্রতিদিন মৃত্যু ও সংক্রমণ বেড়েই চলছে। অদৃশ্য এই করোনার ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট (ভারতীয়) সংক্রমণ সারাদেশে বেড়েই চলছে। প্রতিদিনই প্রায় আড়াইশ’র কাছাকাছি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। চিকিৎসার আশায় ঢাকায় এসেও সেবা মিলছে না অনেকের।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরো ২৪৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের নিয়ে দেশে করোনায় এখন পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ২ আগস্ট ২১ হাজার এবং গত ২৮ জুলাই মৃত্যু ২০ হাজার ছাড়ায়। সে হিসেবে সবশেষ চার দিনে এক হাজার মৃত্যু হলো। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৬০৬ জন। তাদের নিয়ে দেশে সরকারি হিসেবে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেন ১৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৬০ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৪৮ জনের সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৭৫ জন। আর শনাক্তদের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া ১২ হাজার ৬০৬ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছেন ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগ শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৩৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, একদিনে অদৃশ্য ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫ হাজার ৪৯৪ জন। তাদের নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হলেন ১১ লাখ ৭২ হাজার ৪৩৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ৪৮ হাজার ৮০৭টি। আর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৮ হাজার ১৫টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৩টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৫৯ লাখ ৩২ হাজার ৩২২টি আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ২১ লাখ ১১ হাজার ৩৭১টি নমুনা।

গত একদিনে করোনা রোগী শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ৮১ শতাংশ; শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬৬ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৪৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩৮ জন আর নারী ১১০ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে পুরুষ মারা গেলেন ১৪ হাজার ৮২২ জন আর নারী মারা গেছেন ৭ হাজার ৩২৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, বয়স বিবেচনায় তাদের মধ্যে ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৭২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৯ জন আর ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭ জন।

এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৬৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৬ জন, খুলনা বিভাগে ৩৬ জন, বরিশাল বিভাগে ২০ জন, সিলেট বিভাগে ১৬ জন, রংপুর বিভাগে ৮ জন, ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৮ জন। ২৪৮ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২০৯ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৩৩ জন আর বাড়িতে মারা গেছেন ৬ জন।