পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধের চতুর্থ দিনে অন্যান্য দিনের তুলনায় রাজধানীতে সাধারণ মানুষের ভিড় বেড়েছে। গতকাল নিত্যপ্রয়োজনের অজুহাতসহ বিভিন্ন কারণে রাস্তায় বের হয় মানুষ। এছাড়া রাস্তায় বেড়েছে ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল। এদের মধ্যে কেউ বেড়িয়েছেন ওষুধ কিনতে। আবার কেউ বের হয়েছেন প্রয়োজনীয় বাজার ও ব্যাংকে টাকা তুলতে। এদিকে অকারণে রাস্তায় বের হওয়ায় অনেকেই গুনতে হয়েছে জরিমানা। সোমবার রাজধানীতে ৫৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিনা প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়ার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া ৪৪৩টি গাড়িকে ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের তথ্য মতে, সোমবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অকারণে ঘর থেকে বের হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৬৪ জনকে ১ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করেছে। পাশাপাশি ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী বিধি লঙ্ঘন করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৪৩টি গাড়িকে ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা জরিমানা করে। আর র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সারা দেশে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৬৪ জনকে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করেন।
গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর এলাকার মোড়ে মোড়ে ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট। এসব চেকপোস্টে যানবাহনগুলোকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কারণ ও প্রমাণ দিতে পারলেই ছেড়ে দেয়া হয় এসব যান। মেহেদী কালাম মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে যাচ্ছিলেন হাসপাতালে। ১০ নম্বর গোলচত্বরে চেকপোস্টে ট্রাফিক সার্জেন্ট তার গতিরোধ করেন। তার কাছ জানতে চাওয়া হয় কেন ঘর থেকে বের হয়েছেন। তিনি বলেন, মিরপুর ১৪ নম্বরে বোনের জন্য ওষুধ কিনতে গিয়ে ছিলাম। আমার বোন অসুস্থ মিরপুর ১০ নম্বরের একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাড়াহুড়ো করে ওষুধ কিনতে বের হয়েছি হেলমেট পড়তে মনে ছিল না। এ কারণে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ আমার গতিরোধ করে প্রথমবারের মতো সতর্ক করে ছেড়ে দিয়েছে।
মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় রিকশায় ঘুরছিলেন মো. মাহবুব। চেকপোস্টে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় কেন তিনি রাস্তায় বের হয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি একজন টাইপিস্ট। টাইপের বিষয়গুলো বুঝতে আমার স্যারের বাসায় যাচ্ছি। এ সময় ১০ নম্বর গোল চত্বরে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ আমার গতিরোধ করে জানতে চায় কোথায় যাচ্ছি। কি কারণে রাস্তায় থেকে বের হয়েছি। সব কিছু শুনে প্রথমবারের মতো সতর্ক করে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে।
সকালে শাহবাগ ঘুরে দেখা যায়, ঘর থেকে বের হওয়া মানুষেরা জরুরি প্রয়োজন ও নানা ধরনের অজুহাত দেখাচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। অনেক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরও অফিসে যেতে দেখা গেছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হলে তাকে শাস্তির আওতায় নেয়া হবে। বিধিনিষেধ চলাকালে জনগণকে সতর্ক থাকা, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। বিধিনিষেধ কার্যকর করতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন।
গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, শাহবাগ, বাংলামোটর, পান্থপথ, কাওরান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ, গুলশান, বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড, মতিঝিল, গুলিস্তান এলাকা ঘুরে দেখে গেছে, প্রায় সবগুলো সড়কেই আগের তিনদিনের তুলনায় ব্যক্তিগত যানবাহন, রিকশা ও মানুষের চলাচল বেড়েছে কয়েকগুণ। চেকপোস্টগুলোতে প্রথম তিনদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে তৎপরতা ছিল সেটা সোমবার তেমন দেখা যায়নি। বেশিরভাগ গাড়ি তল্লাশি না করে চেকপোস্ট থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। পুলিশের তল্লাশি চৌকির পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের সড়কে টহল দিতে দেখা যায়। কিছু কিছু চেকপোস্টে অপ্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হয়েছেন তাদের অনেককেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। গাড়ির নামে মামলা হয়েছে, গুনতে হয়েছে জরিমানা।
বাংলামোটর মোড়ে আফজাল উদ্দীন নামে এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রাস্তায় এখন মানুষ বেশি, কিন্তু পরিবহন নেই। তাই সংসার চালাতে বাইক নিয়ে বের হওয়া। অন্যদিন পুলিশের চেকিংয়ের ভয় থাকলেও সেরকম কড়াকড়ির মধ্যে পড়তে হয়নি। কারওয়ানবাজারে রিকশাচালক আক্তার হোসেন বলেন, অন্যদিনের তুলনায় এখন লোকজন একটু বেশি বাইরে চলাচল করতে শুরু করেছে। তবে এখনো অনেকেই জরুরি দরকার ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।