পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের সর্বত্র এখন দুর্নীতি। সরকার বাংলাদেশেকে দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ করে ফেলেছে। এই লুটেরা সরকারের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া গণতন্ত্র উদ্ধারের আর কোনো বিকল্প নেই। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থা তুলে ধরে গতকাল এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরকে আজ ধ্বংস করে দিয়েছে এই সরকার, শেয়ার মার্কেটকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানিলন্ডারিং এমন পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, এখন সরকার নিজে বলছে যে, এটা নিয়ন্ত্রণ করার দরকার, দুদক চেষ্টা করছে। দুর্ভাগ্য আমাদের এই কয়েকদিন আগে দেখলাম দুদকের যিনি প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন তার নামেও দুর্নীতির অভিযোগ চলে এসছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গোটা দেশে এখন দুর্নীতিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে এবং আওয়ামী লীগের সরকার সেটা তৈরি করেছে। সেই ১৯৭৫ সালে উদ্দেশ্য ছিল যে, বাংলাদেশকে একটা নতজানু দেশ হিসেবে পরিণত করবে, পরনির্ভরশীল অর্থনীতি হিসেবে তৈরি করবে সেই উদ্দেশ্যে তারা (সরকার) কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজ সরকার কী করেছে? একটা মিথ তৈরি করতে চায়। মিথটা কি যে, সাউথ ইস্ট এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটা রোল মডেল মধ্য আয়ের দেশ, উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ। ইটস এ টোটালি একটা ভোক্স, একটা মিথ ছাড়া কিছু না। তারা গোয়েবেলসীয় পদ্ধতিতে প্রচার-প্রচারণার মধ্যে দিয়ে সেই কথাটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা কি? বাস্তব অবস্থাটা হচ্ছে, এখন এদেশে প্রায় ৬ কোটি লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে। বাস্তব অবস্থাটা কী? আজকে করোনার যে আঘাত এসছে সেই আঘাত সহ্য করতে পারছে না বাংলাদেশ, অর্থনীতি সহ্য করতে পারছে না। আজকে আরো দুই কোটি লোক নতুন করে দরিদ্র হয়ে গেছে। একদিকে কিছু লোক তারা লুটের মধ্য, দুর্নীতির মধ্য দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মানুষ দরিদ্র আরো দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭২ সালে পশ্চিমার উন্নত বিশ্ব বলুন, গণতান্ত্রিক বিশ্ব বলুন, তারা মনে করতো যে, বাংলাদেশ ইজ এ বটমলেস বাসকেট কেস, এটা ফেইল্ড স্টেট হয়ে যাবে এখান থেকে বাঁচানোর কোনো পথ নেই। সেখান থেকে জিয়াউর রহমান সেটাকে তুলে নিয়ে এসেছিলেন একটা পটেনশিয়াল ইকোনমির দেশ হিসেবে, একটা সম্ভাবনাময় জাতি নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন। তার মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িকতা ছিল না, তার মধ্যে কোনো কুপমুন্ডকতা ছিল না। তিনি একজন আধুনিক মানুষ আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমাদেরকে জিয়াউর রহমান-এর পথ অনুসরণ করে প্রথমে আমাদের দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। জনগনকে সঙ্গে নিতে হবে এবং সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে একীভূত করে সেই গণতন্ত্রকে ছিনিয়ে আনতে হবে যে গণতন্ত্র আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। গণতন্ত্রের মাথা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ আছেন তাকে মুক্ত করতে হবে, এদেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করতে হবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের চিন্তাভাবনার আলোকে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের ৫০ বছর হয়ে গেল। এই ৫০ বছরে এখন পর্যন্ত আমাদের বর্তমানে যারা দায়িত্বে রয়েছেন, জোর করে দায়িত্ব দখল করেছেন আওয়ামী লীগ সরকার তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের যে জাতি নির্মিত হচ্ছিল সেই জাতি নির্মাণের সমস্ত প্রক্রিয়াটাকে তারা ব্যাহত করেছে এবং তারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে একটা পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করতে চাচ্ছে।
তিনি বলেন, সেই একজন ব্যক্তি একটা পরিবার এবং একটা দলকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য আজকে যেভাবে সমগ্র দেশকে গ্রাস করে ফেলা হচ্ছে। তখনও (১৯৭২-৭৫ সাল) ঠিক সেইভাবে গ্রাস করে ফেলা হয়েছিল। মানুষজন চোখের সামনে দেখল যে, তারা সুপরিকল্পিতভাবে লুটপাটের মধ্য দিয়ে এদেশটাকে একটা ভাগাড়ে পরিণত করেছিল- এই কথাগুলো বললে খুব বাড়িয়ে বলা হবে না। অত্যন্ত বড় নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সেই সময়ে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নামটা পরিবর্তন করে তাকে নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি নাম দেয়া উচিত। কারণ তারা এই দেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছিল। দেশের গার্মেন্টসখাতসহ ব্যক্তিখাতের বিক্ােশর পুরো প্রক্রিয়াটা জিয়াউর রহমানের অবদান বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী জাতীয় উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে ‘ব্যক্তিখাত বিকাশে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও মুক্তবাজার অর্থনীতি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় উদযাপন কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।