Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সীতাকুণ্ডে ইলিশ শিকারে সাগরে নামছে ৫২ হাজার মৎস্যজীবি

উত্তাল সাগরে প্রথমদিনে সাগরে নামেনি মৎস্যজীবিরা

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২১, ৪:০১ পিএম

ইলিশ শিকারের সকল রকম প্রস্তুতি শেষ করেও সাগর উত্তাল থাকায় সরকারের বেধেঁ দেয়া সময় ৬৫ দিন
পরেও প্রথম দিনে সাগরে ইলিশ শিকারে নামতে পারেনি মৎস্যজীবিরা। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে ইলিশ ধরা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ ছিল। এসময় মা ইলিশ গুলো মিঠা পানিতে ডিম দেয়ার উদ্দেশ্যে আসে। তাই তারা এতোদিন সাগরে মাছ শিকারে যাননি। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষে(২৪ জুলাই) শনিবার সাগরে পাড়ে গেলে সাগর উত্তাল দেখে আবারও হতাশ হয়ে ফিরে আসে চট্টগ্রাম কর্ণফুলী মহোনার সন্দ্বীপ চ্যানেলের উত্তর চট্টলা সীতাকু- উপজেলাসহ প্রায় ৫২ হাজার মৎস্যজীবি। এদিকে উত্তর চট্টলা উপকূলীয় জলদাশ কল্যাণ সমবায় ফেডারেশনের সভাপতি শ্রী লিটন দাশ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার পর শনিবার মৎস্যজীবি পরিবারগুলোর সকল সদস্যরা মাছ শিকারে রাত জেগে জাল মেরামতসহ নানা রকম প্রস্তুতি শেষ করে ভোর ৫টায় গভীর সমুদ্রে রূপালি ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবিরা ঘাটে গিয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। ইলিশ শিকারে নামতে পারেনি কেউ। নিধোজ্ঞা সময় সীমা শেষ হলেও ভাগ্যের সময় সীমা শেষ হচ্ছেনা এখনও। তবে ২৫ জুলাই রবিবার সাগরে ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে আমরা আবারো রওনা দিয়েছি। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় মৎস্যজীবিরা ভোর বেলা বের হয়ে সাগরে নেমে ইলিশও শিকার করে নিয়ে আসছে সবাই। তিনি আরো বলেন, কর্ণফুলী মহোনার সন্দ্বীপ চ্যানেলের উত্তর চট্টলা উপকূলীয় সীতাকু- ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত ৩৮টি জেলে পল্লীর প্রায় ৫২ হাজার মৎস্যজীবি পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে সদস্য সংখ্যা রয়েছে ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার। উপজেলার সাগরের তীরবর্তীতে থাকা আদী পেশাজীবি মৎস্যজীবি মানুষগুলো যুগ যুগ ধরে মাছ তথা আমিষের যোগান দিয়ে চলেছেন। হঠ্যৎ বৃষ্টি আবার হঠাৎ জলেচ্ছাসের কারণে জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ গুলো প্রায় সময় জীবন বিপন্ন হয়ে পড়লেও তারা জীবন বাজি রেখে আমিষ যোগানে গভীর সাগরে মাছ শিকারে নামেন। এবিষয়ে উত্তর চট্টলা উপকূলীয় জলদাশ কল্যাণ সমবায় ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বাঁশবাড়িয়া বোয়ালীয়াকূল এলাকার বাসিন্দা জেলে নেতা উপেন্দ্র দাশ বলেন,নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার সাগর উত্তাল থাকায় অনেক টাকা খরচ করে আবার আমরা বাড়িতে ফিরে আসছি। তবে রবিবার ভোর ৬টায় আমরা সাগরে ইলিশ করে সাড়ে ৯টায় আবারও ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরে এসেছি। প্রতিটি বোট্ েইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ২০/২২ কেজি পর্যন্ত। প্রতিদিন ভোরে ও দুপুরে ইলিশ মাছ শিকারে সাগরে নামেন মৎস্যজীবি। কিন্তু আগে প্রতিটি বোটে মাছ পাওয়া যেত ৫০/৬০ কেজি পর্যন্ত। সামনের জোতে আরো বাড়তে পারে বলে তারা আশা করছেন। আমরা মৎস্যজীবি পরিবারগুলো এতো দিন অনেক কষ্টে দিনযাপন করেছি। এখনো অনেক কষ্ট করছি টাকা পয়সায়। তাই সাগর উত্তাল থাকলেও কিছু করার নেই। অভাব অনটনের কারণে মৎস্যজীবিরা ভোর থেকেই সাগরে নামছে। অপরদিকে একই সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী রাসেল দাশ বলেন, সাগরে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে একেবারে ইলিশের ভরা মৌসুমে। এ অবস্থায় দক্ষিণ শীতলপুরের নারায়ন জলদাশ ও যদু জলদাশ তারা মাছধরা বন্ধের সময় ঠিক মতে দু’বেলা খেতেও পারেনি। প্রায় সময় উপষ থেকে রাত কাটিয়েছে। অনেক মৎস্যজীবির আহারও জোটেনি। জুন-জুলাই-আগষ্ট এ তিন মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। আর বছরের বাকি দিনগুলো সাগরে তেমন মাছ পাওয়া যায়না। এ প্রসঙ্গে উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ শামীম আহমদ দৈনিক ইকিলাবকে বলেন,৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার পর মৎস্যজীবিরা ইলিশ শিকারে সাগরে নামছে। এতাদিন ইলিশগুলো সাগরে অবাধে বিচরণ করেছে, তাই ইলিশের সাইজও আকারে অনেক বড় হয়েছে। মা ইলিশ গুলোও মিঠা পানিতে ডিম ছেড়েছে। সামনের জোতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পরবে বলে আশা করা যাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ