Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আখে স্বপ্ন দেখছেন কৃষক

শেখ সালাউদ্দিন, সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

এক সময় আখের মৌসুমে গ্রামগঞ্জে পথ চলার সময় আখ মাড়াইয়ের সুগন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়াতো। কৃষকরাও তখন আখ চাষে কোমড় বেঁধে ক্ষেতে নেমে পড়তেন। আখ মাড়াই শেষে আখের গুড় মাটির হাড়ি করে বিক্রির আশায় কৃষক সারিসারিভাবে বিভিন্ন হাটে নিয়ে আসতেন। তখন হাটে এক রকম লম্বা সারি দেখা যেত আখ ও গুড়ের।
জানা যায়, মৌসুমে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাটে আসা পাইকার আখের গুড় ক্রয় করতে রীতিমত ভিড় জমাতেন। বিভিন্ন ইউনিয়নে হাটের দিনগুলোতে কম বেশি মাটির হাড়িতে থাকা গুড়ের দৃশ্য চোখে পড়লেও উপজেলার বাড়বকুন্ড, শুকলালহাট, কুমিরা, বড়দারোগারহাট, ছোটদারোগারহাট ও মোহন্তেরহাটে আখের গুড় বিক্রির দৃশ্য চোখে পড়তো সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে মাটির হাড়িতে আখের গুড়ের দৃশ্য আর চোখে না পড়লেও চট্টগ্রাম সীতাকুন্ডে সুস্বাদু রঙ বিলাশ আখ চাষে অধিক লাভবান হওয়ায় স্বপ্ন দেখছেন কৃষক। রঙ বিলাশ আখের উপরের অংশ লাল হওয়ায় এটি দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও বেশ সুস্বাদু। আর এখানকার স্থানীয়রা এ আখকে রঙ বিলাশ বলে থাকেন। তাই এর চাহিদা বাড়ছে। অন্যদিকে বাড়ছে কৃষকদের সংখ্যাও। তবে লকডাউনের কারণে বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আখচাষি পরিবারগুলো।
মুরাদপুর ইউনিয়নের কৃষক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বংশানুক্রমে আমরা আখের চাষ করে করে আসছি। সে হিসেবে গত বছর ৩২ শতক জমিতে নতুন প্রজাতির রঙ বিলাশ আখের চাষ করেছি। বিভিন্ন হাটে ৯০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মৌসুমের আশি^ন মাসে পুনরায় রঙ বিলাশ আখের চাষ করেছি আমি। কিন্তু চলতি বর্ষায় ২ মাস বৃষ্টির দেখা মেলেনি। বাধ্য হয়ে প্রতি ঘণ্টায় ৬শ’ টাকা করে জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। শুরু থেকেই ইকোপার্ক এলাকায় সেচের কোনো ব্যবস্থা নেই বললে চলে। তাই সেচ সুবিধার অভাবে এখানকার কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এবার ১ লাখ টাকারও বেশি আখ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদি।
পূর্ব মুরাদপুর ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ঢালীপাড়া গ্রামের কৃষক মো. আলাউদ্দিন জানান, ইকোপার্ক এলাকায় পাহাড়ের ঢালুতে ৬৬ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় তার আখ ক্ষেতে কয়েকবার সেচ দিতে হয়েছে। এতে বিভিন্ন খরচ পড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। সেচ সুবিধার অভাবে খরচ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। পরিস্থিতি অনুক‚লে থাকলে অন্তত দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার আখ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদি। একই এলাকার কৃষক মো. সুলতান আহমেদও ১৬ শতক জমিতে রঙ বিলাশ আখের চাষ করেছেন। তারমতো আবুল কালাম করেছেন ১৭ শতকে আখচাষ করেছেন। এদিকে, রঙ বিলাশ আখের চাহিদা বেশি থাকায় শুধু ইকোপার্ক এলাকায় ৩০/৩৫ জন কৃষক আখ চাষ করেছেন।
এ এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ্ আলম বলেন, কৃষক পরিবারগুলো ২০৮ আখ চাষ করে থাকলেও রঙ বিলাশ আখের চাহিদা এখন বেড়ে গেছে। যার কারণে প্রায় কৃষক এখন রঙ বিলাশ আখ চাষে ক্রমশ ঝুঁকে পড়ছেন। এ আখের উৎপাদন ভালো হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার রঘুনাথ নাহা ইনকিলাবকে বলেন, চলতি ৮ হেক্টর জমিতে ৭৫ জন কৃষক আখ চাষ করেছেন। এটি দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও অনেক সুস্বাদু। তাই বিক্রিও করতে তেমন সমস্যায় পড়তে হয় না কৃষকদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ