পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহাসড়কে যানবাহনের ধীরগতি : উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি
রাত পোহালেই ঈদ। প্রিয়জনের সাথে উৎসব পালনের জন্য করোনা সংক্রমণের মধ্যেই ছুটছে মানুষ গ্রামের পথে। মহাসড়কে যানজট। ফেরিঘাটে উপচে পড়া ভিড়। তার উপর ঢাকার মধ্যেও ভয়াবহ যানজট। এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে লাগছে দুই/তিন ঘণ্টা। আর গন্তব্য পর্যন্ত যেতে কতো সময় লাগবে তা সবারই অজানা। তবুও ঝুঁকি ও ভোগান্তি নিয়ে ছুটছে মানুষ।
সর্বশেষ পাওয়া খবরে ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত ছিল ভয়াবহ যানজট। ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-আশুলিয়া-নবীনগর মহাসড়কেও ছিল ভয়াবহ যানজট। গাবতলী থেকে বিকাল ৫টায় যে বাস ছেড়েছে সেই বাস রাত ৮টায়ও সাভার পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি।
এদিকে, ঢাকার অভ্যন্তরেও গতকাল সকাল থেকে ছিল গাড়ির চাপ। বিশেষ করে ঢাকা থেকে বের হতে গিয়ে সব ধরনের যানবাহনকে আটকে থাকতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ঢাকা বিমানবন্দর সড়কে দুপুরের পর ছিল স্মরণকালের ভয়াবহ যানজট। আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে গতকাল ভোর থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ছিল উপচে পড়া ভিড়। করোনা সংক্রমণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না। সেদিকে খেয়াল করার সময়ও ছিল না কারও।
কোরবানির পশুবাহী ট্রাক, পিকআপ ও যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো সকাল থেকেই যানজটে স্থির হয়ে ছিল। তার প্রভাব পড়ে অলিগলির সড়কেও। সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার ফলেই এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঈদযাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়া ও কোরবানির পশু পরিবহনের ফলে যানজটের তীব্রতা দেখা দিয়েছে।
ঈদযাত্রীদের চাপে গতকাল রাজধানীর প্রধান প্রবেশপথগুলো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে যানজটে। বিশেষ করে মহাখালী থেকে আব্দুল্লাহপুর অংশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল। বাস ও অন্যান্য যানবাহনে যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকেন যানজটে। সকাল সাতটায় মহাখালী থেকে মোটরসাইকেলে রওনা দিয়ে শফিকুল আজিম আব্দুল্লাহপুর পার হন বেলা একটায়। তিনি বলেন, সকালে তীব্র যানজটের ফলে যান চলাচল বন্ধ ছিল কিছু সময়। স্টার্ট বন্ধ করে করে বসে থাকতে হয়েছে। একজন মোটরসাইকেল চালকের এই হাল হলে অন্যদের কী অবস্থা হয়েছে তা নিজেই বুঝে নেন। ট্রাফিক পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে সকাল থেকে সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর, গাবতলী-আমিন বাজার, যাত্রাবাড়ী-বাবু বাজার ব্রিজ, রামপুরা-ডেমরা, গুলিস্তান-সদরঘাট, মালিবাগ-প্রগতি সরণি-কুড়িল, মিরপুর রোডসহ প্রধান সড়কগুলোয় যানজট ছিল অতিরিক্ত। আগের দিন রোববারও রাজধানীজুড়ে যানজট ছিল। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সমন্বয় না থাকায় এবার এই বিপর্যয় হয়েছে। খামখেয়ালিপনা এড়িয়ে যানজট এড়াতে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করলে ভোগান্তি অনেক কম।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত কাগজে থাকে, বাস্তবায়ন হয় না। ঢাকার বিমানবন্দর সড়ক হয়ে গাজীপুর অংশে গত ঈদের মৌসুমের চেয়েও এবার ভয়াবহতর অবস্থা চলছে। সকাল থেকেই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। যানজটের ফলে ঢাকা থেকে বাস বের হতেই লাগছে তিন-চার ঘণ্টা। আর যাত্রীদের দুর্ভোগ তো আছেই। এবার যানজট নিরসন, সড়ক সংস্কার- কোনো বিষয়েই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আমার নিজের বাড়ি গাজীপুরে। কিন্তু আমি গাজীপুরে যাব না। আমি মাফও চাই, দোয়াও চাই। বিমানবন্দর সড়ক থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট বিআরটি প্রকল্পের কাজ বছরের পর বছর ধরে শেষ হচ্ছে না। রাস্তার পাশে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে। আমি নিজের প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের বিষয়টি অবহিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি। ফল হয়নি।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবার বিধিনিষেধ শিথিল করার পর গত ১৫ জুলাই থেকে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। গত রোববার থেকে ঈদযাত্রীর চাপ সড়কে বেশি পড়ছে। এই অবস্থা থেকে যাত্রী দুর্ভোগ কমানোর জন্য সব সংস্থার সমন্বয়ে ব্যবস্থাপনা আমরা এবার দেখিনি। করোনাকালের আগে ঈদযাত্রার ব্যবস্থাপনা ভালো ছিল। এরপর তা ভেঙে পড়েছে। বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ঈদযাত্রা সুসমন্বিত ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করা উচিত। যাত্রীর চাপ যতোই থাকুক না কেন সুব্যবস্থাপনা থাকলে তার সুরাহা সম্ভব।
ডিএমপির ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের (দারুস সালাম জোন) সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, গাবতলীতে রাজধানী ঢাকার অন্যতম বড় একটি পশুর হাট রয়েছে। ঈদুল আযহা উপলক্ষে সারাদেশের খামারিরা ট্রাকে করে গরু নিয়ে গাবতলী হাটে প্রবেশ করছেন। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। এসব কারণে গাবতলী এলাকায় যানবাহনের চাপ তীব্র। যানজট সৃষ্টি হলেও গাড়ি চলছে। তবে কোরবানির পশুর হাট যতদিন পর্যন্ত চলবে গাবতলী এলাকার অবস্থা তেমন একটা পরিবর্তন হবে না। ডিএমপির ট্রাফিকের উত্তরা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (উত্তরা পশ্চিম জোন) সাইফুল মালিক জানান, ঈদযাত্রার চাপ শেষ পর্যায়ে আছে। মানুষজন এখন দলবেঁধে রাজধানী ছেড়ে নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছে। এই সময়ে এসে একটু যানজট হবে- এটাই স্বাভাবিক। তবে আজকের ঈদযাত্রায় গাড়ির চাপে অত্যধিক বেশি ছিল। টঙ্গীর যানজট খিলক্ষেত ছাড়িয়ে গেছে।
দুপুরে রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে শত-শত গাড়ির চাকা স্থির হয়ে ছিল। মোটরসাইকেল চালকরাও সামনে এগোতে পারছিলেন না। বিমানবন্দর সড়ক হয়ে গাজীপুর ও বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে রওনা হওয়া যাত্রীরা বাস ও অন্যান্য পরিবহনে আটকে পড়েছিলেন। এই দৃশ্য দেখা গেছে মহাখালী, বনানীসহ বিমানবন্দর সড়কের বিভিন্ন অংশে। সকাল আটটা থেকে যানজট সৃষ্টি হলেও তা বিকেলেও দেখা যায়। বিমানবন্দর সড়কের যানজটের প্রভাব পড়ে কুড়িল-বিশ্বরোড ও প্রগতি সরণির সড়কে। বিকেল চারটায় প্রগতি সরণি থেকে কুড়িল অভিমুখী যানবাহনের জট তীব্র।
অন্যদিকে ঈদে ঘরমুখি যাত্রীদের বহনকারী যানবাহনের চাপে গতকাল ভোর থেকে যানজট ছিল ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তেমন যানজট ছিল না। তবে যানবাহনের চাপে গাড়ির গতি ছিল কম।
একই অবস্থা ফেরিঘাটগুলোতেও। আমাদের আরিচা সংবাদদাতা শাহজাহান বিশ্বাস জানান, আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে দুর পাল্লার বাসে চাপ তেমন না থাকলেও ভিড় ছিল পণ্যবাহী ট্রাক ও ছোট গাড়ির। তবে অন্যান্যবারের মতো উপচে পড়া ভিড় নেই। পাটুরিয়াতে ছোট গাড়ি ও যাত্রীবাহী বাস আসা মাত্র পার হয়ে যাচ্ছে। তবে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরির সংখ্যা কম হওয়াতে পন্যবাহী ট্রাক ও ছোট গাড়ি পারাপারের জন্য ঘাটে এসে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব যানবাহনের যাত্রীদেরকে। সকালে আরিচা ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, ফেরি ঘাট এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক ও ছোট গাড়ির লাইন। এসব যানবাহন এবং যাত্রীদেরকে ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যাত্রীদরে অভিযোগ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলেও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। দুই আসনে একজন করে যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও তা মানছেনা লঞ্চ মালিকরা।
মো.শওকত হোসেন, লৌহজং(মুন্সীগঞ্জ) থেকে জানান, নাড়ির টানে বাড়ি যেতে গতকাল সোমবার সকাল থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। যাত্রীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। ঘাটে শৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা যাত্রী শিমুলিয়া ঘাট হয়ে নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এসব সাধারণ যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সড়কে নেমেছে অতিরিক্ত যানবাহন। ফেরিঘাটে দেখা গেছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। ঘাটে দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। ঘাটে ফেরি ও লঞ্চ ভিড়তেই হুড়মুড় করে তাতে পাল্লা দিয়ে উঠছেন শত শত ঘরমুখো মানুষ। সেখানে নেই বিন্দুমাত্র সামাজিক দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধির বালাই। ফেরিতে সকাল থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের অতিরিক্ত চাপ দেখা গেছে। অন্যদিকে, লঞ্চঘাটে সকাল থেকেই ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদযাত্রায় ঘাট এলাকায় কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই দেখা যায়নি। অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো চলাচল করছে। লঞ্চে বাড়িতি যাত্রীর চাপে যাত্রীরা ফেরিতে নদী পাড়ি দিচ্ছে। এদিকে পদ্মার তীব্র স্রোত, গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বাড়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় অবস্থান করছে শতশত ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক।
এছাড়া ঘাটের অভিমুখ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে শতশত পণ্যবাহী ট্রাক। ট্রাক চালকরা জানান, ২/৩ দিন ধরে ফেরি পারাপারে অপেক্ষায় সড়কে আটকে আছে, দুই দিন যাবত ঢাকা-মাওয়া আটকে থাকায় খাবারের কষ্ট হচ্ছে ওই এলাকায় খাবারের হোটেল নেই, খাওয়ার কষ্ট ও গোছল এবং পায়খানা প্রসাবে সমস্যা হচ্ছে রাতে-দিনে ঘুমের সমস্যা হচ্ছে। ট্রাক ড্রাইভার রমজান আলী জানান, ঢাকা আসছি মাদারীপুর যাবো আজ ২দিন হয় সড়কে বসে আছি পুলিশ আমাদের যেতে দিচ্ছে না। এখানে খাওয়ার হোটেল নেই পায়খানা প্রসাবের জায়গা নেই, গোছল নেই ২দিন হয় ঘুমাতে পারছি না। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি ও ৮৩টি লঞ্চ সচল রয়েছে। মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, সড়কে ও ঘাটে চার শতাধিক ছোট বড় ও পন্যবাহী যানবাহন পারাপারে অপেক্ষায় আছে।
ট্রেনে মোটামুটি বাসে অর্ধেক লঞ্চে নেই
পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটাতে রাজধানী ছাড়ছেন কর্মজীবী মানুষ। নগরবাসীর স্রোত গিয়ে মিলেছে টার্মিনালগুলোতে। এর মধ্যে ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মোটামুটি মানা হলেও বাসে তার অর্ধেক দেখা গেছে। আর লঞ্চগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নেই বললেই চলে। ফলে লঞ্চ ও বাসের যাত্রীরা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে ঘরমুখো হচ্ছেন। নগরীর টার্মিনালগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন। এ জন্য যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে।
গতকাল সকালে কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে গেছে। প্রতিটি ট্রেনই অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে গন্তব্যে ছুটছে। স্টেশনের প্রবেশপথেও যাত্রীদের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার লাগানো হচ্ছে, মাপা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা। আন্তঃনগরের কোনও ট্রেনেই টিকিট ছাড়া যাত্রী উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে বেসরকারিভাবে চলাচলরত কমিউটার ট্রেনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি আসনেরও টিকিটি বিক্রি করা হচ্ছে। এই ট্রেনগুলো সব স্টেশনে থামার কারণে অতিরিক্ত যাত্রী জোর করে ট্রেনগুলোতে উঠে যান বলে জানিয়েছে রেলওয়ে।
অন্যদিকে, সায়েদাবাদ, গাবতলী ও মহাখালী টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, বড় বড় কোম্পানিগুলোর এসি বাসগুলোতে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহন করা হলেও অধিকাংশ বাসই তা মানছে না। সব আসনে যাত্রী নিয়ে তিনগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। গাবতলী টার্মিনালে দেখা গেছে, সেলফি পরিবহনের একটি বাসে পাশাপাশি যাত্রী তোলা হচ্ছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি পরিবহন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা দিতে দেখা গেছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, যে কোম্পানি বা মালিক আইন লঙ্ঘন করে পরিবহন পরিচালনা করবে তার সদস্যপদ বাতিল হবে। আমরা এরই মধ্যে সব মালিক ও কোম্পানিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি তারা যেন স্বাস্থ্যবিধিসহ সরকারি নিয়ম মেনে পরিবহন পরিচালনা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও আমরা অনুরোধ করেছি তারা যেন সড়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
অপরদিকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। স্বাস্থ্যবিধির কোনও তোয়াক্কাই নেই এই টার্মিনালে। প্রতিটি পল্টুনেই অতিরিক্ত যাত্রী। লঞ্চগুলোর ডেকের পাশাপাশি সিঁড়ি, বিভিন্ন কেবিনের সামনের গলি ও ছাদেও যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো যাত্রা করলেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের ( বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চয়তায় যাত্রীদের বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। টার্মিনালের পল্টুনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে। তারা যাত্রীদের বারবার মাস্ক পরার কথা বলছেন। এছাড়া যাত্রীদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নৌ-পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।