Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলছে দূরপাল্লার বাস

বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় গাজীপুরে আটক ৪০টি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

কঠোর বিধিনিষেধ অমান্য করে গত কয়েকদিন ধরেই মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলছে। দিনে নয়, রাতের অন্ধকারে বাসগুলো যাত্রী নিয়ে রাজধানীর টার্মিনালের বাইরে থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, ট্রাক, পিকআপভ্যান, সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইকে করেও মানুষ ঢাকার বাইরে যাচ্ছে। এদিকে, বিধিনিষেধের মধ্যেই ঈদের পর ১৫তম দিনে গতকালও হাজার হাজার মানুষ রাজধানীতে এসেছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং বাংলাবাজার-শিমুলিয়া ফেরিঘাটে গতকাল সকাল থেকে ঢাকামুখি মানুষের চাপ দেখা গেছে। সেই সাথে শত শত গাড়ি ঘাটগুলোতে পারাপারের অপেক্ষায় ছিল।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার কঠোর বিধিনিষেধ অমান্য করে গাজীপুরে যাত্রী পরিবহন করায় দূরপাল্লার কমপক্ষে ৪০টি বাস আটক করে হাইওয়ে পুলিশ। এসব বাস আটক করে নগরের কোনাবাড়ী এবং চন্দ্রা এলাকায় মহাসড়কের পাশে রাখা হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকরা জানান, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে দূরপাল্লার বাস। পুলিশকে ম্যানেজ করেই এসব বাস চলাচল করছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই ঢাকা থেকে যাত্রী পরিবহন করছে বেশ কিছু দূরপাল্লার বাস। রাতে টার্মিনালের কাছাকাছি এলাকা থেকে দূরপাল্লার বাসগুলো যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। এ খবর যাত্রীরা আগে থেকেই জানেন। এর আগে ফেসবুকে যাত্রীদের রাতের ভ্রমণ সম্পর্কে অবহিত করা হয়। সেখানে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বরও দেয়া থাকে। জানা গেছে, গাবতলী বাস টার্মিনালের অদূরে আমিনবাজার ব্রিজের কাছে একটি পেট্রোলপাম্প থেকে রাতে দূরপাল্লার চলাচল করে। একজন যাত্রী জানান, বাসগুলো এক সাথে দাঁড়িয়ে থাকে না। একটা বাস যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাওয়ার পর আরেকটা বাস এসে দাঁড়ায়। বাসগুলো দাঁড়িয়ে থাকার সময় বাসের ভিতরের লাইট বন্ধ রাখা হয়। এজন্য দূর থেকে বোঝা যায় না। ঢাকা থেকে দুদিন আগে দিনাজপুর গেছেন এমন একজন যাত্রী জানান, দেড় হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে তিনি দিনাজপুরে গেছেন। বাসটি ছেড়েছে রাত ১১টার পর। দিনাজপুরে পৌঁছে ভোরে। রাতে পুলিশ বাসটিকে থামিয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন ,বঙ্গবন্ধু সেতুর আগে একবার থামিয়েছিল। বাসের কন্ডাক্টর বাস থেকে নেমে পুলিশের সাথে কথা বলার পর বাসটি আবার চলতে শুরু করে। এরপর আর কোথাও বাসটিকে কেউ থামায় নি।
একইভাবে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর বাস স্টপেজের পাশে পেট্রোল পাম্প থেকে প্রতিদিনই বাস ও মাইক্রোবাস শত শত যাত্রী পরিবহন করে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে বাস কাউন্টারগুলোর লোকজনই দূরপাল্লার বাস নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানকার একজন জানান, রাতে তো বটেই দিনেও এখান থেকে যাত্রী নিয়ে মিনিবাস ছেড়ে যাচ্ছে। আর মাইক্রোবাস দিন-রাত মিলে ছাড়ে বেশ কয়েকটি। বেশিরভাগ বাস ও মাইক্রোবাসই যায় উত্তরাঞ্চলে। আব্দুল্লাহপুর থেকে রংপুর গেছেন এমন একজন যাত্রী বলেন, দেড় হাজার টাকা ভাড়ায় তিনি বাসে চড়ে রংপুর গেছেন। রাত ১টায় বাসটি ছেড়েছে। চলার পথে বাসটি কোনো বাধার সম্মুখিন হয়নি। স্থানীয়রা জানান, আব্দুল্লাহপুরে মহাখালী টার্মিনালের সাব স্টপেজ আছে। সেখান থেকেই বিধিনিষেধের মধ্যে বাস চলছে কয়েকদিন ধরেই। পরিবহনের লোকজনই পুলিশকে ম্যানেজ করে বাসগুলো চালাচ্ছে। অনেক বেশি ভাড়া দিয়ে যাত্রী পরিবহন করায় তারা লাভবান হচ্ছে। সায়েদাবাদ টার্মিনালের বাস ছাড়ে শনিরআখড়া, রায়েরবাগ ও নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল থেকে।
এদিকে, ১ আগস্ট রোববার থেকে পোশাক কারাখানা খুলে দেয়ার ঘোষণার পর হাজার হাজার যাত্রী ঢাকামুখে রওনা করে। ৩১ জুলাই শনিবার ভোর থেকেই রাজধানীতে ফিরতে শুরু করে হাজার হাজার মানুষ। কঠোর লকডাউনেও মহাসড়ক দিয়ে কর্মস্থলে ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ ব্যক্তিগত যানবাহনে ফিরেন তারা। এরপর দুপুর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দূরপাল্লার বাসও দেদারসে চলাচল করেছে। বাসগুলোতে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গাদাগাদি করে ঢাকা ফিরেন যাত্রীরা। অন্যদিকে, কঠোর বিধিনিষেধ অমান্য করে গাজীপুরে যাত্রী পরিবহন করায় দূরপাল্লার কমপক্ষে ৪০টি বাস আটক করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এসব বাস আটক করে নগরের কোনাবাড়ী এবং চন্দ্রা এলাকায় মহাসড়কের পাশে রাখা হয়েছে।
কোনাবাড়ী হাইওয়ে থানার ওসি মীর গোলাম ফারুক জানান, চলমান লকডাউনে দিনের বেলায় চেকপোস্টে গণপরিবহন চলাচলে কড়াকড়ি থাকলে ও রাতের বেলায় চেকপোস্টে কিছুটা শিথিল থাকে। সেই সুযোগে উত্তরবঙ্গ থেকে বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যাত্রীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার গুণ বেশি ভাড়া নিয়ে এসব বাস চলাচল করছে এমন খবরে হাইওয়ে পুলিশ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা মোড় ও আশেপাশের এলাকায় অভিযান চালায় বৃহস্পতিবার রাতে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে চল্লিশটি বাস আটক করা হয়। তবে যে সব যাত্রী এসব গণপরিবহনে এসেছিলেন তারা বিভিন্ন উপায়ে গন্তব্যে চলে গেছেন।



 

Show all comments
  • রুহুল আমীন যাক্কার ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:৪৩ এএম says : 0
    শুধুই কি ঢাকা? সারা দেশেই চলছে অটোরিকশা - মিনিবাস। আর চলবেইনা কেনো? কি হচ্ছে এই লকডাউন নামক জনদুর্ভোগময় কর্মসূচি দিয়ে? লকডাউন কি করোনা শনাক্ত বা মৃত্যু কমাতে আদৌ কার্যকর? গেল কুরবানি ঈদের পূর্বাপর যে ক'দিন লকডাউন ছিলনা ঐ ক'দিন শনাক্ত ও মৃত্যু কম ছিলো। কিন্তু যেই আবার লকডাউন দেয়া হলো আবারো বাড়তে থাকল করোনা। আমারতো বিশ্বাস লকডাউন না থাকলেও করোনার গতি স্বাভাবিকই থাকবে।জনগণকে দুর্ভোগে ফেলা এবং শিক্ষা ও অর্থনীতিকে পঙ্গু করার কর্মসূচি দেয়া কতটুকু সমীচিন হয়েছে সময়ই তা বলে দিবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Fuad Hasanul Banna ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:৫২ এএম says : 0
    How possible!!
    Total Reply(0) Reply
  • MD Mizanur Rahman ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:৫৩ এএম says : 0
    লকডাউন মানেই হলো পুলিশের পকেট ভারি হওয়া ,লকডাউন গরীবের পেটে লাথী মারা । R মন্ত্রীদের এসি রুমে বসে ,বসে লকডাউন দেওয়া ।ওরা কখনো গরীবের কথা চিন্তা করে না ।গরীবের চিন্তা করবে কি ভাবে ,তারা তো মাস গেলেই বেতন পায় ,এবং তাদের ব্যাংকে টাকা দেশ বিদেশ সব জায়গায় টাকার খনি এক বছর দশ বছর লকডাউন দিলেও ,ওদের কোন যায় আসে না যা মরবে ছোট খাটো দোকানদার আর মরবে বাসের কর্ম চারি কর্মকর্তা গুলো । এই হচ্ছে লকডাউন বাংলাদেশের অবস্তা ।
    Total Reply(0) Reply
  • Ruhulamin Bhuiyan ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:৫৩ এএম says : 0
    লকডাউন অমান্যকারীকে গুলি করে হত্যা করলেও মানুষ লকডাউন মেনে নিবে না।অল্পসংখ্যক সরকারী কর্মকর্তাকর্মচারীব্যতীত।উপায় একটাই যতদ্রুত ভ্যাকসিন্যাশান সম্পুর্ন করা যায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Saiful Islam Si ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:৫৩ এএম says : 0
    বাস ছাড়া তো সকল গাড়ীই চলছে,,সেটা নিয়ে মাথা ব্যাথা নাই।বাসের সাথে যারা জড়িত তাদের তো পরিবার নাই,,সেটা তো ভাবেননা কেউ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Kamal Uddin ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:৫৪ এএম says : 0
    করোনা কি বাসের ভেতর থাকে নাকি। মানুষ বাস থেকে নেমে ঢাকা যাচ্ছে আর বাস গুলো কে ফিরিয়ে দিচ্ছে। বিষয় টা কি হলো।
    Total Reply(0) Reply
  • Sonio Noon ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:৫৪ এএম says : 0
    মানুষের জীবন দশা এখন এমন - ভাতের আশায় মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে ঢাকায় দৌড়াদৌড়ি করছে মানুষ আহারে
    Total Reply(0) Reply
  • Rubel parvej ৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ পিএম says : 0
    শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্র ছাত্রী আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গরীব মানুষ গুলো আজ না খেয়ে। আচ্ছা সব বুঝতে পেরেছে মানুষ আজ Lockdown কিসের জন্য দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এইবার ঘুম থেকে উঠো না হলে এটাই শেষ ঘুমে পরিণত হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ