Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ট্যানারি মালিকদের কাছে সিলেটের চামড়া ব্যবসায়ীদের বকেয়া ৫০ কোটি টাকা

আগ্রহ নেই চামড়া সংগ্রহে

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০২১, ৪:০১ পিএম

আগামীকাল সিলেটসহ সারাদেশে পালিত হবে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। এ ঈদে প্রায় সাড়ে চার লাখ পশু কোরবানি হবে সিলেট। তবে এসব পশুর চামড়া সংগ্রহে দেখা অনিশ্চয়তা। চামড়া সংগ্রহ নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে সিলেটের চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রায় ৫০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে । ফলে নতুন করে লগ্নি করার নেই টাকা।

অন্যদিকে চামড়ার মূল্যও এসে ঠেকেছে এখন তলানিতে। বিদ্যমান দুইটি কারনেই এবার লাখ লাখ চামড়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সিলেটে অনিশ্চয়তা। চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেল কয়েক বছরে ব্যবসায়ীরা ট্যানারি মালিকদের কাছে যে চামড়া বিক্রি করেছেন, সে বাবদ অন্তত ৫০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। ট্যানারি মালিকরা কোরবানির ঈদ এলে কিছু কিছু টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু বিপুল অঙ্কের টাকা তাদের কাছে বকেয়া। ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার এবার ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম গরুর প্রতি বর্গফুট ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা, বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ ২০১৫ সালেও গরুর চামড়া বর্গফুট প্রতি ছিল ২০০ টাকার মতো। চামড়ার এই ভয়াবহ দরপতনের কারণেও ব্যবসায়ীরা এখন হারিয়ে ফেলেছেন চামড়া সংগ্রহে আগ্রহ। এর বাইরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকা, পরিবহনে সমস্যাসহ নানা কারণে এ খাত হুমকির মুখে এখন। সিলেট শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শামীম আহমদ জানান, লকডাউন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, পরিবহন সমস্যা, ট্যানারি মালিকদের বকেয়া পরিশোধে গড়িমসিসহ নানা জটিলতার কারণে চামড়া ব্যবসায় নেই ব্যবসায়ীদের আগ্রহ। তিনি বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রায় ৫০ কোটি টাকা বকেয়া আছে। কিন্তু নানা অজুহাতে ঢাকার ট্যানারি মালিকেরা বকেয়া করছেন না পরিশোধ। এছাড়া তিনি বলেন, এবার সিলেটে প্রায় পশু কোরবানি হবে সাড়ে চার লাখ। তবে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ পিস পশুর চামড়া সংগ্রহের। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না তা এখন বলতে পারছি না। শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি শাহিন আহমদ বলেন, কয়েক বছর ধরেই দুর্দিন চলছে চামড়া ব্যবসায়ীদের। তিন বছর ধরে বকেয়া টাকা দিচ্ছেন না আড়তদার। এবার দাম খুবই কম চামড়ার। চামড়া কিনে লবণজাত করে বিক্রি করেও লোকসান হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। সিলেটের অন্তত ৩০০ চামড়া ব্যবসায়ীর মধ্যে বেশির ভাগই এবার ক্ষতির আশঙ্কায় চামড়া সংগ্রহ না করার কথা ভাবছেন।এ বছর সিলেটে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ পশু কোরবানি হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুস্তম আলী। কিন্তু ব্যবসায়ীরা মাত্র এক লাখের মতো চামড়া সংগ্রহের কথা বলছেন। তাও লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আছে তাদের শঙ্কা। এদিকে, প্রকৃত ব্যবসায়ীরা যদি চামড়া না কিনেন, তবে হাজার হাজার চামড়া মৌসুমী ব্যবসায়ীদের হাত ধরে শঙ্কা রয়েছে পাচারের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ