পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনায় নতুন শনাক্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যায় প্রতিদিনই নতুন রেকর্ড হচ্ছে। গতকালও করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তে আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা ২৪৭ জনে ঠেকেছে। যা একদিনে রেকর্ড মৃত্যু। এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যু ১৯ হাজার ৫২১ জনে দাড়িয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ১৯২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৭ জনে। এমন পরিস্থিতিতে সবার মধ্যে টিকা নিতে আগ্রহ দেখা গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এরই ধারাবাহিকতায় টিকা নিবন্ধনে বেশ সাড়া পেড়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আগামী বছরের শুরু নাগাদ ২১ কোটি টিকা দেশে আসবে। অবশ্য বিভিন্ন উৎস থেকে দেশে প্রতিদিনই টিকা আসার খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেশে টিকার মজুদও আছে বেশ। তারপরও এখনো প্রতিদিন টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে এক লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ ২০ হাজারের মধ্যে। যা অত্যন্ত ধীর গতি। অনেকেই নিবন্ধনের পর ১৫-২০ দিন হওয়ার পরও টিকা নেয়ার এসএমএস পাচ্ছেন না।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে এবং বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে দৈনিক টিকা দেয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। দ্রæত করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এখনই প্রতিদিন অন্তত ৫ লাখ টিকা প্রয়োগ করতে হবে। আস্তে আস্তে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১০-১২ লাখে নিতে হবে।
সূত্র মতে, দুই মাস বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের টিকা নিবন্ধনের শুরুতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধন করেছেন। দেশে গত ২৬ জানুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হয়। পরে হঠাৎ টিকা অপ্রতুল হওয়ায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নিবন্ধন বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই সময় পর্যন্ত প্রায় ৭৩ লাখ মানুষ টিকা নিতে নিবন্ধন করেন। গত রোববার পর্যন্ত নিবন্ধন সংখ্যা ১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে গত রোববার পর্যন্ত ১ কোটি ১৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৭ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রথম দফায় অগ্রাধিকার তালিকা ছাড়া ৪০ বছরের বেশি বয়সীরা শুধু নিবন্ধন করতে পেরেছিলেন। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এবার সরকার টিকা দিতে সাধারণের বয়সসীমা ৩০ এ নামিয়ে এনেছে। এর ফলে ৩০ বয়সের বেশি সবাই টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন। যদিও ৩০ বছরের নিচে ফ্রন্টলাইনাররা এখন নিবন্ধন করতে পারছেন না। অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইতোমধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে টিকার নিবন্ধনের বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি আগামী মাস থেকে প্রতি মাসে ৬০ লাখ থেকে এক কোটি টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. এবিএম খুরশীদ আলম ইনকিলাবকে বলেছেন, আমাদের কাছে পর্যাপ্ত টিকা আছে। প্রতিদিনই টিকা পাওয়ার সু-খবর আসছে। এতদিন নিবন্ধন করেও টিকা নেয়ার এসএমএস পাওয়া নিয়ে কিছুটা জটিলতা ছিল। ইতোমধ্যে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এমআইএস’র সঙ্গে টিকা নেয়ার এসএমএস নিয়ে বৈঠক আছে। একই সঙ্গে নিবন্ধনে বয়স সীমার কারণে অনেকেই নিবন্ধন করতে পারছিলেন না। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে টিকার নিবন্ধন চালু হচ্ছে। এছাড়া বাড়ানো হচ্ছে টিকা প্রয়োগের গতি। এক্ষেত্রে ইউনিয়ন পর্যায়েও টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। মেগা পরিকল্পনা রয়েছে। তাই দ্রæতই সবকিছুরই সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের টিকার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. শাহেদ ইমরান ইনকিলাবকে বলেন, হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বাড়তি কর্মসূচি ভ্যাকসিনেশন। বর্তমানে যে জনবল তাতে প্রতিদিন এই সেন্টারে টিকা দেয়ার সক্ষমতা ৪০০ জনের। অথচ প্রতিদিন এখানে ৮শ’ থেকে ১ হাজার টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। টিকা কার্যক্রম বাড়াতে হলে জনবল ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে বলে উল্লেখ করেন ডা. শাহেদ ইমরান।
সূত্র মতে, এখন পর্যন্ত দেশে টিকা এসেছে ২ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ডোজ। গত রোববার পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৫ জন। টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ৩৭২ জন এবং টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৪৩ লাখ ৫ হাজার ৯৬৫ জন। এখনো প্রায় ১ কোটি টাকা মজুদ রয়েছে।
এই টিকা ব্যবহার করতে হলে দৈনিক টিকা দেয়ার পরিমাণ আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে জনস্বাস্থ্যবিদেরা মনে করছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর সায়েদুর রহমান বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে অল্প সময়ে বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা প্রয়োজন। এ জন্য প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ লাখ মানুষকে টিকা দিতে হবে। তিনি বলেন, টিকার নেয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক। অথচ হাসপাতালগুলোতে টিকা দেয়ার চাপ নেই। বর্তমানে যে পরিমাণ টিকা দেয়া হয় তা পুরো দিনের অর্ধেক সময়। বাকি অর্ধেক সময় কাজে লাগালে দ্বিগুণ টিকা দেয়া যাবে। এভাবে সারা দেশেই টিকাদান বাড়ানো সম্ভব।
সূত্র মতে, কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার ও মর্ডানার এবং চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের প্রথম চালান এলে গত ৭ জুলাই দ্বিতীয় দফায় টিকা নিবন্ধন শুরু হয়। ২৭ জুলাই দেশের সিটি করপোরেশন এলাকায় মডার্নার টিকাদান কর্মসূচি চালু হয়েছে। আগের দিন ২৬ জুলাই দেশব্যাপি সিনোভ্যাক টিকা চালু করা হয়। ইতোমধ্যে মধ্যে বিশেষ অগ্রাধিকার হিসেব বয়সসীমার শর্ত শিথিল করে বিদেশগামী কর্মীদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত রোববার বেলা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত মোট ১ কোটি ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৯৭ জন নিবন্ধন করেছেন। অথচ গত ৬ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধনের সংখ্যা ছিল ৭২ লাখ ৯৩ হাজার ২৫৮ জন।
অধিদফতর জানিয়েছে, গত রোববার পর্যন্ত মোট ১ কোটি ১৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৭ ডোজ টিকাদানের মধ্যে প্রথম ডোজ হিসেবে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৩৩টি, ফাইজার-বায়োএনটেকের ৫০ হাজার ৫১১টি, সিনোফার্মের ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৮০৩টি এবং মডার্নার ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৪টি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। অক্সফোর্ডের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ৮৬ জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।