Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন

ব্যবসায়ীর পরিকল্পনায় চার জেলেকে হত্যা

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

দাদন ব্যবসায়ীর সঙ্গে এক লাখ টাকার চুক্তিতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় চার জেলে সহযোগিদের হাতে খুন হয়েছেন। প্রথমে ঘটনাটি নৌদস্যুতার বলে প্রচার হলেও নৌ-পুলিশের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসে চার খুনের আসল তথ্য। এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান। হত্যাকাণ্ডের শিকার চার জেলে হলেন- রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সোনালী গ্রামের নাসির উদ্দিন মাঝি, তার ছেলে মো. রিয়াজ, নোয়াখালীর চরজব্বর এলাকার মো. করিম ও একই এলাকার মো. মিরাজ। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলো- মো. ইউছুফ মিয়া. মো. রাসেল ও আল-আমিন। গ্রেফতারকৃতরা কারাগারে রয়েছে।
বড়খেরী নৌ-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সোনালী গ্রাম এলাকার নাসির উদ্দিন মাঝি পেশায় জেলে। মাছ শিকারের জন্য তার একটি ট্রলার রয়েছে। প্রায় ১০ মাস আগে তিনি চট্টগ্রামের বাকলিয়া ফিশারিঘাটের আড়তদার মো. ইউছুফ মিয়ার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা দাদন নেন। এরপর থেকে নিয়মিত ওই আড়তে মাছ বিক্রি করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি অভাব-অনটনে পড়ে নাসির মাছঘাটের অপর এক আড়তদারের কাছ থেকে দাদন নিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১২মে ইউছুফ ট্রলারসহ নাসির মাঝিকে ঘাট এলাকায় আটকে রাখে। কিন্তু নাসির কৌশলে ট্রলার নিয়ে পালিয়ে এলাকায় চলে আসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউছুফ ট্রলারটি নিজের কবজায় নেয়াসহ নাসিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। নাসিরের ট্রলারের সহযোগী জেলে রাসেল, সুমন, সোহাগ ও আল-আমিনের সঙ্গে সে এক লাখ টাকায় চুক্তি করে। গত ১৬মে চার জেলে রামগতির সøইসগেট বাজারের একটি দোকান থেকে ঘুমের ১০টি বড়ি কেনে। পরদিন নাসির, অপর তিন জেলেসহ চারজন মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে যান। পরে কৌশলে তারা নাসিরকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এলাকায় সাগরে মাছ ধরার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে ২০ মে তারা চায়ের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে নাসির, রিয়াজ, করিম ও মিরাজকে খেতে দেয়। চা খেয়ে তারা ঘুমিয়ে পড়লে বাকি চারজন মিলে তাদের সাগরে ফেলে হত্যা করে। পরে ট্রলারটি চট্টগ্রামের বাকলিয়া নতুন ফিশারিঘাট এলাকায় নিয়ে ইউছুফকে বুঝিয়ে দেয়। আর আল-আমিন এলাকায় গিয়ে প্রচার করে, জলদস্যুরা তাদের ট্রলারে হামলা চালিয়েছে। তিনিসহ চার জেলে পালিয়ে আসতে পারলেও নাসির মাঝি ও তিন জেলেকে জলদস্যুরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে কোনো ক্লু পাওয়া না গেলেও মোবাইল ফোন ট্র্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে রাসেলকে আটকের মধ্য দিয়ে তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত সুমন ও সোহাগকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ