পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বিঘ্ন রাখতে এবং অধিকাংশ নাগরিককে ভ্যাকসিন আওতায় নিয়ে আসতে এখন থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে দেশের সকল নাগরিককেই ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। এর মধ্যেই সরকারের আইসিটি বিভাগের আওতাধীন জাতীয় সুরক্ষা অ্যাপে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকল নাগরিক যেন রেজিস্ট্রেশন করতে পারে, সে ব্যাপারে একটি নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকার বিভিন্ন সংস্থা থেকে ২১ কোটি ভ্যাকসিন আনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। যথা সময়ে সব ভ্যাকসিন পেলে ৮০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় চলে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
গতকাল বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘কোভিডের তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ, অক্সিজেন সঙ্কট, হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধ’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল সভা অনলাইন জুম অ্যাপে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সভায় দেশের মানুষকে করোনা মহামারি থেকে রক্ষা করতে ব্যাপক ভ্যাকসিনেশন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মুখে মাস্ক পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এক্ষেত্রে বর্তমানে দেশের জন্য সব থেকে অপরিহার্য কাজ ভ্যাকসিনেশনে দেশের সফলতার কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সরকারের হাতে ১ কোটির ওপরে ভ্যাকসিন রয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই আরো ২ কোটি ভ্যাকসিন সরকারের হাতে চলে আসবে। এভাবে চীন থেকে ৩ কোটি, রাশিয়া থেকে ৭ কোটি, জনসন এন্ড জনসন এর ৭ কোটি ভ্যাকসিন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ভ্যাকসিনসহ আগামী বছরের শুরুর দিকের মধ্যেই সরকারের হাতে প্রায় ২১ কোটি ভ্যাকসিন চলে আসবে। আশা করা যাচ্ছে, এর মাধ্যমে দেশের অন্তত ৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হবে সরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সভায় করোনা মোকাবিলায় দেশের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোর অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের কাছে কোভিডের তৃতীয় ধাপ মোকাবিলায় আরো বেড সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ জানালে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি মুবিন খান স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অন্তত ২০০০ নতুন কোভিড ডেডিকেটেড বেড বৃদ্ধির আশ্বাস দেন।
২০০০ নতুন বেড বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানান এবং করোনা মোকাবিলায় সরকারের আরো কিছু নতুন উদ্যোগের কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামীতে ভারত থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২০০ টন লিকুইড অক্সিজেন আমদানি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর সাথে ৪৩টি অক্সিজেন জেনারেটর অর্ডার করা হয়েছে। আমেরিকান বাঙালিদের উপহার ২৫০টি ভেন্টিলেটর ও কোভ্যাক্স এর ২ লাখ ৪৫ হাজার ভ্যাকসিন শনিবারই দেশে চলে আসছে। আগামী ২৬/২৭ জুলাই দেশে চীনের আরো ৩০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে আসবে। গ্রামাঞ্চলে করোনা রোগীদের শনাক্ত করার উদ্যোগ হিসেবে সরকার জেলা-উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এছাড়াও খুব দ্রুত ৪ হাজার চিকিৎসক, ৪ হাজার নার্স, ৫০০ অ্যানেসথেসিয়াসহ প্রচুর টেকনোলজিস্ট নিয়োগের কাজও এগিয়ে চলেছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
প্রতিটি দেশই নিজ দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে, প্রশংসা করছে ; শুধু আমাদের দেশেই এই মহামারির সময়েও দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে সমালোচনা করে চিকিৎসক, নার্সদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে বিশেষ কিছু মহল। অন্যদিকে, দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে গোটা বিশ্ব যখন প্রশংসা করছে তখন দেশের কিছু মহল স্বাস্থ্য খাত নিয়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে যাচ্ছে যা মোটেও কাম্য ছিল না। খাদ্যে ভেজাল ও ক্যামিকেল মিশানো, নদী দখল, মানব পাচারের মতো বিষয়গুলো রেখে দেশের অতিমারি চলাকালীন অবস্থায় স্বাস্থ্য খাতের সাথে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে যেভাবে ঢালাওভাবে সমালোচনা করা হচ্ছে সেটিকে দুঃখজনক আখ্যা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হতে না হতেই ধেয়ে আসছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। করোনার মৃত্যু ও সংক্রমণ দুটোই উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়েছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এরূপ করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)’র সদস্যভুক্ত বড় বড় হাসপাতালগুলোতে ২৪০২টি সিট বৃদ্ধি করে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে বলে সভায় প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ এর পক্ষে বক্তারা জানান।
বেসরকারি সেক্টর বর্তমানে কোভিড যুদ্ধে সরকারের সাথে বলিষ্ঠ ও সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে বেসরকারি সেক্টরে হাসপাতালে প্রায় ৬০০টি আইসিইউ, ৬০০টি এইচডিইউ, ৭০০শ’ মতো হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা এবং প্রায় ৬০০টির মতো ভেনটিলেটর দিয়ে করোনা চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন বিপিএমসিএ’র সদস্যভুক্ত হাসপাতালগুলোর প্রতিনিধিরা।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)’র সভাপতি মুবিন খান বলেন, দেশের ক্রান্তিকালে যখনই সরকার ডেকেছে তখন দেশের প্রাইভেট মেডিক্যাল এগিয়ে এসেছে। আগামীতেও যখন সরকার ডাকবে প্রাইভেট মেডিক্যালগুলো সেভাবেই সরকারের পাশে দাঁড়াবে। করোনাকালীন এই দুর্যোগেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)’র সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আরোও ২ হাজার কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড শয্যা বৃদ্ধি করছে এবং ভবিষ্যতেও সরকারের পাশে থাকবে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির সভাপিতত্বে সভায় উপস্থিত থেকে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, জাপান ইস্ট ওয়েস্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিপিএমসিএ-এর চেয়ারম্যান ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, গ্রীণ লাইফ মেডিক্যাল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিপিএমসিএ-এর সহ-সভাপতি ডা. মাঈনুল আহসান, পপুলার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং বিপিএমসিএ-এর সহ-সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং বিপিএমসিএ’র সংসদ সদস্য সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ার হোসেন খান, ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও পরিচালক এফবিসিসিআই প্রীতি চক্রবর্ত্তী এবং বিপিএমসিএ-এর যুগ্ম সম্পাদক ও তায়রুন্নেছা মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাবিবুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।