Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দূষণে মরছে গড়াই

সাইদুর রহমান, মাগুরা থেকে | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ এএম

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে গড়াই নদীতে। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, বাড়ছে দূষণ। যার ফলে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন রোগব্যাধি। মাগুরা ও ঝিনাইদহ এই দুই জেলার শেষ প্রান্তে গড়াই নদীর তীরে অবস্থিত লাঙ্গলবাঁধ বাজার। এ বাজারের গোশত পট্টি, পোল্ট্রি মুরগি দোকান ও কাঁচা বাজারের যাবতীয় বর্জ্য প্রতিদিন এই নদী ও পাড়ে ফেলা হয়। ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলছে পরিছন্নকর্মী ও বাজারের ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, বাজারের বিভিন্ন জায়গায় বর্জ্য ফেলায় এখন এলাকা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এছাড়া গ্রামের বাসাবাড়ির, প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য সংগ্রহ করে তা নদী ও পাড়ে ফেলছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। এতে করে পরিবেশ-প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে। তেমনি দুর্ভোগে পড়েছে পুরো এলাকাবাসী। উৎকট দুর্গন্ধ সহ্য করে পথ চলতে হচ্ছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পথচারীদের। এখানে আবর্জনা ফেলার কোনো নিদৃষ্ট স্থান না থাকায় গড়াই নদীই পরিণত হয়েছে বর্জ্য ফেলার স্থান। বৃহত্তম এ বাজারের বর্জ্য নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে নদীতে বর্জ্য ফেলায় সেখানে তৈরি হচ্ছে আবর্জনার স্তূপ। এতে করে দূষিত হচ্ছে এলাকা, ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ প্রকৃতি।
বাজারের ভাই ভাই কম্পিউটার অ্যান্ড ডিজিটাল স্টুডিও মালিক রহমত আলি জানান, নিদিষ্ট স্থানে এসব ময়লা আবর্জনা ফেলা উচিত। তাহলে নদী রক্ষা পাবে। বীর মুক্তিযোদ্ধ আব্দুল গফুর মন্ডল জানান, বাজারের বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ মানুষ নদীর মধ্যে এসব ময়লা আবর্জনা ফেলছে। এতে করে নদী দূষিত হয়ে নাব্যতা হারানোর পাশাপাশি বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের। নানাভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। যেন দেখার কেউ নেই।
বাজারের বনিক সমিতির উপদেষ্টা চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্যা জানান, নিদিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় নদীর মধ্যে ময়লা আবর্জনা ফেলায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সে সাথে পশুর হাটের স্থানও ভরে আছে আবর্জনায়। পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাস্টবিন না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ পথচারীরা। এছাড়াও বাজারের নির্ধারিত জায়গা না থাকার কারণে যত্রতত্র হাট বাজার বসাতে হচ্ছে। চাঁদ আলী মেম্বার জানান, বাজারের অধিকাংশ ময়লা আবর্জনা নিয়ে এসে গড়াই নদীর মধ্যে খোলা জায়গায় ফেলা হয়। এখান থেকেই সৃষ্টি হয় উৎকট দুর্গন্ধ। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাতায়াতকারীরা। প্রায় সময়ই দেখা যায় যাত্রীরা নাকে মুখে রুমাল চেপে ওই সড়ক দিয়ে গড়াই নদীর লাঙ্গলবাঁধ নাদুড়িয়া খেয়া ঘাট পার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, বাজারটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে, ময়লা আবর্জনা ফেলে নদী ভরাট করা যাবে না। অপরদিকে শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন জানান, কোনোভাবেই নদীতে ময়লা আবর্জনা ফেলে নদী ভরাট করা যাবে না। খুব দ্রুত ময়লা আবর্জনা নিদৃষ্ট স্থানে ফেলার জন্য বাজার কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হবে। তারপরও যদি ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলা হয় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ