Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজশাহীতে কোরবানীর গরু বিক্রি হয়নি ৪৪ হাজার

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২১, ৫:১৮ পিএম

কোরবানির বাজারকে কেন্দ্র করে খামারি ও সাধারণ কৃষকেরা এবার রাজশাহী জেলায় ৩ লাখ ৮২ হাজার পশু পালন করেছিল। কোরবানি হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৯ হাজারটি। ফলে এবার অবিক্রিত থেকে গেছে প্রায় ৭৩ হাজার কোরবানীর পশু। রাজশাহী জেলায় স্থানীয়ভাবেই চাহিদার চেয়ে বেশি পশু পালন করা হয়েছে। ফলে এবার ভারতীয় পশু আমদানি করা হয়নি।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে এবার কোরবানীর জন্য গরু পালন হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৬৬৬টি। তার মধ্যে কোরবানি হয়েছে ৬২ হাজার ৮৫৪টি। অবিক্রি থেকে গেছে ৪৩ হাজার ৮১২টি গরু।
রাজশাহীতে মহিষ কোরবানি দেওয়ার প্রচলন কম। তাই খামারে মহিষ পালনও কম হয়। এবার ঈদের বাজার সামনে রেখে পালন হয় ২ হাজার ৯৫৬টি মহিষ। এর মধ্যে মাত্র ৩১৫টি মহিষ কোরবানি হয়েছে। তবে ছাগল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় অর্জিত হয়েছে। রাজশাহীতে ছাগল প্রস্তুত ছিল প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার। এর মধ্যে কোরবানি হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার। ভেড়া পালা হয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার। কোরবানি হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৬৬৩ টি।
এবারো বিক্রি হয়নি পুঠিয়ার ৩০ মণ ওজনের ‘শান্ত বাবু’। খামারির প্রত্যাশা ছিল এবার ১৬ লাখের অধিক হলে বিক্রি করবেন। রাজশাহী পুঠিয়ার কান্দ্রা গ্রামের আলিমুদ্দিন গত তিন বছর ধরে লালন পালন করে বড় করেছেন সাদা-কালো মিশ্রণের ফিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টি।
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার সুজন ইসলাম জানান, স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে না পেরে ৩০টি গরু ঢাকায় নিয়ে গেলেও সেখানে বিক্রি হয়েছে ১৯টি। যেগুলোর দাম তিন লাখের নিচে। আর তিন লাখের ওপরে যে ১১টি গরুর দাম, সেগুলো বিক্রি হয়নি। তাই অবিক্রীত গরুগুলো নিয়ে খামারে ফেরত আসেন।
রাজশাহী নগরের খড়খড়ি এলাকার ওয়াফি অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি ৫৩টি গরুর মাত্র ১৫টি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। বড় গরুগুলোই বিক্রি করা যায়নি। তাঁর মতে, করোনা পরিস্থিতির কারণেই বড় গরুর ক্রেতা পাওয়া যায়নি।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইসমাইল হক বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে কে কতটা পশু পালন করবে, এটা নির্ধারণ করে দেওয়া যায় না। তাই যে যাঁর মতো করে পশু পালন করেন।
তিনি বলেন, আমরা সরকারকে ধারণা দিয়েছি যে স্থানীয়ভাবে পালন করা পশুতেই কোরবানির চাহিদা মেটানো যাবে। কোরবানির জন্য বাইরে থেকে পশু আমদানি করার প্রয়োজন পড়বে না। তাই বাইরে থেকে কোনো পশু আমদানি করা হয়নি। তারপরও অনেক পশু অবিক্রীত থেকে গেছে। #

 



 

Show all comments
  • প্রবাসী-একজন ২৫ জুলাই, ২০২১, ৬:২৬ পিএম says : 0
    একচেটিয়া বাজারে যারা বড় অংকের মুনাফার আশায় গরুর দাম আকাশচুম্বী করেছিলেন তাদের কাছ থেকে এমন খবরের অপেক্ষা করছিলাম; অবিক্রীত গরুর সংখ্যা আরো বেশি হলেও আমি অবাক হতাম না। খামারী বলুন কিংবা বেপারী বলুন, এদের অধিকাংশের মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবার কুরবানী দিতে সক্ষম হননি। বিদেশে বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশী এবার বিশ্বের অন্যান্য দেশে কুরবানী দিয়েছেন, বিশেষতঃ আফ্রিকায়। ওখানকার কোনো কোনো দেশে বাংলাদেশের তুলনায় গরুর দাম ছিল এক তৃতীয়াংশ। গরু উৎপাদনে বাংলাদেশের স্বয়ংসম্পূর্ণতা আমাদের অবশ্যই কাম্য; কিন্তু মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে জিম্মি করে কুরবানীর গরুর দাম আকাশচুম্বী করা মোটেও কাম্য নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • অনুসন্ধিৎসু ২৫ জুলাই, ২০২১, ৯:০৮ পিএম says : 0
    ৩০ মণ ওজনের ‘শান্ত বাবু’। খামারির প্রত্যাশা ছিল এবার ১৬ লাখ টাকা। ৩০ মন গরু থেকে খাবার মাংস ( হাড় সহ ) ২২ মনের বেশি হবে না। প্রতিসের মাংসের দাম বড় জোর ৬০০ টাকা। তাহলে একমনের দাম হয় ২৪,০০০ টাকা। তাহলে ‘শান্ত বাবুর' আনুমানিক দাম হয় ৫লক্ষ ২৮হাজার টাকা। আর যদি ‘শান্ত বাবুর' পুরোটাই খাওয়া যায়, তাহলে ৩০ মণের দাম হয় ৭লক্ষ ২০হাজার টাকা। মাংসের দাম প্রতিসের ৬০০ টাকার মধ্যেই মুনাফা আছে, কারণ এটা খুচরা বাজার দরের কম নয়। তা হলে বলুন, ‘শান্ত বাবুকে’ ১৬ লাখ টাকায় কোন ধর্মপ্রাণ মুসলিম কিনবে? কালোবাজারী, ঘুষখোরী ইত্যাদি অপকর্মের মাধ্যমে অর্জিত টাকা লোক দেখানোর জন্য সহজে খরচ করা যায়; কিন্তু হালাল আয় করা অনেক কঠিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ