Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে হাজার পরিবার

পুনর্বাসনের দাবি স্থানীয়দের

কবির হোসেন, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৩ এএম

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ১ হাজার পরিবার। ভারী বর্ষণ হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা। তবে ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলো বলছেন, বর্ষণ শুরু হলেই পাহাড়ে উঁচু ও ঢালুতে বসবাসকারীদের ঝুঁকিমুক্ত করতে প্রশাসনের পক্ষ হতে ব্যাপক প্রচারণা করতে দেখা যায়। বর্ষা শেষ হলে আর কোনো খবর নেয়া হয় না। পাহাড়ে মৃত্যু ঝুঁকিনিয়ে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ এবং স্থায়ী পুনর্বাসনের উদ্যোগের জন্য বারবার প্রশাসনের নিকট অনুরোধ করা হলেও তা এক প্রকার প্রহসনে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৪নম্বর কাপ্তাই ইউনিয়নের লগগেট ও ঢাকাইয়া কলোনিতে ৫০০ পরিবার ঝুঁকিতে বসবাস করছে। এছাড়া মুরালীপাড়া ওয়াগ্গা, বারঘোনা, কয়লার ডিপো, মিতিঙ্গাছড়ি ও রাইখালীর বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের ঢালুতে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে আরো ৫ শতাধিক পরিবার। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলে অতি বর্ষণের ফলে মাটি চাপা পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে এসব এলাকায়। ৪৭ বছর ধরে বসবাসকারী সত্তরোর্ধ সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সাবেক নতুনবাজার ইউপি সদস্য আবু তাহের ও ভিটা হারা সবিবুর নাহার বলেন, সব হারিয়ে আমরা পাহাড়ের পাদদেশে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছি। এতে যেকোনো সময় পাহার ধসে মৃত্যু হতে পারে। আমাদের প্রতি বছর এভাবে আশ্রয় কেন্দ্রে না নিয়ে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে কাপ্তাই ৪নম্বর ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, কাপ্তাইয়ে ঢাকাইয়া কলোনি ও লগগেট এলাকায় অনেক বছর ধরে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার পাহাড়ের পাদদেশে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। সম্প্রতি এসব এলাকায় পাহাড় ধসে বেশ হতাহত হয়েছে। মৃত্যু জেনেও কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে চায় না। তারা চায় স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। আমরাও এ দাবি জানিয়ে আসছি প্রশাসনের নিকট।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান বলেন, তারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ের ঢালুতে বসবাস করছে। আমরা জেলা প্রশাসকের পক্ষ হতে বারবার নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আসার বিষয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করলেও কেউ আসতে চাই না। তবে ঝুঁকিপূর্ণদের নিরাপদে আনতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কাপ্তাইয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের পুর্নবাসনের জন্য মাসিক সভায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। সব বড় সমস্য হল কাপ্তাইয়ে কোন খাস ভ‚মি না থাকায়।
উল্লেখ্য, চলতি জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে কাপ্তাই ঢাকাইয়া কলোনির কয়েকটি বসতঘর ভারী বর্ষণে পার্শ্ববর্তী কর্ণফুলী নদীতে তলিয়ে গেছে। সম্প্রতি ২০১৭ সালে পাহাড় ধসে কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ