পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে করোনা টিকা নিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নানা ঝক্কি-ঝামেলা করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করার পরও জানা যাচ্ছে না টিকা গ্রহণের তারিখ। রেজিস্ট্রেশন করার এক মাস পরেও আসছে না তারিখ জানিয়ে এসএমএস। এতে টিকা প্রত্যাশীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে। করোনার ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতির মধ্যে টিকাদানের ধীরগতিতে জনমনে উদ্বেগ-শঙ্কা বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টিকার জন্য যে হারে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে সে তুলনায় টিকাদানের গতি বাড়ানো যায়নি। বর্তমানে টিকার সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু সেই অনুপাতে বাড়েনি টিকাদান কেন্দ্র। এতে টিকা গ্রহীতাদের অপেক্ষা বাড়ছে। যথাসময়ে টিকা পাওয়া যাবে কি না তা নিয়েও অনেকের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার ২৭টি টিকা কেন্দ্রে দিনে গড়ে ছয় থেকে সাত হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে তার কয়েকগুণ বেশি।
নগরীর পতেঙ্গার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ২৬ দিন আগে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত তিনি কোন এসএমএস পাননি। তার প্রথম ডোজ নেওয়ার তারিখ কবে তা এখনও তিনি জানেন না। আগ্রাবাদের সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী তানভির আরাফাত বলেন, রেজিস্ট্রেশন করার চার সপ্তাহ পরেও এসএমএস পাইনি। কবে টিকা দেব তা এখনও জানি না। ওই দুই জনের মতো আরো অনেকে সপ্তাহের পর সপ্তাহ অপেক্ষা করেও টিকা দেওয়ার তারিখ জানতে পারছে না।
টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতেও নানা ঝামেলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সুরক্ষা অ্যাপে রীতিমত জট লেগে আছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টার চেষ্টায়ও রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছে না। এই সুযোগে নগরীর অলিগলিতে বসেছে রেজিস্ট্রেশন সেন্টার। সেখানে টাকার বিনিময়ে টিকার নিবন্ধন করা হচ্ছে। নিবন্ধন করার পরও টিকা কবে নেওয়া যাবে তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা কাটছে না।
স্বাস্থ্যবিভাগের হিসাবে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দুই লাখ ৯৩ হাজার ৮১২ জন টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন ৩৬ হাজার ৩৮৯ জন। জেলায় রেজিস্ট্রেশন করেছেন দুই লাখ ৪৬ হাজার ৪৬২ জন। টিকা নিতে পেরেছেন ২৭ হাজার ৪৭০ জন। প্রতিদিন যত সংখ্যক টিকা দেওয়া হচ্ছে তার কয়েকগুণ বেশি রেজিষ্ট্রেশন হচ্ছে। এতে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রেও জটের সৃষ্টি হয়েছে।
টিকার জন্য নিবন্ধনের পর তারিখ জানিয়ে এসএমএস পেতে দেরি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, যে হারে টিকার নিবন্ধন হচ্ছে তার তুলনায় টিকা প্রদানের হার অনেক কম। এই কারণে এসএমএস পেতে দেরি হচ্ছে। জেলার ১৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪টিসহ মোট ১৬টি কেন্দ্রে টিকাদান চলছে। মহানগরীতে টিকাদান কেন্দ্রে রয়েছে ১১টি। প্রতিদিন গড়ে ছয় থেকে সাত হাজার জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নিবন্ধনের হার অনেকে বেশি। আরো বেশি টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে চট্টগ্রামে টিকা কেন্দ্র বাড়ানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তখন ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা কেন্দ্র চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর তাতে টিকাদানে গতি আসবে বলেও জানান তিনি।
বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, সংক্রমণ কমাতে টিকার কোন বিকল্প নেই। দ্রুত সময়ে বিশাল জনগোষ্ঠিকে টিকার আওয়তায় আনতে গণটিকা কর্মসূচি নিতে হবে এবং টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে হবে। শুরুতে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলেও এখন সাধারণ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী। টিকার সঙ্কটও কেটে গেছে। তাই দ্রুত টিকাদান নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে নেমে চলতে হবে। লকডাউন কোন স্থায়ী সমাধান নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন টিকা নেওয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ স্বাচিপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ন ম মিনহাজুর রহমান বলেন, টিকার জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার কাউন্সিলরসহ জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা যায়। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হলে মানুষ হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে। এতে গণ টিকাদানও সহজ হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।