বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়কের উপর এখনও পড়ে আছে কোরবানির পশুর বর্জ্য।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সকালে সরেজমিন ঘুরে রাজধানীর পথে পথে পশুর বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এই চিত্র বেশি। হাটের বর্জ্যও এখনো সরানো হয়নি। বর্জ্যের স্তূপ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। পশুর মল-মূত্র রাস্তার উপর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। খুব ধীর গতিতে চলছে করপোরেশনের বর্জ্য পরিষ্কারের কাজ।
এসব বর্জ্যে ডেঙ্গুসহ কিউল্যাক্স মশার বংশ বিস্তারের আশঙ্কা রয়েছে। সিটি করপোরেশনের অবহেলা আর অদক্ষতার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছেন নগরবাসী।
রাজধানীর খিলগাঁও-শাহজাহানপুর এলাকা ডিএসসিসির ১১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে প্রধান সড়কেই বর্জ্যের স্তূপ। শুধু এই ওয়ার্ডই নয় এমন আরও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের চিত্রও একই।
সকাল সাড়ে ১০টায় ডিএসসিসির ১১ নং ওয়ার্ড খিলগাঁও রেলগেট সংলগ্ন সিটি করপোরেশনের কাঁচাবাজারের পাশের খালি জায়গায় কোরবানির পশুর বর্জ্যের স্তূপ পড়ে থাকে দেখা গেছে। এ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন দায়িত্বরত কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তারা একে অপরকে বলছেন, গতকালের বর্জ্য এখনো সরানো হয়নি। কি দুর্গন্ধ। কিছুক্ষণ পর তারা সেই স্থান ত্যাগ করে অন্যস্থানে গিয়ে দাঁড়ান।
ময়লার স্তূপটির পাশের একজন দোকানি বলেন, মনে করেছিলাম আজ দোকানটা খুলবো। কিন্তু যেই দুর্গন্ধ তাতে তো কোনও গ্রাহক আসবে না। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় হয়ে গেলো। এখনো বর্জ্য সরেনি। যে পরিমাণ বর্জ্য দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আরও ২৪ ঘণ্টায়ও পারবে না।
এর পাশে রয়েছে শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘের খেলার মাঠের কোরবানির পশুর হাট। হাটটি এখনো পরিষ্কার করা হয়নি। হাটে প্রবেশের আগে পথেই দেখা গেছে বর্জ্যের বিশাল বিশাল দুটি স্তূপ। পাশাপাশি পশুর মল-মূত্র রাস্তার উপরে ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যানবাহনের চাকার সঙ্গে এসব মল-মূত্র আরও ছড়িয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির ১১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মির্জা আসলাম আসিফ জানান, আমার ওয়ার্ডে একটি পশুর হাট আছে। ওই হাটের বর্জ্য সরানোর কাজ চলমান। শিগগরিই সব বর্জ্য সরিয়ে ফেলা হবে।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনের রাস্তার দুই পাশে কোরবানির পশু কাটার চাটাই, রক্ত ও মল-মূত্র পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে শাহজাহানপুরের মির্জা আব্বাসের বাড়ির সামনে একটি ডাম্পার দিয়ে ময়লা অপসারণের কাজ করতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ডাম্পারচালক বলেন, একটি মেশিনে যে পরিমাণ জ্বালানি লাগে সে পরিমাণ দেওয়া হচ্ছে না। এখন তেল শেষ হলে আমরা কাজ বন্ধ রাখি। পরের দিন যখন আবার তেল দেওয়া হয় তখন কাজ শুরু করি। এভাবে তো যথা সময়ে ময়লা অপসারণ করা যাবে না।
ফার্মগেট সংলগ্ন তেজগাঁও রেললাইন ধরে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত রেললাইনের দুই পাশে কোরবানি পশুর বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পাশাপাশি পশুর কান-মাথাসহ অন্যান্য উচ্ছিষ্টও পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এ থেকে দুর্গন্ধ ছাড়াচ্ছে। স্থানীয়রা সিটি করপোরেশনকে সেসব বর্জ্য দ্রুত অপসারণ করার দাবি জানিয়েছেন।
পুরান ঢাকার বিভিন্ন অলি-গলিতেও একই চিত্র দেখা গছে। তবে সিটি করপোরেশন সেই বর্জ্যগুলোকে কোরবানির দ্বিতীয় দিনের বললেও স্থানীয়রা বলছেন আজকের পাশাপাশি গতকালেরও ময়লা রয়েছে। এই এলাকায় দ্বিতীয় দিনেও কোরবানি দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে।
দক্ষিণ সিটির ৬০ ও ৬১ নং ওয়ার্ডের দনিয়া, কদমতলী, রায়েরবাগ, জিয়া স্মরণী, নূরপুর, কুতুবখালী, কাজলা, গোবিন্দপুরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে কোরবানির পশুর বর্জ্য এখনও সরানো হয়নি। ঈদের দিন বিকালে দনিয়া এলাকায় একটি বর্জ্যপরিস্কার করার গাড়ি এলেও কিছু ময়লা-বর্জ্য পরিস্কার করে সেটি চলে গেছে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ২১ জুলাই রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণ সিটির ৬০টি ওয়ার্ড থেকে কোরবানির পশুর শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। ওয়ার্ডগুলো হলো‑ ৩, ৫, ৭, ৯, ১৩ থেকে ৪৪, ৪৬ থেকে ৬১ ও ৬৬ থেকে ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড। এছাড়া ৪৫ নং ওয়ার্ড হতে ৯৫ ভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। ১, ৪, ৬, ৮ ও ১৪ নং ওয়ার্ড হতে ৯০ শতাংশ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। বাকি ওয়ার্ডগুলো হতে গড়ে ৮৫ ভাগ বর্জ্য সরানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।