পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অন্তত ১৬টি মিথ্যাচার করেছেন ট্রাম্প
ইনকিলাব ডেস্ক : অন্যবারের সব রেকর্ড ভেঙেছে গত মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়: সোমবার রাতে) নিউইয়র্কের হফস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ডেমোক্রাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যকার প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক।
দেশটির একটি জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, হিলারি-ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের অনুষ্ঠানটি দেখেছেন ৮৪ মিলিয়ন (৮ কোটি ৪০ লাখ) জনগণ। আর এই সংখ্যা ৩৬ বছর পূর্বের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গতকাল বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির একটি জরিপ সংস্থা এমনটিই জানিয়েছে। নিয়েলসেন নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ১৯৮০ সালে জিমি কার্টার ও রোনাল্ড রিগানের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের অনুষ্ঠানটি দেখেছিল ৮০ দশমিক ৬ মিলিয়ন জনগণ অর্থাৎ ৮ কোটি ছয় লাখ মানুষ। এরপর আর কোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এমন সংখ্যক দর্শক দেখা যায়নি। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি টেলিভিশন চ্যানেলের পাশাপাশি ইন্টারনেটে লাইভ স্ট্রিমিং এ জনগণ এই বিতর্ক অনুষ্ঠানটি দেখে। তারা প্রায় ৯৮ মিনিটের এই অনুষ্ঠানটির সম্পূর্ণটুকুই দেখেছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট বলে অভিহিত টান টান উত্তেজনার এই প্রদর্শনীতে কার্যত হিলারি ক্লিনটনের বাগ্মিতার কাছে পাত্তাই পাননি ডোনাল্ড ট্রাম্প।বিতর্কে হিলারির একের পর এক যুক্তির বাণ ঠেকাতে গিয়ে গলদঘর্ম হতে হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এ সময় ভুল ও মিথ্য তথ্য উপস্থাপনের জন্য মাঝে মাঝেই শ্রোতাদের কাছে হাসির খোরাকে পরিণত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিকে, একটি হিসাবে বলা হয়েছে, প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প অন্তত ১৬টি মিথ্যাচার করেছেন। পক্ষান্তরে হিলারির বক্তব্যে কোনও মিথ্যা ছিলো না। তবে দুই-একটি অস্পষ্ট কিংবা ভিন্ন পথে প্রবাহিত হয় এমন বক্তব্য তিনিও দিয়েছেন। তথ্যের অবাধ প্রবাহের এই যুগে, সামাজিক মাধ্যম যেখনে সব কিছুই মুক্ত করে দিয়েছে তখন আর কোনও কিছু গোপন থাকে না। আর সে কারণে যে কোনও মিথ্যাচার দ্রুতই প্রমাণিত হয়ে যায়। ফলে ডনাল্ড ট্রাম্প তার বিতর্কে যেসব মিথ্যা বলেছেন, তার অতীত মন্তব্যের যেগুলো অস্বীকার করেছেন, সেগুলোই এখন সামনে আসছে তুলনামূলক বিচারে।
যাতে উভয় প্রার্থীর সত্যকথন, অনেকাংশেই সত্য, সত্য তবে অস্পষ্ট, মিথ্যা ও অসম্পূর্ণ এসব মাত্রায় বিবেচনা করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের অতীত মন্তব্য ‘এটা স্রেফ চীনের ধোঁকাবাজি’ প্রসঙ্গ তুলে আনলে ট্রাম্প বলেন, তিনি এমন কথা বলেননি। তাহলে কে সত্য বললেন হিলারি নাকি ট্রাম্প? তথ্য হচ্ছে ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর একটি টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন কথাটি চীনারা তাদের স্বার্থেই সৃষ্টি করেছে, যাতে একচ্ছত্রভাবে তৈরি খাতের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে। তারও একবছর পর টেক্সাস লুজিয়ানা অসময়ে বরফ ঢাকা পড়ার পর ট্রাম্প আরেকটি টুইটে বলেছেন ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন একটি ধোঁকাবাজি।’ কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে বিতর্কে হিলারি ক্লিনটন দাবি করেন, তার যে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তাতে দেশে ১০ মিলিয়ন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আর ডনাল্ড ট্রাম্প ডনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ৩.৪ মিলিয়ন লোক কাজ হারাবে। ক্লিনটন তার বক্তব্যে ওই দিনই মার্ক জানদির একটি বিশ্লেষণকে উদ্ধৃত করেন। এই বক্তব্য অবশ্য অস্পষ্ট ও অসম্পূর্ণ ছিল। জানদির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, হিলারি যদি কিছু নাও করেন ৭ মিলিয়ন নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর তিনি তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে আর তিন মিলিয়ন কর্মসংস্থান হবে। ট্রাম্প বলেন, হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে প্রশান্তমহাসাগরীয় অংশীদারিত্বকে অনুসমর্থন করবেন। হিলারিকে তিনি বলেন, আপনি এর সমর্থক। এটি স্বর্ণালী সম্ভাবনা। উত্তরে হিলারি বলেন, আমি বলেছি, বিষয়টি ভালো। তবে যখন এ নিয়ে আলোচনা হয় তার অংশ আমি ছিলাম না। রেকর্ড বলছে, ২০১২ সালে হিলারি একটি বক্তৃতায় এই অংশিদারীত্বকে স্বর্ণালী সম্ভাবনা বলেছেন। সুতরাং তিনি বিতর্কে সেটি অস্বীকার করলেন। তবে ট্রাম্প যে বলেছেন, হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে এটি অনুমোদন দেবেন বলে উল্লেখ করেছেন সেটি একটি মিথ্যাচার। বিতর্কের শুরুতেই মিথ্যাচার করেন ডনাল্ড ট্রাম্প। হিলারি যখন বলেন তিনি তার বাবার কাছ থেকে ১৪ মিলিয়ন ডলার নিয়েই ব্যবসা শুরু করেছেন তখন ট্রাম্প বলেন, তিনি মোটে ১ মিলিয়ন ডলার নিয়েছিলেন। যেটি মিথ্যা। এছাড়া ট্রাম্প নিজেকে একজন সেল্ফ মেড ম্যান হিসেবে দাবি করেন সেটিও মিথ্যাচার। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে ১৯৮৫ সালে একটি ক্যাসিনো লাইসেন্স ডকুমেন্ট থেকে দেখা যায় ট্রাম্প তার বাবা ফ্রেড ট্রাম্পের কাছ থেকে ১৪ মিলিয়ন ডলার লোন নিয়েছেন। জাতীয় ঋণ প্রসঙ্গে ট্রাম্প আগে থেকেই বলে আসছে তিনি নির্বাচিত হলে আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনবেন। গত মে মাসে প্রার্থীতার বিতর্কে তিনি বলেছিলেন, তিনি ঋণ দাতাদের বলে কয়ে ঋণের চেয়ে কম অর্থ দেওয়ার চেষ্টা করবেন। অথচ হিলারি যখন এই প্রসঙ্গ তুললেন, তখন ট্রাম্প বার বার বলছিলেন, হিলারি ভুল বলছেন। গৃহায়ণ সঙ্কটের পেছনে ট্রাম্পকে দায়ী করেন হিলারি ক্লিনটন। ২০০৬ সালে এক বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেছিলেন, আমার প্রত্যাশা পুরো প্রক্রিয়াটি ভেঙ্গে পড়ুক। তার পর আমি এতে ঢুকবো আর কিছু পয়সা কামাবো। হিলারির এই বক্তব্য অস্বীকার করেননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, ব্যবসা এমনই হয়। যাই হোক বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে সত্য কথাই বলেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। স্টপ অ্যান্ড ফ্রিস্ক প্রসঙ্গে ট্রাম্প দাবি করেন নিউইয়র্কে এই ব্যবস্থা অসাংবিধানিক নয়। অথচ ২০১৩ সালে তৎকালীন মেয়র ব্লুমবার্গের নেওয়া একটি নীতি কেন্দ্রীয় আদালত এই কারণে বাতিল করে দেয়। সুতরাং ট্রাম্পের দাবিটি মিথ্যা। বার্থার আন্দোলন তথা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক নিয়ে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব শুরু হয় ২০০৮ সালে ক্লিনটন ক্যাম্পেইন থেকেই, এমন দাবি করেন ট্রাম্প। এজন্য ক্লিনটনের দীর্ঘ সময়ের বন্ধু সিডনি ব্লুমেন্থালকে দায়ী করেন তিনি। বলেন, ব্লুমেন্থালই বিষয়টি সাংবাদিকদের বলেছেন। অনেক দিন ধরেই ট্রাম্পের এমন বক্তব্য অস্বীকার করে আসছিলেন। আর ব্লুমেন্থাল এমন কিছু করেছেন তার কোনও প্রমাণও কোথাও নেই। সুতরাং ট্রাম্প মিথ্যাচার করেছেন। বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স ও ফক্স নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।