বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
‘আমার শরীরে এক ফোঁটা রক্ত থাকতে আমি বিচার চাইবো, বিচারের দাবি থেকে একচুল পরিামাণও সরবোনা,। ওরা ছেলে হত্যার বিনিময়ে আমার মেয়েদের চাকরি দিতে চায়, আমার চাকরির দরকার নাই। ছেলের লাশ উপহার দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু তার হত্যার বিচার দেয়নি’ কান্না জড়িত কন্ঠে মোবাইলের ওপাশ থেকে কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হওয়া খালিদ সাইফুল্লাহর মা ফাতেমা বেগম।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন বিবাদমান দুই পক্ষের রাজনীতির রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ হত্যাকান্ডের ৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দোষীদের কাউকেই শাস্তির আওয়তায় আনতে পারেনি। যার ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ নিহতের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের শোকবহ আগষ্টের প্রথম প্রহরে (১ আগস্ট মধ্যরাতে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের পর আধিপত্য বিস্তার ও হল দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিপনন বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী খালিদ সাইফুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। হত্যাকান্ডের পরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি রোধে ১ আগস্ট সকালে সিন্ডিকেটের ৬২তম জরুরী সভা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এবং পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ৫৫ দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়।
ঘটনার ২ মাস ২৬ দিন পর গত ২৬ অক্টোবর প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। টেন্ডারবাজি, ক্যাম্পাসে অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরে চলে আসা দ্বন্দ্বের কারনে সংঘর্ষের ঘটনা সংগঠিত হয়েছে প্রতিবেদনে এমন উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গিয়ে ছিল। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও তৎকালীন প্রক্টর মো: আইনুল হক বলেন, “আমরা তদন্ত কমিটির সদস্যরা তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি তবে তদন্ত প্রতিবেদনটি আলোর মুখ দেখেনি। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওয়তায় এনে শাস্তি নিশ্চত করা এখন সময়ের দাবি ”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘মামলাটি বিচারধীন অবস্থায় থাকায় আমি বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না ,তবে আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে আমরা সহযোগিতা করছি।
খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিন্টু দত্ত ইনকিলাব’কে বলেন , বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে মামলাটি পি বি আই এর কাছে আসে। আমরা মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব চার্জশীট জমা দিবো। তবে এটা নিশ্চিত যে এ ধরনের মাললায় আসামি সংখ্যায় কমার সম্ভবনা কম থাকে, তবে তদন্ত এবং প্রমাণাদির সাপেক্ষে বাড়তে পারে। এই মামলায় একজনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নথিভুক্ত আছে।
উল্লেখ্য, হত্যার ঘটনায় ঘটনার দিনই ১০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শেষে মামলাটির চার্জশীটও জমা দেয় কুমিল্লা পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখা। হত্যাকান্ডের ৫দিন পর ৬ আগস্ট মামলার আসামী ও মার্কেটিং ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী বিপ্লব চন্দ্র দাসকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিবি। বিপ্লব হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তবে সে এখন জামিনে মুক্ত আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।