Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কীর্তিনাশার ভাঙনে ৫০০ মিটার রাস্তা বিলীন

শরীয়তপুর-চন্দ্রপুর-শিবচর সড়ক

মো. হাবিবুর রহমান হাবীব, শরীয়তপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ এএম

পদ্মা নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে শাখা নদীগুলোতেও পানি বেড়ে স্রোত সৃষ্টি হয়েছে। শরীয়তপুর সদর উপজেলায় শরীয়তপুর-চন্দ্রপুর-শিবচর সড়কে পদ্মার শাখা নদী কীর্তিনাশার ভাঙন তীব্র হচ্ছে। ভাঙনের কারণে সড়কের হাজরাসার ও চরপাতানিধি এলাকা দিয়ে চার বছর আগেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গত এক সপ্তাহে সড়কের কিছু অংশ ধসে যাওয়ায় পায়ে হেঁটে চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুর সদর থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য ২০০০ সালে শরীয়তপুর-চন্দ্রপুর-শিবচর সড়কটি পাকা করা হয়। শরীয়তপুর পৌর এলাকার পালং বাজার থেকে চন্দ্রপুর বাজার হয়ে সন্তোষপুর পযর্ন্ত ১৫ কি.মি. সড়কটি শিবচর-মাদারীপুরের শিলারচর এলাকায় গিয়ে মিলেছে। ওই সড়কের সদর উপজেলার পৌরসভায় রাজগঞ্জ বালুর মাঠ হতে আড়িগাঁও পর্যন্ত ২ কি.মি. এলাকা কীর্তিনাশা নদীর তীরে অবস্থিত। এ সড়ক দিয়ে সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মানুষ জেলা সদরসহ ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর যাতায়াত করে। ওই সড়কের হাজরাসার ও চরপাতানিধি এলাকার পাঁচশ’ মিটার অংশ ইতোমধ্যে কীর্তিনাশা নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে সড়কের ওই অংশের দুইশ’ মিটার ভাঙনের কবলে পরে। তখন সড়কটি দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কারণে মোটরসাইকেল ও রিকশা চলাচল করতে পারত। ভাঙন রোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় গত চার বছরে সড়কের পাঁচশ’ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েকদিনে সড়কের আরো ৫০ মিটার অংশ কীর্তিনাশা নদীতে বিলিন হয়ে যায়। যার ফলে এখন সড়কটি দিয়ে পায়ে হেঁটেও মানুষ চলাচল করতে পারছে না।
পাউবো সূত্র জানায়, কীর্তিনাশা নদীটি নড়িয়ার পদ্মা নদী থেকে মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদীতে মিলিত হয়েছে। ৩০ কি.মি. নদীটির বিভিন্নস্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর বিভিন্নস্থানে ১৩ কি.মি. ভাঙন রোধ করার জন্য গত বছর শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৩১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। শরীয়তপুর পৌরসভার চরপাতানিধি এলাকার বাসিন্দা মোকসেদ মল্লিকের গত চার বছরে তার ১০ শতাংশ জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। তারা বাকি ৮ শতাংশ জমি ভাঙনের হুমকিতে পরেছে।
মোকসেদ মল্লিক বলেন, চার বছর ধরে ভাঙছে। কিন্তু কেউ ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেলে কোথায় আশ্রয় নেব। সদর উপজেলার ছাব্বিসরশি গ্রামের এমদাদ হোসেন জেলা শহরের একটি টেইলারিং দোকানের শ্রমিক। বাড়ি থেকে প্রতিদিন দোকানে যাতায়াতে শরীয়তপুর-চন্দ্রপুর-শিবচর সড়ক ব্যবহার করতে হয় তাকে। এমদাদ হোসেন বলেন, চার বছর ধরে সড়কটি ভাঙছে। এটা রক্ষা করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। ঝুঁকি নিয়ে আমরা ভ্যান-রিকশায় চলাচল করতাম। গত বছরের ভাঙনে তাও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর পায়ে হেঁটে ওই ৫০০ মিটার অতিক্রম করতাম। এখন তাও বন্ধ। আমাদের কি পরিমাণ দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে তা বলে বুঝাতে পারব না।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম আহসান হাবীব বলেন, কীর্তিনাশার যে সকলস্থানে ভাঙন রয়েছে সেখানে বালু ভর্তি ১৮০০ জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর নদীটির ১২ কি.মি. অংশে ভাঙন রোধের স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া নেয়া হবে। ৩১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। শিগগিরই তা অনুমোদনের জন্য একনেকের সভায় উপস্থাপন করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ